‘কাশ্মীরে শান্তি ফিরুক, আর কিছুই চাই না আমরা’

গত কয়েক দিন ধরেই আতঙ্ক বাড়ছে। পর্যটকদের ঘরে ফেরার হুড়োহুড়ি, দোকানে-দোকানে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস কেনার ভিড়, পেট্রল পাম্পের সামনে লম্বা লাইন।

Advertisement

তৌসিফ মজিদ রাঠের

শ্রীনগর শেষ আপডেট: ০৫ অগস্ট ২০১৯ ০৩:০০
Share:

জ্বালানি সংগ্রহের জন্য লাইন। রবিবার শ্রীনগরে। ছবি: এপি।

অমরনাথ যাত্রা বাতিল করা হয়েছে সরকারি ভাবে এই খবর প্রকাশিত হওয়া মাত্রই বুঝে গেলাম— কাশ্মীরের পরিস্থিতি পাল্টে গিয়েছে। উপত্যকার পরিস্থিতি, উপত্যকার মানুষের পরিস্থিতি।

Advertisement

গত কয়েক দিন ধরেই আতঙ্ক বাড়ছে। পর্যটকদের ঘরে ফেরার হুড়োহুড়ি, দোকানে-দোকানে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস কেনার ভিড়, পেট্রল পাম্পের সামনে লম্বা লাইন। টুকরো টুকরো ছবিগুলোই সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্কের পারদ আরও চড়িয়ে দিয়েছে। উপত্যকায় সেনার উপস্থিতি নতুন কিছু নয়। কিন্তু গত কয়েক দিন ধরে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন কেন্দ্রীয় সরকার কাশ্মীরে কী করতে চাইছে, তা নিয়ে সন্দেহ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

কাশ্মীরে শান্তি ফিরুক, সত্যিই কি চায় দিল্লি? আমরা উন্নয়ন চাই না। শুধু শান্তি চাই। শান্তি ছাড়া উন্নয়ন দিয়ে আমরা কী করব! কেন্দ্রীয় সরকারের কী পরিকল্পনা, আমরা সাধারণ মানুষ জানি না। শুধু এ-টুকু জানি, দৈনন্দিন জীবনে শান্তি না থাকলে, নিরাপত্তার আশ্বাস না থাকলে, বেঁচে থাকাই কঠিন। কেন্দ্রীয় সরকার কি সংবিধানের ৩৭০ ও ৩৫এ অনুচ্ছেদ খারিজ করে দেবে— এই প্রশ্নটাই এখন কাশ্মীরের সাধারণ মানুষের মনে ঘুরছে। আমরা মনে করি, যদি সত্যিই এ রকম কোনও সিদ্ধান্ত নেয় দিল্লি, তা হলে সমস্যায় পড়বে মোদী সরকারই। শুনলাম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে রাজ্যের সরকারি ও বেসরকারি সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সোমবার বন্ধ থাকবে। কাশ্মীর কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির মতো বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ১০ অগস্ট পর্যন্ত তাদের সব পরীক্ষা স্থগিত করে দিয়েছে। দু’টি বিশ্ববিদ্যালয়ই সব ছাত্রাবাস ফাঁকা করে দিয়েছে। কাশ্মীর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মেহরাজুদ্দিন অবশ্য আশ্বাস দিয়েছেন, সব পড়ুয়া যাতে নিরাপদে বাড়ি ফেরে, সে দিকে নজর রেখেছেন তিনি।

Advertisement

এই মুহূর্তে কাশ্মীরি পড়ুয়ারা পড়াশোনা নিয়ে ভাবছে না। ভাবছে তাদের অস্তিস্ব আর আত্মপরিচায় নিয়ে। তাদের পরিচয় তারা জম্মু-কাশ্মীর নামে ভারতের একটি রাজ্যের বাসিন্দা। তারা চায় না, জম্মুকে কাশ্মীর থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হোক। তারা চায় না, কাশ্মীরকে কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল করা হোক। পর্যটনের এই মরসুমে ব্যবসায়ীদের বিপুল ক্ষতি হয়ে গেল। তিতিবিরক্ত সাধারণ মানুষ আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। দীর্ঘ আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত রয়েছেন সরকারি কর্মীরাও।

লেখক ট্র্যাভেল এজেন্ট

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement