পদপিষ্টের ঘটনার পর দুর্ঘটনাস্থলে পুলিশ এবং স্থানীয়েরা। পড়ে রয়েছে ভক্তদের চটি-জুতো। ছবি: পিটিআই।
অতিরিক্ত ভিড়ই বিপর্যয়ের মূল কারণ। উত্তরপ্রদেশের হাথরসে পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনা নিয়ে পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) যে রিপোর্ট দিতে চলেছে, সেখানে এই বিষয়টিরই উল্লেখ করা হয়েছে। মঙ্গলবারই উত্তরপ্রদেশের যোগী আদিত্যনাথের সরকারের কাছে সেই রিপোর্ট তুলে দিতে চলেছেন সিট-এর সদস্যেরা।
উত্তরপ্রদেশ পুলিশের অতিরিক্ত ডিজি (আগরা) অনুপম কুলশ্রেষ্ঠ এবং আলিগড়ের ডিভিশনাল কমিশনার চৈত্রা ভি-র নেতৃত্বে এই তদন্ত রিপোর্ট তৈরি হয়। পুলিশের তদন্তকারী দলের সদস্যেরা ১২৮ জন প্রত্যক্ষদর্শী এবং দুর্ঘটনার দিন সেখানে উপস্থিত থাকা পুলিশকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন। তার ভিত্তিতে যে রিপোর্ট প্রস্তুত করা হয়েছে, তাতে বলা হয়েছে বিপর্যয়ের অন্য অনেক কারণ থাকলেও অতিরিক্ত ভিড়ই মূল কারণ।
মঙ্গলবার হাথরসের মুগলগঢ়হীতে একটি ‘সৎসঙ্গে’র ডাক দিয়েছিলেন স্বঘোষিত ধর্মগুরু সুরজ পাল ওরফে নারায়ণ সাকার হরি ওরফে ‘ভোলে বাবা’। খোলা মাঠে তাঁবু খাটিয়ে ‘সৎসঙ্গ’-এর আয়োজন করা হয়েছিল। অনুষ্ঠান শেষেই ঘটে যায় বিপত্তি। হুড়োহুড়ির মধ্যে পদপিষ্ট হয়ে মারা যান ১২১ জন। বেশ কয়েক জনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
আগেই পুলিশের তরফে করা এফআইআরে বলা হয়েছিল, ‘সৎসঙ্গে’ ৮০ হাজার ভক্ত উপস্থিত থাকবেন বলে পুলিশকে জানিয়েছিলেন উদ্যোক্তারা। কিন্তু দুর্ঘটনার দিন সেখানে উপস্থিত ছিলেন আড়াই লক্ষ মানুষ। ‘সৎসঙ্গের’ মূল উদ্যোক্তা দেবপ্রকাশ মধুরকর-সহ মোট ন’জনকে এখনও পর্যন্ত গ্রেফতার করা হলেও অধরাই রয়ে গিয়েছেন ‘ভোলে বাবা’। এমনকি এফআইআরেও তাঁর নাম নেই। যদিও তাঁর আইনজীবী জানিয়েছেন, ‘ভোলে বাবা’ তদন্তের সম্মুখীন হতে প্রস্তুত। সম্প্রতি একটি ভিডিয়ো প্রকাশ করে ওই স্বঘোষিত ধর্মগুরু বলেন, ‘‘আমি ব্যথিত।’’ এই দুর্ঘটনার নেপথ্যে ষড়যন্ত্রের তত্ত্বও ভেসে উঠেছে। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, তারা সব দিক খতিয়ে দেখছে। সিট-এর পাশাপাশি হাই কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বাধীন একটি বিচার বিভাগীয় প্যানেলও ঘটনার তদন্ত করছে।