ছোট কুঠুরির মতো জায়গায় এক সঙ্গে ঠাসাঠাসি। —প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
একসঙ্গে ৫০ জন কয়েদিকে রাখার জায়গা রয়েছে জেলে। অথচ সেখানে বর্তমানে রয়েছেন ২০০-২২০ জন বন্দি। এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে মুম্বই কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে (সাবেক আর্থার রোড জেল)। সম্প্রতি বম্বে হাই কোর্টে রিপোর্ট জমা দিয়ে এ কথা জানিয়েছেন সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ।
জমি দখল মামলায় নাগপুরের এক অভিযুক্তকে প্রথমে মুম্বই কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে রাখা হয়েছিল। পরে তাঁকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় তালোজা জেলে। কিন্তু অভিযুক্ত ওই জেলে থাকতে চাইছিলেন না। তিনি আবার মুম্বই কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে ফিরতে চান। তা নিয়ে নিম্ন আদালতে আবেদন জানান। সেই আবেদন মঞ্জুরও করে আদালত। তবে অভিযুক্তকে পুনরায় মুম্বই কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে ফেরানোয় আপত্তি জানায় মহারাষ্ট্র সরকার। তারা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়। রাজ্যের বক্তব্য, মুম্বই কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে বন্দিকে স্থানান্তর করলে নিরাপত্তাজনিত সমস্যা তৈরি হতে পারে।
বম্বে হাই কোর্টে সম্প্রতি এ বিষয়ে একটি রিপোর্টও জমা দেন মুম্বই কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ। আইনি খবর পরিবেশনকারী ওয়েবসাইট ‘বার অ্যান্ড বেঞ্চ’ অনুসারে, ওই রিপোর্টে জেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, সেখানে ৫০ জন বন্দিকে রাখার জায়গা আছে। কিন্তু বর্তমানে ওই সংশোধনাগারে বন্দিসংখ্যা ২০০-২২০ জন (১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত হিসাব অনুযায়ী)। বন্দিদের কেউ কেউ ইতিমধ্যে জেল কর্তৃপক্ষের কাছে এ বিষয়ে অভিযোগ জানিয়েছেন, তা-ও নজরে এসেছে আদালতের। তাঁদের চলাফেরা, ঘুম এবং অন্য কাজকর্মের সময়ে জায়গার অভাবে সমস্যা তৈরি হয়।
‘বার অ্যান্ড বেঞ্চ’ অনুসারে, অতিরিক্ত সংখ্যায় বন্দি থাকার ফলে সেখানে নিরাপত্তাজনিত সমস্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে। মুম্বই কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে বিভিন্ন গুরুতর অপরাধে অভিযুক্তেরা বন্দি রয়েছেন। সংঘটিত অপরাধের মামলা অভিযুক্ত থেকে শুরু করে বোমা বিস্ফোরণের মামলায় বিচারাধীন বন্দি, এমনকি সন্ত্রাসবাদ-সংক্রান্ত মামলার অভিযুক্তও বন্দি রয়েছেন। বম্বে হাই কোর্ট জানিয়েছে, এই পরিস্থিতিতে সীমিত লোকবল নিয়ে বিচারাধীন বন্দিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা জেল কর্তৃপক্ষের কাছে মাথাব্যথার কারণ হয়ে ওঠে।
এই অবস্থায় অভিযুক্তকে তালোজা জেল থেকে মুম্বই কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে স্থানান্তর না-করার নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্টের বিচারপতি মিলিন্দ যাদবের একক বেঞ্চ।