‘মন কি বাত’-এ পাকিস্তানকে নিশানা মোদীর— ফাইল চিত্র।
ঘটনাচক্রে মিলে গিয়েছে দিনক্ষণ। রবিবার ছিল কার্গিল যুদ্ধের ২১ তম বিজয় দিবস। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আজ তাঁর ‘মন কি বাত’-এ সেই ‘সুযোগের’ সদ্ব্যবহারও করলেন পুরোমাত্রায়। অটলবিহারী বাজপেয়ীয় জমানায় জম্মু ও কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখায় পাক হানাদারির প্রসঙ্গ তুলে তুলোধোনা করলেন ইসলামাবাদকে। সেই সঙ্গে তুলে ধরলেন ভারতীয় সেনার বীরত্বের কাহিনি। প্রধানমন্ত্রীর ৩৪ মিনিটের বক্তৃতায় এদিন একাধিকবার এসেছে পাকিস্তানের নাম। গত ২৮ জুন ‘মন কি বাত’-এ একই ভাবে পূর্ব লাদাখের গালওয়ানে বিহার রেজিমেন্টের বীর সেনাদের আত্মবলিদানের প্রসঙ্গ এসেছিল। ব্যতিক্রম শুধু একটাই, প্রধানমন্ত্রীর মুখে সেদিন একবারও শোনা যায়নি হামলাকারী চিনা সেনার নাম।
কার্গিল যুদ্ধের প্রসঙ্গে এদিন মন কি বাত অনুষ্ঠানে মোদীর মন্তব্য, ‘‘ভারতের বন্ধুত্বের প্রতিদানে পিছন থেকে ছুরি মারতে চেয়েছিল পাকিস্তান। কিন্তু আমাদের সেনারা এমন শিক্ষা দিয়েছে, তা ওরা চিরকাল মনে রাখবে।’’ কিন্তু কেন এমন বিশ্বাসঘাতকতা? মোদীর ব্যাখ্যা, ‘‘দেশের অভ্যন্তরীণ অস্থিরতা থেকে নজর ঘোরাতে এবং ভারতের জমি দখলের উদ্দেশ্যেই হামলা চালানো হয়েছিল।’’ ভারতীয় সেনাদের বীরত্ব প্রসঙ্গে তাঁর মন্তব্য, ‘‘ওরা (পাক হানাদার) পাহাড়ের উপরে ঘাঁটি গড়ে বসেছিল। আমরা নীচে ছিলাম। কিন্তু কার্গিল প্রমাণ করেছিল, অবস্থানগত উচ্চতা নয় যুদ্ধে জয়-পরাজয়ের ক্ষেত্রে নির্ণায়ক হয়ে ওঠে সেনার মানসিক উচ্চতা।’’
কার্গিলের পাশাপাশি এদিন দেশজুড়ে করোনাভাইরাস সংক্রমণের প্রসঙ্গও এসেছে মোদীর বক্তৃতায়। তাঁর দাবি, ‘‘অন্য দেশের তুলনায় ভারতে আক্রান্তদের সুস্থ হয়ে ওঠার হার বেশি। মৃত্যুর হার কম।’’ তবে করোনাভাইরাস আগের মতোই এখন যে সমান বিপজ্জনক তা স্মরণ করিয়ে দেন মোদী। মোদীর বলেন, ‘‘অসুবিধা হলেও মাস্ক (পরিবর্ত হিসেবে গামছার কথাও বলেছেন) আমাদের ব্যবহার করতেই হবে। যাঁরা বলছেন, মাস্ক পরলে অস্বস্তি হচ্ছে, তাঁরা ডাক্তার-নার্স-স্বাস্থ্যকর্মীদের কথাটা একবার ভাবুন। কত অসুবিধা সহ্য করে ঘণ্টার পরে ঘণ্টা মাস্ক পরে ওঁরা কাজ করছেন।’’
আরও পড়ুন: কার্গিল-যুদ্ধের ২১ বছর, পাক হানাদারদের হঠিয়ে দেওয়া সেই বীর সেনাদের চেনেন তো?
করোনা মোকাবিলার ক্ষেত্রে গ্রামীণ ভারত দিশা দেখাবে বলেও জানান মোদী। আজ ‘মন কি বাত’-এ দেশীয় পণ্য কেনার আহ্বান জানিয়েছেন মোদী। আগামী ৭ অগস্ট ‘হ্যান্ডলুম দিবস’ সফল করার আহ্বান জানিয়েছেন। তাঁর মতে, দেশীয় পণ্য কেনার অভ্যাস গড়ে উঠলে ‘আত্মনির্ভর ভারত’ স্লোগান সফল হবে। এমনকি, শিশুদের ইন্টারনেটে অনলাইন গেমসের বদলে প্রাচীন ভারতীয় ‘ইন্ডোর গেমস’ খেলার অভ্যাস গড়ে তোলানোর জন্য অভিভাবকদের পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন: পাক-অধিকৃত কাশ্মীরে বেহাল জীবন, জানাল পাক সমীক্ষাই