কর্মী কম, রেলে প্রশ্ন যাত্রী-সুরক্ষা নিয়ে

ইঞ্জিনচালক, গার্ড, স্টেশন মাস্টার, প্যানেল অপারেটর, সিগন্যালিং এবং রেললাইন এবং ইয়ার্ড রক্ষণাবেক্ষণের কাজই মূলত সেফটি ক্যাটেগরির মধ্যে পড়ে।

Advertisement

ফিরোজ ইসলাম

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৪:০৩
Share:

ফাইল চিত্র।

লোকসভা নির্বাচনের কয়েক মাস আগে রেলে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে কর্মীর অভাব দূর করতে কেন্দ্রীয় সরকার ঘটা করে প্রচুর সংখ্যায় লোক নিয়োগের কথা ঘোষণা করেছিল। কিন্তু সেই নিয়োগ প্রক্রিয়া এখনও সম্পূর্ণ হয়নি। তার উপরে বিভিন্ন বিভাগে কর্মী-সঙ্কোচনের উদ্যোগ চলছে বলে অভিযোগ। এই অবস্থায় সারা দেশে ট্রেন চালানোর সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কযুক্ত ‘সেফটি ক্যাটেগরি’র বিভিন্ন পদে বিপুল সংখ্যক কর্মীর অভাবে যাত্রী-নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। রেল মন্ত্রক সূত্রের খবর, সব জ়োনেই কর্মীর অভাব গড়ে ২০ শতাংশের কাছাকাছি।

Advertisement

ইঞ্জিনচালক, গার্ড, স্টেশন মাস্টার, প্যানেল অপারেটর, সিগন্যালিং এবং রেললাইন এবং ইয়ার্ড রক্ষণাবেক্ষণের কাজই মূলত সেফটি ক্যাটেগরির মধ্যে পড়ে। নিরাপদে ট্রেন চালানোর জন্য রেলের ওই সব বিভাগে প্রয়োজনীয় সংখ্যক কর্মীর নিয়মিত উপস্থিতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তার বদলে চলছে ক্রমী-ঘাটতি। রেল মন্ত্রকের খবর, এই মুহূর্তে কর্মীর অভাব সব চেয়ে বেশি (প্রায় ২৮ শতাংশ) উত্তর-পশ্চিম রেলে। পূর্ব রেলে ২২ শতাংশ, দক্ষিণ-পূর্ব রেলে সাড়ে ১৭ শতাংশ, কলকাতা মেট্রোয় প্রায় ১৯ শতাংশ কর্মীর অভাব রয়েছে। অন্যান্য জ়োনের মধ্যে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলে কর্মীর অভাব প্রায় ২১ শতাংশ।

পূর্ব রেলে সেফটি ক্যাটেগরিতে ৭০,৩৫৬টি পদের মধ্যে ১৫,৪১৯টি পদ শূন্য। দক্ষিণ-পূর্ব রেলে ৫৬,২৪২টি পদের মধ্যে খালি ৯৮৮৬টি। কলকাতা মেট্রোয় ১৪২২টি পদের মধ্যে ২৬৮টি পদ শূন্য রয়েছে। সম্প্রতি ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর কাজের জন্য বেশ কিছু কর্মীকে তুলে নিয়ে যাওয়ায় ওই ঘাটতি আরও প্রকট হয়েছে। মোটরম্যানের অভাবে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোয় চালকদের প্রশিক্ষণের কাজও ব্যাহত হয়। যার পরিণামে ওই মেট্রোর উদ্বোধন পরপর কয়েক দফায় পিছিয়ে দিতে হয়েছে। যথেষ্ট কর্মী না-থাকায় মেট্রোয় কর্মীদের ছুটিও ঠিকমতো মিলছে না বলে অভিযোগ। পুজোর সময় অনেক মেট্রোকর্মীকেই ন্যূন্যতম এক দিন ছুটি পাওয়ার জন্য টানা দু’শিফট (১৬ ঘণ্টা) কাজ করতে হয়েছে। অভিযোগ, কর্মীর অভাবে রক্ষণাবেক্ষণের কাজও ব্যাহত হচ্ছে।

Advertisement

পূর্ব রেলে সম্প্রতি ২৮৯২টি পদ লোপের সুপারিশ করা হয়েছে। তার মধ্যে সেফটি ক্যাটেগরির একাধিক পদ রয়েছে বলে অভিযোগ রেল শ্রমিক ইউনিয়নের। ইস্টার্ন রেলওয়ে মেনস ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সূর্যেন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কর্মীর অভাব কয়েক বছর ধরেই প্রকট হচ্ছে। তার মধ্যে আবার পদ বিলোপ করে প্রকৃত অবস্থা আড়াল করার চেষ্টা চলছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement