SAARC

SAARC: সার্কে আগ্রহী পাকিস্তান, সাড়া নেই দিল্লির

নতুন বছরে সার্ক সম্মেলনের আয়োজন করতে বদ্ধপরিকর ইসলামাবাদ। উদ্দেশ্য, এই সম্মেলনে সার্কভূক্ত আফগানিস্তান সরকার তথা তালিবানকে নিয়ে আসা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০২২ ০৭:২৯
Share:

প্রতীকী ছবি।

নতুন বছরে যেন তেন প্রকারেণ সার্ক সম্মেলনের আয়োজন করতে বদ্ধপরিকর ইসলামাবাদ। উদ্দেশ্য, এই সম্মেলনে সার্কভূক্ত আফগানিস্তান সরকার তথা তালিবানকে নিয়ে আসা। দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশ তথা ভারতের সামনে তালিবানকে রেখে, পিছন থেকে কৌশলগত কলকাঠি নাড়ানো। সাউথ ব্লক সূত্রের খবর, পাকিস্তানের এই পরিকল্পনায় বিন্দুমাত্র সাড়া দেওয়ার সম্ভাবনা নেই নয়াদিল্লির।

Advertisement

গত কাল রাতে পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী শাহ মামুদ কুরেশি বলেন, ‘‘আমরা সার্ক সম্মেলনের আয়োজন করতে তৈরি। যদি ভারত ইসলামাবাদে না আসতে চায়, তা হলে তারা ভিডিয়ো মাধ্যমে যোগ দিতে পারে। কিন্তু ভারতের উচিত নয় অন্য দেশকে যোগদান থেকে নিবৃত্ত করা।’’ সার্ক-এর নিয়ম অনুযায়ী, সার্কভূক্ত কোনও একটি দেশ যদি যোগ দিতে অস্বীকার করে, তাহলে সে বছর গোটা সম্মেলনটিই বাতিল হয়ে যায়।

২০১৬ সালের নভেম্বরে সার্ক সম্মেলন হওয়ার কথা ছিল ইসলামাবাদে। কিন্তু সেপ্টেম্বরে কাশ্মীরের উরি সেক্টরে ভারতীয় সেনার উপর সন্ত্রাসবাদী হামলা হওয়ার পর পরিস্থিতি উত্ত্প্ত হয়ে ওঠে। ভারত ইসলামাবাদের সার্ক সম্মেলনে যোগ দিতে অস্বীকার করে। এরপর আর ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের উন্নতি হয়নি। বরং অবনতি হয়েছে বছরের পর বছর।

Advertisement

সংবাদমাধ্যমে দেওয়া পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রীর প্রস্তাবের কোনও আনুষ্ঠানিক জবাব স্বাভাবিক ভাবেই ভারত দেয়নি। কিন্তু নয়াদিল্লির তরফে ঘরোয়া ভাবে জানানো হয়েছে, সন্ত্রাস এবং আলোচনা একসঙ্গে চলতে পারে না। ভারত বিরোধী আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাস বন্ধ করা, ভারতে গত দশ বছরের বিভিন্ন সময়ে হামলায় অভিযুক্তদের শাস্তির ব্যবস্থা করার মতো পদক্ষেপগুলি না করলে আলোচনায় বসা সম্ভব নয়।

তবে কূটনৈতিক সূত্রের মতে, এবার সার্ক সম্মেলনের আয়োজন করার জন্য পাকিস্তানের চাপ দেওয়ার পিছনে রয়েছে ভিন্ন রণনীতি। তালিবান সরকারকে আন্তর্জাতিক বৈধতা দিতে এবং আন্তর্জাতিক কূটনীতির মূলস্রোতে আনতে চিন এবং পাকিস্তানের ব্যগ্রতা রয়েছে। পাকিস্তানি তালিবানের একটি বড় অংশ সে দেশের সরকারের প্রভাবশালী অংশ। ফলে বাইরের বিশ্বের সঙ্গে কাবুলের যাবতীয় বাণিজ্য, বিনিয়োগ, প্রতিরক্ষা সমঝোতা, নিরাপত্তাচুক্তির লাভের একটি বড় অংশ ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ইসলামাবাদের কাছে আসবে। গোটা এলাকার নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণের চাবিকাঠিও আপাতত তাদের উপর। চিন ও রাশিয়া সরাসরি তালিবানের সঙ্গে কথা বলছে। ভারত এখনও এই সরকারকে বৈধতা দেয়নি। তবে কূটনৈতিক চ্যানেলের মাধ্যমে তাদের সঙ্গে আলোচনা করতে সাউথ ব্লকও আগ্রহ দেখিয়েছে। প্রশ্ন হল, তা হলে সার্ক সম্মেলনের আমন্ত্রণ স্বীকার করে তালিবানদের সঙ্গে আলোচনায় বসার সুযোগ কেন হাতছাড়া করছে নয়াদিল্লি?

বিদেশ মন্ত্রকের একটি সূত্রের মতে, কথা বলার একটা দরজা অবশ্যই অদূর ভবিষ্যতে তৈরি করতে হবে। কিন্তু সেটা করতে হবে কোনও ‘নিরপেক্ষ’ চ্যানেলের মাধ্যমে। ইসলামাবাদের মাটিতে বসে তালিবানের সঙ্গে আলোচনা শুধু অর্থহীনই নয়, তাতে হিতে বিপরীত হতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement