সিগারেটে অগ্নি সংযোগের মুহূর্তে। অসাবধানী এই পদক্ষেপের ছবি দেখে চমকে গিয়েছেন যাত্রীরা। ছবি : টুইটার থেকে।
ছুটন্ত ট্রেনে নিজের আসনে বসেই সিগারেটে আগুন ধরাচ্ছিলেন এক যাত্রী। দূরপাল্লার ট্রেন। আশপাশে শুয়ে-বসে রয়েছেন অন্যান্য যাত্রীরা। রয়েছে তাদের মালপত্রও। যার অধিকাংশই সহজ দাহ্য। কিন্তু ওই যাত্রীর সে দিকে পরোয়া নেই। ঝুঁকি নিয়ে ট্রেনের মধ্যেই দেশলাই জ্বালালেন তিনি। দৃশ্যটির একটি ভিডিয়ো সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। যা রেল কর্তৃপক্ষেরও চোখে পড়েছে।
ভিডিয়োটি রেকর্ড করা হয়েছে ট্রেনের দ্বিতীয় শ্রেণির শয়ন কামরার ভিতরে। যিনি সিগারেট ধরাচ্ছিলেন তিনি বসেছিলেন সাইড বার্থে। আর যিনি ভিডিয়ো রেকর্ড করেছেন তিনি বসেছিলেন উল্টোদিকের আসনে। তাঁর সেই ভিডিয়োতে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে, ধূমপায়ী যাত্রীর বিপরীতেই বসে রয়েছে দু’টি শিশু। পাশে রয়েছেন বয়স্ক যাত্রীরাও। তাঁদের পায়ের নীচে রাখা প্লাস্টিক এবং কাগজের ব্যাগ। মণীশ জৈন নামে এক ব্যক্তি নিজের টুইটার অ্যাকাউন্টে দৃশ্যটি পোস্ট করে লেখেন, ‘‘বয়স্ক যাত্রী এবং শিশুদের সামনেই ট্রেনের ভিতরে সিগারেট ধরাচ্ছেন এই যাত্রী। তাঁকে নিরস্ত করার চেষ্টা করা হলে তিনি পাল্টা দুর্ব্যবহার করছেন।’’ ওই টুইটেই রেলমন্ত্রক এবং আইআরসিটিসিকে উদ্ধৃত করে মণীশ লেখেন, ‘‘দয়া করে সাহায্য করুন।’’ রেলের জবাব আসে তার কিছু ক্ষণ পরেই।
ট্রেনের ভিতরে ধূমপান শাস্তিযোগ্য অপরাধ। ভারতীয় রেল-আইনের ১৬৭ ধারায় বলা রয়েছে এই অপরাধ এবং সেই সংক্রান্ত শাস্তির কথা। তার পরও বহু যাত্রীকে দেখা যায় রেলের কামরার দরজার সামনে কিংবা শৌচাগারের গলিতে দাঁড়িয়ে লুকিয়ে ধূমপান করতে। কিন্তু এ ভাবে নিজের আসনে বসে প্রকাশ্যে ধূমপান করার ঘটনা এবং ওই যাত্রীর বেপরোয়া হাব ভাব দেখে অবাক হয়েছেন অনেকেই। রেল অবশ্য টুইটটি দেখার পরই দ্রুত জবাব দেয়। তারা লেখে, ‘‘অবিলম্বে এই ট্রেন, কামরা এবং আসনের বিশদ তথ্য আমাদের জানান। আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি।’’
এর পরে রেলের পদক্ষেপের কথাও টুইটারে জানান মনীশই। তিনি লেখেন, ওই টুইটের কিছু ক্ষণ পরেই পরবর্তী স্টেশনে একজন আরপিএফ কর্তা এসে ধমক দিয়ে যান ওই যাত্রীকে। তাঁকে হুঁশিয়ারও করা হয় বলে জানান মনীশ। তবে কোনও শাস্তি বা জরিমানা করা হয়েছে কি না, সে বিষয়ে কিছু লেখেননি তিনি।
মনীশের ওই পোস্টটি ভাইরাল হয়েছে। তবে সেখানে অনেকেই রেলের পদক্ষেপে তাঁদের অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তাঁদের বক্তব্য, ‘‘ওই যাত্রী যে ভাবে বাকিদের জীবন ঝুঁকির মুখে ফেলেছেন, তাতে তাঁকে গ্রেফতার করা উচিত ছিল।’’ কেউ আবার লিখেছেন, ‘‘ওই সুখটান ভয়াবহ অ-সুখের কারণ হতে পারত শুধু একটি আগুনের ফুলকি ভুল জায়গায় ছিটকে এলেই!’’