ছবি: পিটিআই।
আইএনএক্স মিডিয়া মামলার চার্জশিটে ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায়কে পুরো ছাড় দিল সিবিআই। মামলাটিতে রাজসাক্ষী হওয়াতেই মেয়ে শিনা বরার হত্যায় বিচারাধীন বন্দি ইন্দ্রাণীকে এই ছাড়। যার অর্থ আইএনএক্স মিডিয়ার প্রতিষ্ঠাতা ইন্দ্রাণীর কোনও বিচার হবে না, তাঁরই সংস্থা সংক্রান্ত দুর্নীতির মামলায়। চার্জশিটে ব্যক্তি ও সংস্থা মিলিয়ে অভিযুক্তের সংখ্যা মোট ১৪। পি চিদম্বরম ও ছেলে কার্তি তাঁদের অন্যতম। দিল্লির বিশেষ সিবিআই আদালতে পেশ হয়েছে এই চার্জশিট। অন্য দিকে সুপ্রিম কোর্টে আজ চিদম্বরমের জামিনের আর্জি নিয়ে শুনানি হলেও, রায়দান স্থগিত রাখা হয়। সিবিআই জানিয়েছে, চিদম্বরমের বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগও উঠে এসেছে তদন্তে। তাই আরও তদন্ত দরকার। সিবিআই মামলাটি করেছিল ২০১৭ সালের ১৫ মে।
জেলে ৪৩ দিনে চিদম্বরমের ওজন কমেছে ৫ কেজি। দু’বার অসুস্থ হয়েছেন। যার জন্য তাঁকে অ্যান্টিবায়োটিক নিতে হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টেকে এ কথা জানিয়ে আজ তাঁর স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ জানান আইনজীবী কপিল সিব্বল। আর্জি জানালেন ৭৪ বছর বয়সি এই প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর জামিনের। আইএনএক্স মামলায় বন্দি চিদম্বরমের জামিনের আর্জি খারিজ হয়েছিল দিল্লির আদালতে। এতে শীর্ষ আদালতে যান তাঁর আইনজীবীরা। বিচারপতি আর ভানুমতি, বিচার এ এস বোপান্না ও বিচারপতি হৃষীকেশ রায়কে নিয়ে গঠিত সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ সেই আর্জির পক্ষে-বিপক্ষে সওয়াল শুনলেও এ দিন কোনও রায় দেয়নি।
সিবিআইয়ের হয়ে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা এ দিন জামিনের আর্জির বিরোধিতা করেন সুপ্রিম কোর্টে। তিনি জানান, আইএনক্স মিডিয়া মামলায় ১৫ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করেছে সিবিআই। চিদম্বরম ও কার্তি রয়েছেন অভিযুক্তদের তালিকায়। তদন্তে, চিদম্বরমের বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগও উঠে এসেছে। তাই আরও তদন্ত দরকার। এ ছাড়া সিঙ্গাপুর ও মরিশাসে তথ্য চেয়ে ‘লেটার রোগেটারি’ পাঠানো হয়েছে। জবাবের অপেক্ষায় রয়েছে সিবিআই। মেহতা বলেন, ‘‘এই অবস্থায় সাক্ষ্য নেওয়া সম্পূর্ণ হওয়ার আগে চিদম্বরমকে জামিন দেওয়া উচিত নয়। কারণ তাঁর উপস্থিতিই সাক্ষীকে ভীত করার পক্ষে যথেষ্ট।’’ তিনি মনে করিয়ে দেন, এখন একটা যুগ এসেছে, যখন আর্থিক অপরাধে অভিযুক্ত হলেই লোকজন বিদেশে পালিয়ে যাচ্ছেন।
সিব্বলের সহযোগী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভীও এ দিন সওয়াল করেন চিদম্বরমের হয়ে। প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী তথ্যপ্রমাণ লোপাট বা বিকৃত করতে পারেন— সিবিআইয়ের এই অভিযোগের বিরোধিতা করেন তিনি। আর সিব্বল ফের দাবি করেন, একজন রাজসাক্ষীর অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা করা হয়েছে। আইনের চোখে যা খুব দুর্বল। সিব্বল আরও যুক্তি দেন, ‘‘সকলেই জানেন টুজি মামলায় কী হয়েছিল। চার্জশিট পেশের পরে সব অভিযুক্তই ছাড়া পেয়েছিলেন।’’ বিষয়টি নিয়ে সিব্বলের সঙ্গে তপ্ত বাদানুবাদ হয় মেহতার। সিব্বলের বক্তব্যে আপত্তি জানিয়ে সলিসিটর জেনারেল বলেন, ‘‘মামলাটি এখনও হাইকোর্টে চলছে। তাই প্রসঙ্গ এখানে তোলা যায় না।’’ তা ছাড়া, দুর্নীতিকে বিন্দুমাত্র বরদাস্ত না-করার (জ়িরো টলারেন্স) নীতি নেওয়াটা জরুরি বলে মন্তব্য করেন তিনি। সিব্বল তোলেন বয়স ও স্বাস্থ্যের প্রসঙ্গও। চিদম্বরমের ওজন ৭৩.৫ কেজি থেকে ৬৮.৫ কেজিতে নেমে আসার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, জেলে থাকলে চিদম্বরমের স্বাস্থ্য পরিস্থিতি আরও জটিল আকার নিতে পারে।