একাধিক বার ভারতে এসেছিলেন পাক সাংবাদিক।
২০০৭ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে একাধিকবার দিল্লি এবং আলিগড়ে এসেছিলেন একাধিক কর্মসূচিতে যোগ দিতে পাকিস্তানের সাংবাদিক নুসরত মির্জা। তিনি স্বীকার করে নিলেন, সে সময় পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই-এর হয়ে চরবৃত্তি করেছিলেন।
২০০৯ সালের ২৭ অক্টোবর নয়াদিল্লির ওবেরয় হোটেলে ‘ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স এগেইনস্ট টেররিজম’-এ যোগ দিয়েছিলেন নুসরত। তাঁকে স্বাগত জানিয়েছিলেন, জামা মসজিদের শাহি ইমাম আহমেদ বুখারি এবং ইয়াহিয়া বুখারি।
ওই সম্মেলনের আয়োজন করেছিল জামা মসজিদের ইউনাইটেড ফোরাম। তাতে যোগ দিয়েছিলেন ভারতের তৎকালীন উপরাষ্ট্রপতি হামিদ আনসারি, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গুলাম নবি আজাদ।
১১ জুলাই একটি ভার্চুয়াল মাধ্যমে মির্জা এই স্বীকারোক্তি করেন। তিনি জানান, ভারতে আসার জন্য বেশ কিছু বাড়তি সুবিধা পাইয়ে দিয়েছিল পাকিস্তানের বিদেশ মন্ত্রক। তাঁর কথায়, ‘‘আমি ভারত থেকে যে তথ্য জোগাড় করেছিলাম, তা পাকিস্তানের প্রাক্তন সেনাপ্রধান কায়ানিকে দিতে বলেছিলেন প্রাক্তন মন্ত্রী খুরশিদ। আমি বলে দিয়েছিলাম, এ সব তথ্য আমি কায়ানিকে দেব না। আপনি চাইলে আপনাকেই দিয়ে দিচ্ছি। পরে তিনি সেই তথ্য কায়ানিকে দিয়ে দেন।’’
সাংবাদিক মির্জা আরও বলেন, ‘‘পরে ওঁরা আমায় ডেকে বলেছিলেন, এ ধরনের আরও তথ্য জোগাড় করে দিতে পারব কি না! আমি যা তথ্য দিয়েছিলাম, সেই নিয়েই কাজ করতে বলেছিলাম ওঁদের। ওদের গবেষণার জন্য শাখা রয়েছে। ভারতে নেতৃত্বের দুর্বলতা নিয়েও ওঁরা অবহিত। যদিও ওরা এ সব তথ্য ব্যবহার করেননি।’’
নুসরত মির্জার সংগঠনের তরফে তাঁর বেশ কিছু ছবি পোস্ট করা হয়েছিল। সেখানে দেখা যাচ্ছে, ২০০৭ থেকে ২০১০ সালের মাঝে তিনি আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের কেনেডি প্রেক্ষাগৃহে অতিথি হয়ে বক্তব্য রাখছেন। অন্য একটি ছবিতে দেখা গিয়েছে, ২০১০ সালে নুসরত নয়াদিল্লির জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়ার আনসারি অডিটোরিয়ামে ধর্মীয় সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন। সঙ্গে রয়েছেন পাকিস্তানের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ডঃ আরাইশ সিংহ।
এর আগে পাক সাংবাদিক শাকিল চৌধুরীকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে নুসরত বলেন, ‘‘এমনিতে ভারতে ভিসার আবেদন করলে এক সঙ্গে তিনটির বেশি শহরে তারা যাওয়ার অনুমোদন দেয় না। তখন পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী ছিলেন খুরশিদ কাসুরি। তিনি আমায় ভারতের সাত শহরে ঘোরার ভিসা পেতে সাহায্য করেন।’’ ওই সাক্ষাৎকার রয়েছে ইউটিউবে। পাঁচ বার ভারতে আসা নিয়ে অন্য একটি সাক্ষাৎকারে গর্বও করেছিলেন নুসরত।
বার বার ভারত সরকারের নীতির সমালোচনা করে শিরোনামে এসেছেন নুসরত। এ সবের বিরুদ্ধে বেশ কিছু সভা-সমিতিরও আয়োজন করেছেন তিনি।