কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরম। —ফাইল চিত্র।
লাদাখে চিনের অনুপ্রবেশ ও ভারতের জমি দখল নিয়ে সংসদে প্রশ্ন জমা পড়লে তা গ্রহণই করা হচ্ছে না বলে এর আগে অভিযোগ উঠেছিল। রাজ্যসভায় দাঁড়িয়ে আজ কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরমের অভিযোগ, মণিপুর নিয়ে প্রশ্ন করা হলেও তা গৃহীত হচ্ছে না। তার লিখিত উত্তরও দেওয়া হচ্ছে না।
অন্য দিকে সিপিএম সাংসদ জন ব্রিট্টাস ইন্টারনেট পরিষেবা রাখার সমস্যা নিয়ে বলতে গিয়ে অভিযোগ তুললেন, মণিপুরে দিনের পর দিন ইন্টারনেট বন্ধ রাখার ফলেই সেখানে বিবস্ত্র করে গণধর্ষণের ঘটনা অনেক পরে প্রকাশ্যে এসেছে। ইন্টারনেট বন্ধ থাকার ফলে অপরাধীদেরমনে ক্যামেরাবন্দি হয়ে যাওয়ার ভয়ও কাজ করেনি।
চিদম্বরম রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড়ের সামনে অভিযোগ তুলেছেন, একাধিক সাংসদ তাঁকে জানিয়েছেন মণিপুর নিয়ে প্রশ্ন জমা দেওয়া হলেও তা গৃহীত হচ্ছে না। অথবা তার লিখিত উত্তর দেওয়া হচ্ছে না। তাঁর বলেন, ‘‘সাংসদদের গবেষণায় সাহায্য করার জন্য যে সংস্থা কাজ করে, আমি সেখানে খোঁজ নিয়েছিলাম, কোন কোন প্রশ্ন গৃহীত হয়েছে বা জবাব দেওয়া হয়েছে। উত্তর দেখে আমি স্তম্ভিত। ২০ জুলাই অর্থাৎ সংসদের বাদল অধিবেশনের শুরুর দিন থেকে মণিপুর বিষয়ে কোনও প্রশ্ন গৃহীত হয়নি বা মণিপুর নিয়ে কোনও প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হয়নি।’’
ধনখড় জানান, তিনি বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন। চিদম্বরমের তোপের জবাবে রাজ্যসভার নেতা, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পীযূষ গয়ালের পাল্টা, চিদম্বরম রাজ্যসভার সভাপতির অপমান করছেন। সভাপতির দিকেই আঙুল তুলছেন। তাঁকে ক্ষমা চাইতে হবে।
মণিপুর নিয়ে প্রশ্ন গৃহীত না হলেও আজ রাজ্যসভায় প্রশ্নোত্তর পর্বে যখনই বিরোধী সাংসদদের ডাকা হয়েছে, তখনই তাঁরা মণিপুরের প্রসঙ্গ তুলেছেন। ধনখড় তখন প্রশ্নোত্তর পর্ব বন্ধ করে সাংসদদের ‘স্পেশাল মেনশন’ পর্বে চলে যান। সেখানেও শান্তনু সেন, শান্তা ছেত্রীরা মণিপুর প্রসঙ্গ তোলেন। সেই সময়ই ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধের বিষয়ে বলতে গিয়ে সিপিএমের জন ব্রিট্টাস মণিপুরের ভিডিয়োর কথা বলেন। কুকি মহিলাদের উপরে নির্যাতনের বিষয়টি তুলে ব্রিট্টাস বলেন, “কুখ্যাত অপরাধীও অপরাধ করতে গিয়ে ক্যামেরাবন্দি হয়ে যাওয়ার ভয়ে থাকে। যেখানে হিংসা চলছে, সেখানে ইন্টারনেট বন্ধ থাকলে হামলাকারীরা যা খুশি করার সুযোগ পেয়ে যায়। মণিপুর তারই জ্বলন্ত উদাহরণ। সন্ত্রাসে খুন ও গণধর্ষণকে অস্ত্র করা হচ্ছে, তা দেরিতে জানা গিয়েছে।’’
গত কাল মণিপুরের প্রসঙ্গ তোলার সময় রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খড়্গের মাইক বন্ধ করে দেওয়ার প্রতিবাদে বিরোধীরা অধিবেশন বয়কট করেছিলেন। আজও বিরোধীরা বেলা ২টোর পর রাজ্যসভা থেকে ওয়াক-আউট করেছেন। খড়্গে বলেছেন, তাঁর মাইক বন্ধ করে দিয়ে তাঁর অপমান করা হয়েছে। ধনখড়ের উত্তর, মাইক বন্ধ করা হয়নি। খড়্গেকে নির্দিষ্ট বিষয়ের বাইরে বলার সুযোগ দেওয়া হয়নি।
আজ রাজ্যসভায় সারাদিনই বিরোধীরা মণিপুরের ব্যাপারে মোদীর নীরবতা নিয়ে স্লোগান দেন। তবে মন্ত্রী গডকড়ী বলতে উঠলে তাঁরা চুপ ছিলেন। এক বিরোধী সাংসদ চেঁচিয়ে বলেন, ‘‘গডকড়ীজি, বিজেপি যখন ২০০-র নীচে নেমে যাবে, তখন আপনাকে আমাদের দরকার হবে।’’