মনমরা। কাজিরাঙার পশু উদ্ধার কেন্দ্রে অনাথ গন্ডারশাবক। শুভময় ভট্টাচার্যের তোলা ছবি।
পুনর্বাসন কেন্দ্রে ক্রমে বাড়ছে অনাথ গন্ডারশাবকের সংখ্যা। কিন্তু তুলনায় অমিল শিশুখাদ্য। বাধ্য হয়ে অনাথ ওই শাবকদের দুধের জন্য রাজ্যবাসীর সাহায্য চাইল কাজিরাঙা পশু উদ্ধার ও পুনর্বাসন কেন্দ্র।
কাজিরাঙার অধিকর্তা সত্যেন্দ্র সিংহ জানান, এ বারের বন্যায় কাজিরাঙায় এখনও পর্যন্ত মৃত পশুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৭০টি। তার মধ্যে গন্ডার ২০টি। গত কাল কোহরা ও বাগরিতে আরও দু’টি গন্ডারশাবকের দেহ মেলে। রাতে নালায় পড়ে থাকা দেড় বছরের গন্ডারশাবককে উদ্ধার করা হয়। জল নামতে থাকায় এখন পর্যন্ত চারটি বুনো মোষ, ১২টি বুনো শুয়োর, ১০টি বারাশিঙা, ছ’টি সম্বর, দু’টি সজারু, একটি অজগর, ২১২টি হগ ডিয়ারের দেহ উদ্ধার হয়েছে। অর্ধশতাধিক হরিণ মরেছে রাস্তা পার হতে গিয়ে।
পশু চিকিৎসক পানজিৎ বসুমাতারি জানান, উদ্ধার হওয়া শাবকগুলির অনেকেই আতঙ্কে রয়েছে এখনও। তাই আক্রমণাত্মক মনোভাব বেড়েছে। তবু কর্মীরা প্রাণের ঝুঁকি নিয়েই নিজে হাতে তাঁদের খাওয়াচ্ছেন।
গত কাল গোলাঘাটে এক যুবক ও এক কিশোর বন্যায় মারা যায়। এ দিন বরপেটায় এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৯। এখনও ২১টি জেলার ১৬ লক্ষ ৬৩ হাজার লোক বন্যাকবলিত। ৩১০টি ত্রাণশিবির ও ১৫৩টি ত্রাণ বন্টন শিবির খোলা হয়েছে। দেড় লক্ষ হেক্টর কৃষিভূমি এখনও জলের তলায়। ব্রহ্মপুত্র নিমাতিঘাট, গোয়ালপাড়া ও ধুবুরিতে, ধনসিরি গোলাঘাটে, শোণিতপুরে জিয়াভরালি, কামরূপে পুঁঠিমারি ও বরপেটায় বেকি বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। বন্যার্তদের জন্য বিভিন্ন জেলা প্রশাসনের তরফে সরকারি কর্মীদের একদিনে বেতন দান করার আবেদন জানানো হয়েছে। এ দিন অয়েলের তরফে মুখ্যমন্ত্রী ত্রাণ তহবিলে ৭৫ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়।
আজ কংগ্রেস সাংসদ গৌরব গগৈ ও বিজেপি সাংসদ রামপ্রসাদ শর্মা অসমকে বিশেষ সাহায্য দেওয়া ও এই বন্যাকে জাতীয় বিপর্যয় ঘোষণা করার দাবি তোলেন।
গগৈ বলেন, ‘‘শুধু অসমই নয়, অরুণাচল ও মেঘালয়ের বন্যা পরিস্থিতিকেও কোনও গুরুত্বই দিচ্ছে না কেন্দ্র।’’