ছবি: লোকসভা টিভির সৌজন্যে।
সংসদের দুই কক্ষ- লোকসভা ও রাজ্যসভার যৌথ অধিবেশনে, বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সরকারের উন্নয়নমূলক কাজকর্মের ভূয়সী প্রশংসা করলেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। বললেন, ‘‘উন্নয়নমূলক কাজকর্মের গতি অব্যাহত রাখার পক্ষেই এ বার স্পষ্ট মত দিয়েছেন দেশের মানুষ।’’
আগামী পাঁচ বছরে দ্বিতীয় মোদী সরকারের কাজকর্মের দিশা কী হওয়া উচিত, এ দিনের বক্তব্যে তারও উল্লেখ করেছেন রাষ্ট্রপতি। জানিয়েছেন, একের পর এক কল্যাণমূলক প্রকল্প চালু করার পাশাপাশি সামাজিক সাম্য রক্ষা করা, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়া ও দেশের মহাকাশ কর্মসূচিকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে সচেষ্ট হতে হবে সরকারকে।
রাষ্ট্রপতি কোবিন্দ এ দিন বলেন, ‘‘বহু দিন ধরে দেশের আপামর মানুষের মৌলিক সমস্যাগুলির উপর নজর দেওয়া হয়নি। সেগুলি মেটানো হয়নি। আমি খুশি, আমার সরকার গত পাঁচ বছরে আপামর মানুষের সেই মৌলিক সমস্যাগুলি মেটাতে এগিয়ে এসেছে। মানুষের কাছে পৌঁছতে পেরেছে। অসীম দারিদ্র থেকে মানুষকে বের করে আনতে পেরেছে। দেশবাসীর যা যা পাওয়ার অধিকার রয়েছে, মোদী সরকার সেই সবের ব্যবস্থা করে মানুষকে মর্যাদা নিয়ে বাঁচতে দিতে পেরেছে। সরকার কাজ করেছে ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশে’র মন্ত্র নিয়েই। আর মানুষ যে তাতে সন্তুষ্ট তার প্রমাণ, দেশের ৬১ কোটি মানুষ এ বার ভোট দিয়েছেন। লক্ষ্য স্থির করে এগিয়ে যেতে পারলে আগামী দিনে দেশের নাগরিক ও গ্রামীণ জীবন, দুইয়েরই আরও উন্নতি হবে।’’
আরও পড়ুন- এক দেশ-এক ভোট নিয়ে কমিটি, গেলেন না অর্ধেকই, মোদী অটল
আরও পড়ুন- অর্থনীতির অসুখে বৈদ্য সেই নরেন্দ্র
সংসদে ঢুকছেন রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও লোকসভার স্পিকার। বৃহস্পতিবার। ছবি- পিটিআই
গত পাঁচ বছরে মোদী সরকারের কোন কোন কাজকর্ম, পদক্ষেপ সকলের নজর কেড়েছে, প্রশংসা আদায় করে নিয়েছে, এ দিন সংসদের দুই কক্ষের যৌথ অধিবেশনে তাঁর বক্তব্যে সেই সবেরও উল্লেখ করেছেন রাষ্ট্রপতি কোবিন্দ। তার মধ্যে যেমন রয়েছে জল সংরক্ষণ ও জাতীয় নিরাপত্তার মতো বিষয়, তেমনই রয়েছে ভারতের দাবি মেনে নিয়ে কট্টর সন্ত্রাসবাদী মাসুদ আজহারকে রাষ্ট্রপুঞ্জের ‘আন্তর্জাতিক জঙ্গি’ ঘোষণা ও তিন তালাকের মতো ইস্যুগুলিও।
রাষ্ট্রপতি কোবিন্দ বলেছেন, ‘‘জল সংরক্ষণে জল শক্তি মন্ত্রক গঠন অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। সার্জিকাল স্ট্রাইক ও বালাকোটে জইশ-ই-মহম্মদের জঙ্গি ঘাঁটির উপর বিমানবাহিনীর বোমাবর্ষণের ঘটনা প্রমাণ করেছে জাতীয় নিরাপত্তাকে কতটা গুরুত্ব দেয় আমার সরকার। দাবিতে দীর্ঘ দিন ধরে অনড় থেকে আমার সরকারই রাষ্ট্রপুঞ্জকে দিয়ে মাসুদ আজহারকে ‘আন্তর্জাতিক জঙ্গি’ ঘোষণা করিয়ে নিতে পেরেছে। আমার সরকার দেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে আগামী পাঁচ বছরে ৫০ শতাংশ আসন বাড়ানোরও পরিকল্পনা নিয়েছে। তাতে ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে আসন-সংখ্যা আরও দু’কোটি বাড়বে। তিন তালাক, নিকাহ হালালার মতো প্রথাগুলি সামাজিক উন্নয়নের স্বার্থেই অবলুপ্ত হওয়া উচিত। তা ছাড়াও জিএসটির স্তর সরলীকরণের লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়ার ভাবনা রয়েছে সরকারের মাথায়।’’