ফাইল চিত্র।
প্রশ্ন তো দূর, ছাড়পত্র নেই প্রবেশেরই!
সোমবার প্রধানমন্ত্রীর ‘পরীক্ষা পে চর্চায়’ আমন্ত্রিত নন দেশের কোনও বিশ্ববিদ্যালয়-পড়ুয়া। প্রশ্ন করতে পারবে শুধু স্কুল-পড়ুয়ারা। তাদের সঙ্গে আসা শিক্ষক, অভিভাবকদের সে সুযোগ থাকবে না। যা শুনে আন্দোলনকারী ছাত্র-ছাত্রীদের অনেকের কটাক্ষ, কড়া প্রশ্নের ভয়েই বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়াদের আমন্ত্রণ জানানোর সাহস দেখায়নি মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক। শিক্ষক এবং অভিভাবকদেরও মুখে কুলুপ আঁটার বন্দোবস্ত করা হয়েছে।
মন্ত্রক সূত্রের দাবি, এর সঙ্গে দেশ জুড়ে পড়ুয়াদের প্রতিবাদের কোনও যোগ নেই। অনুষ্ঠানটি নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের জন্য। বোর্ড-পরীক্ষার ভয় কাটিয়ে তাঁদের সফল হওয়ার রাস্তা দেখাতেই এই অনুষ্ঠানে আসেন প্রধানমন্ত্রী। সেই কারণে প্রথম বার ২০১৮ সালে আমন্ত্রিত ছিল শুধু তাঁরাই। গত বার পরীক্ষামূলক ভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু পড়ুয়াকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। কিন্তু এ বার শুধু বোর্ড-পরীক্ষার চৌকাঠে দাঁড়ানো ওই চার ক্লাসের পড়ুয়াদের হাজার দুয়েক প্রতিনিধি থাকবে তালকাটোরা স্টেডিয়ামে।
আন্দোলনকারী পড়ুয়াদের একটা বড় অংশ এই যুক্তি মানতে নারাজ। জেএনইউয়ের ছাত্র সংসদ জেএনইউএসইউয়ের ভাইস প্রেসিডেন্ট সাকেত মুনের কথায়, ‘‘সারা দেশে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস প্রতিবাদে উত্তাল। কোথাও কারণ ফি বৃদ্ধি, তো কোথাও এনআরসি-এনপিআর। কিন্তু কোথাও পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বলেননি মোদী বা তাঁর কোনও প্রতিনিধি। পড়ুয়াদের প্রশ্নকে ভয় পাচ্ছেন বলেই সাজানো মঞ্চে ডাকছেন ছোট ছেলে-মেয়েদের। আগে থেকে ঠিক করে রাখা কিছু প্রশ্নের জবাব দেবেন।’’ জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়ার এক ছাত্রের মন্তব্য, ‘‘যে ভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের চত্বরে ঢুকে পুলিশ তাণ্ডব চালিয়েছে, লেলিয়ে দেওয়া হচ্ছে মুখ ঢাকা দুষ্কৃতীদের, তাতে আসল প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার মুখ প্রধানমন্ত্রীর নেই।’’
এই পরিস্থিতিতে সোমবার মোদী যখন মঞ্চে থাকবেন, তখনও রাস্তায় প্রতিবাদ জানাতে থাকবেন পড়ুয়ারা। মিছিল হবে মান্ডি হাউস থেকে। ছাত্র সংগঠন এআইএসএ-র প্রেসিডেন্ট এন সাই বালাজির কটাক্ষ, ‘‘কেউ পাবজি খেলেন কি না, এই জাতীয় প্রশ্নেই প্রধানমন্ত্রী স্বচ্ছন্দ। ক্ষুব্ধ পড়ুয়াদের সত্যিকারের প্রশ্নের উত্তর নেই তাঁর ঝুলিতে।’’ গত বার এক অভিভাবকের কাছে ছেলের মোবাইল-আসক্তির অভিযোগ শুনে সে পাবজি খেলে কি না, জানতে চেয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। বিস্তর আলোচনা হয়েছিল তা ঘিরে।
দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া বিক্রম অনুরাগ, শিবাঞ্জলি কশ্যপদেরও দাবি, ‘‘কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে পড়ুয়াদের মুখোমুখি হওয়ার সাহস নেই মোদী কিংবা তাঁর কোনও মন্ত্রীর।’’
প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আজ পর্যন্ত একটিও সাংবাদিক বৈঠক করেননি মোদী। বারবার অভিযোগ উঠেছে, অপ্রিয় প্রশ্নের মুখোমুখি হওয়া তাঁর ধাতেই নেই। সেই অভিযোগ ফের তুলছেন ‘ডাক না-পাওয়া’ পড়ুয়ারা।