ট্রেনের অপেক্ষায়। প্রতীকী ছবি
ট্রেন লেট করে চললে রেলের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায় করা যায়। কিন্তু নিয়ম জানা না-থাকায় অনেকেই সেই সুযোগ পান না। সম্প্রতি বড় অঙ্কের ক্ষতিপূরণ পেলেন এক ব্যক্তি। ট্রেন লেট করেছিল ৪ ঘণ্টার মতো। সে জন্য ক্ষতিপূরণের আবেদন করা ব্যক্তিকে ৩০ হাজার টাকা দিতে বলেছে খোদ সুপ্রিম কোর্ট। শুধু ওই টাকাই নয়, সঙ্গে সুদও দিতে হবে রেলকে।
ক্ষতিপূরণ অবশ্য রাতারাতি পাওয়া যায় না। যদিও ভারতীয় রেলের নিয়ম অনুযায়ী কোনও ট্রেন স্টেশনে আসতে তিন ঘণ্টা বা তার বেশি লেট করলে যাত্রী টিকিট বাতিল করতে পারেন। আর সে ক্ষেত্রে পুরো ভাড়ার টাকাই ফিরিয়ে দেওয়া হয়। তবে এই ব্যক্তি ঠিক সময়ে ট্রেনে উঠলেও তা নির্দিষ্ট স্টেশনে পৌঁছতে দেরি করে। আর তাতেই রেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানান তিনি।
ঘটনা ২০১৬ সালের। সেই বছরের ১১ জুন অজমেঢ়-জম্মু এক্সপ্রেসে পরিবারের অন্যদের নিয়ে সফর করেন সঞ্জয় শুক্ল নামে এক ব্যক্তি। টাইম টেবল অনুযায়ী ওই ট্রেন জম্মু স্টেশনে সকাল ৮টা ১০ মিনিটে পৌঁছনোর কথা ছিল। কিন্তু তা পৌঁছয় দুপুর ১২টা নাগাদ। সঞ্জয়দের ১২টার বিমানে জম্মু থেকে শ্রীনগর যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বিমান ধরতে পারেননি তাঁরা। পরে সঞ্জয়রা ১৫ হাজার টাকা দিয়ে ট্যাক্সি ভাড়া করে গন্তব্যে পৌঁছন। এর পরেও হয় সমস্যা। সয়মে পৌঁছতে না পারায় বুক করা হোটেলে জায়গা পাননি। ফলে ১০ হাজার টাকা দিয়ে অন্য হোটেলে ব্যবস্থা করতে হয়। এ বার সুপ্রিম কোর্টের রায়ে খরচ হওয়া ওই ২৫ হাজার টাকা তো বটেই, তার সঙ্গে ট্রেন দেরি করায় যে মানসিক চাপে থাকতে হয়েছিল তার জন্য এবং আইনি খরচ বাবদ ৫ হাজার টাকা দিতে বলেছে আদালত। সঙ্গে দিতে হবে ৩০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণের উপরে সুদ।
ট্রেন লেট করায় এমন সমস্যার মুখে অনেককেই পড়তে হয়। কিন্তু ক’জন আর তার জন্য ক্ষতিপূরণের দাবি জানান! সঞ্জয় হাল ছাড়েননি। ন্যাশনাল কনজিউমার ডিসপিউটস রিড্রেসাল কমিশন (এনসিডিআরসি)-এর কাছে অভিযোগ জানান। সুবিচার পান সঞ্জয়। সেখানেই রেলকে ক্ষতিপূরণ দিতে বলা হয়। সেই রায়ই বহাল রেখেছে সুপ্রিম কোর্ট। ওই রায়ে সর্বোচ্চ আদালত এমন জানিয়েছে যে, যদি কোনও যাত্রী রেলের জন্য আর্থিক ক্ষতি হয়েছে এমন প্রমাণ দেখাতে পারেন, তবে ওই যাত্রীকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে রেলের তরফে। তবে এমন কোনও কারণে যদি ট্রেন লেট হয় যা রেলের পক্ষে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয় তবেই এ থেকে ছাড় পাবে তারা।