প্রতীকী ছবি।
মধুচক্রের ফাঁদে ধরা দিয়ে জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত খুঁটিনাটি তথ্য পাকিস্তানি চরদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছেন ভারতীয় সেনার কিছু আধিকারিক! সেনার তরফেই এই ঘটনা প্রকাশ্যে আনা হয়েছে। রাজস্থান পুলিশের তরফে দাবি করা হয়েছে, ২০১৯ সালের পর রাজস্থানে চরবৃত্তির অভিযোগে গ্রেফতারির সংখ্যা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেয়েছে।
উচ্চপদস্থ সেনা আধিকারিক প্রদীপ কুমার (নাম পরিবর্তিত) রিয়া (নাম পরিবর্তিত) নামের এক মহিলার সঙ্গে প্রেমে জড়িয়ে পড়েন। তাঁদের এই প্রেম প্রায় দেড় বছর টিকেছিল। প্রেম করার সময় রিয়া প্রদীপের কাছে দাবি করেছিলেন, তিনি সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট কর্নেল, বর্তমানে তিনি বেঙ্গালুরুর মিলিটারি হাসপাতালে দায়িত্বপ্রাপ্ত। সেনাবাহিনীর সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য প্রদীপ তা-ই বিশ্বাস করেছিলেন। পরে সেনাবাহিনীর গোপন তথ্যপাচার করার অভিযোগে প্রদীপকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সেনাবাহিনীর গোয়েন্দা বিভাগের আধিকারিকরা প্রদীপকে জানান, যে রিয়ার প্রতি তিনি অনুরক্ত, তিনি আসলে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর সদস্য। প্রেমের অভিনয় করে সেনাবাহিনীর গোপন এবং স্পর্শকাতর তথ্য হাতিয়ে নেওয়াই ছিল তাঁর লক্ষ্য। সে কাজে কিছু ক্ষেত্রে তিনি সফলও হয়েছেন।
ধরা পড়ার পর প্রদীপ বিশ্বাসই করতে চাননি যে, তাঁর প্রণয়ী পাক গুপ্তচর। তাঁকে সবটা বোঝাতে হয়। রাজস্থান পুলিশের তরফে জানানো হয়, এর পর অনুতাপ করেন প্রদীপ। পুলিশ এবং সেনার একটি সূত্রে এই প্রসঙ্গে জানান, পাক সেনার তরফে নিয়োজিত এই গুপ্তচরদের কাজের ধরন প্রায় এক। প্রথমে তাঁরা ভিডিয়ো কল কিংবা মিসড কলের মাধ্যমে উল্টো দিকের মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ গড়ার চেষ্টা করেন। তার পর ক্রমশ ঘনিষ্ঠতা বাড়িয়ে নগ্ন ছবি দেখিয়ে এবং অন্যান্য প্রলোভন দেখিয়ে দেশের নিরাপত্তা সংক্রান্ত গোপন তথ্য হাসিল করার চেষ্টা করেন। পুলিশের দাবি, মূলত সেনাবাহিনীর সদস্যদের লক্ষ্য করেই গুপ্তচরেরা এই কৌশল রচনা করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সেনাবাহিনীর এক উচ্চপদস্থ আধিকারিকের বক্তব্য, প্রেমের এই ফাঁদ থেকে সেনাবাহিনীর সদস্যদের মুক্ত করতে বিশেষ অভিযানে নামতে চলেছে সেনা এবং পুলিশের যৌথবাহিনী। তাঁরা সেনাবাহিনীর সদস্য এবং সীমান্তবর্তী গ্রামের বাসিন্দাদের এই বিষয়ে সচেতন করবেন। ওই আধিকারিকের আরও বক্তব্য, সেনাবাহিনীর সদস্যদের সোশাল মিডিয়া ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। সকলে সেই নির্দেশিকা মানছেন কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে।