ছবি পিটিআই।
দু’বছর বাদে অবশেষে পাল্টাচ্ছে রথযাত্রার শ্রীক্ষেত্র। অতিমারির ঝাপটা পেরিয়ে এ বারই আসন্ন স্নানযাত্রা বা রথে আগের মতো ভক্তদের জন্য রাজপথ খুলে দেওয়া হবে বলে নিশ্চয়তা মিলেছে। বুধবার জগন্নাথ মন্দিরের সেবায়েতদের নিয়ে গঠিত ছত্তিসা নিজোগের বৈঠক শেষে প্রবীণ সেবায়েত রামচন্দ্র দয়িতাপতি জানান, অবশেষে প্রশাসনের তরফে রথযাত্রায় ভক্তদের উপস্থিতির বিষয়ে ছাড়পত্র মিলেছে।
গত দু’বছরে কোভিড সংক্রমণের ভয় দেখালেও উৎকলবাসী ভক্তবৃন্দের ভাবাবেগের কথা ভেবে জগন্নাথদেবের সারা বছরের অন্যতম অবশ্য পালনীয় আচার রথযাত্রা অটুট রাখা হয়েছিল। তবে শুধু ন্যূনতম সংখ্যক সেবায়েত ছাড়া কাউকে ঘেঁষতে দেওয়া হয়নি। রথের সময়ে পুরী কার্যত অগম্য ছিল জনসাধারণের জন্য। জগন্নাথভক্তেরা সংযমের সঙ্গে এই নিষেধাজ্ঞা মেনে নিয়েছেন।
এ বার ফের রথাসীন জগন্নাথদেবকে দেখতে পুরীতে বাঁধভাঙা ভিড়ের সম্ভাবনা। অক্ষয় তৃতীয়া থেকে জগন্নাথ, বলভদ্র, সুভদ্রার রথ তৈরি চলছে পুরোদমে। ১৪ জুন স্নানযাত্রা এবং ১ জুলাই রথযাত্রা সারা হবে বলে রামচন্দ্র দয়িতাপতি জানিয়েছেন।
এ দিন জগন্নাথ মন্দিরের বৈঠকে বিভিন্ন দায়িত্বে থাকা সেবায়তদের মাথারা ছাড়া, মন্দিরের সরকার নিযুক্ত মুখ্য প্রশাসক, পুরী জেলার কালেক্টর এবং পুলিশ সুপার উপস্থিত ছিলেন। স্নানযাত্রা এবং রথ, উল্টোরথে ভক্ত সমাগম হলেও ভিড় নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি নিয়েও এ দিন আলোচনা হয়েছে। স্নানযাত্রায় বলভদ্র, জগন্নাথ, সুভদ্রার মাথায় ঘড়া ঘড়া জল ঢালা হয়। এর পরে বলভদ্র ও জগন্নাথদেব গজানন বেশ ধারণ করেন যা দেখতে ভক্তদের ভিড় উপচে পড়ে।
স্থানীয় প্রশাসন এবং মন্দির কর্তৃপক্ষের লক্ষ্য, এই অনুষ্ঠান সুশৃঙ্খল ভাবে পালন করা। ভক্তদের কাউকে শ্রী বিগ্রহের বেশি কাছে ঘেঁষতে দেওয়া হবে না বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। স্নানযাত্রায় রাত দশটা পর্যন্ত ভক্তেরা রত্নসিংহাসনের বাইরে প্রকট জগন্নাথদেবকে অবাধে দর্শনকরতে পারবেন।
ওড়িশা সরকারের এক আধিকারিক বলেন, “শ্রী মন্দিরের সব উৎসব ভক্তদের সামনে স্বাভাবিক রীতিতে আয়োজনের জন্য আমাদের সবার অপেক্ষা ছিল। জগন্নাথদেবের প্রতি অসীম বিশ্বাসে পুরী এবং দূরের ভক্তেরা সকলেই দুটো বছর ধৈর্যের পরিচয় রেখেছেন। এ বার তাঁরা উৎসবে যোগ দিতে মুখিয়ে আছেন। কিন্তু একই সঙ্গে শৃঙ্খলার দিকে আমাদের কড়া নজর থাকবে।”