ফাইল চিত্র।
দিল্লির সীমানায় চলা কৃষক আন্দোলনের ছ’মাস পূর্তির বিষয়টিকে কেন্দ্র করে দেশের বিরোধী দলগুলি একটি ছাতার তলায় এলো। কংগ্রেস, তৃণমূল, বাম-সহ ১২টি দল আজ একটি যৌথ বিবৃতি দিয়েছে। আগামী ২৬ তারিখ সংযুক্ত কিসান মোর্চা তাদের ছ’মাস পূর্তিতে দেশব্যাপী ‘কালা দিবস’ ঘোষণা করেছে। বিরোধী দলগুলির আজকে বিবৃতিতে কৃষকদের ওই প্রতিবাদকে সমর্থন জানানো হয়েছে।
বিরোধী দলগুলির তরফে প্রকাশিত বিবৃতিতে সই করেছেন কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী, তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরে, ডিএমকে প্রধান এম কে স্ট্যালিন, সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি-সহ অনেক নেতা। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘গত ১২ মে আমরা যৌথ ভাবে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছিলাম। বলা হয়েছিল, কৃষি আইন প্রত্যাহার করুন। আমাদের লক্ষ লক্ষ অন্নদাতাকে অতিমারির হাত থেকে বাঁচান। তাঁদের আবার ভারতবাসীর জন্য ফসল ফলাতে দিন। আমরা আবার অবিলম্বে এই আইন প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি। কেন্দ্রীয় সরকার ঔদ্ধত্য ত্যাগ করে সংযুক্ত কিসান মোর্চার সঙ্গে যত দ্রুত সম্ভব কথাবার্তা শুরু করুক’।
বিরোধীদের বক্তব্য, মোদী সরকার কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় সম্পূর্ণ ব্যর্থ। গোটা বিশ্বে নরেন্দ্র মোদীর সমালোচনায় মুখর। ঠিক এই সময় ভারতের কৃষক আন্দোলন ছ’মাস পূর্ণ করছে। এই অতিমারির সময় তাঁরা যেমন আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন, তেমনই অসুস্থদের পরিষেবার জন্য অবস্থানস্থলে অক্সিজেন পার্লার চালিয়ে মানুষের চিকিৎসার ব্যবস্থাও করছেন। গত ছ’মাস রাস্তায় খোলা আকাশের নীচে কাটানো তাঁদের জীবন বিপর্যস্ত।
কৃষক আন্দোলনের জেরে রাজ্যের গ্রামাঞ্চলে করোনার বাড়বাড়ন্ত অভিযোগ হরিয়ানার বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকারের। পঞ্জাবের গ্রামে করোনা সংক্রমণের জন্যও কৃষক আন্দোলনকে দায়ী করেছে কেন্দ্র। ওই অভিযোগ উড়িয়ে কৃষক নেতৃত্বের দাবি, করোনার সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার জন্য দায়ী নরেন্দ্র মোদী সরকার।
কেন্দ্রের তিনটি কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে ৪০টিরও বেশি কৃষক সংগঠন যুক্ত হয়ে সংযুক্ত কিসান মোর্চা (এসকেএম) হিসেবে কেন্দ্রের উপর লাগাতার চাপ বজায় রেখেছে। ২০১৪ সালের নরেন্দ্র মোদী ২৬ মে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে প্রথমবার শপথ গ্রহণ করেছিলেন। কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগঠনগুলিও সংযুক্ত কিসান মোর্চার আগামী ২৬ তারিখ প্রতিবাদ দিবসের আহ্বানকে সমর্থন জানিয়েছে। আমজনতার কাছে মোর্চার নেতা বলবীর সিংহ রাজওয়ালের আবেদন, আগামী ২৬ মে বাড়িতে, গাড়িতে, দোকানে কালো পতাকা লাগিয়ে ‘কালা দিবস’ পালন করুন।
হরিয়ানায় করোনা রুখতে জারি হওয়া লকডাউনকে উপেক্ষা করে আজ কার্নেল থেকে কয়েক হাজার কৃষক দিল্লি সীমানার দিকে রওনা হয়েছেন। ভারত কিসান ইউনিয়ন (বিকেইউ)-এর নেতৃত্বে বস্তরা টোল প্লাজা থেকে কৃষকেরা কয়েকশো গাড়ি করে দিল্লির দিকে রওনা হয়েছেন। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, দিল্লিমুখী কৃষকদের উৎসাহ ছিল নজরে পড়ার মতো। কিন্তু টোল প্লাজায় কৃষক জমায়েতে করোনা-বিধি কার্যত শিকেয় উঠেছিল। অনেকের মুখেই মাস্ক দেখা যায়নি, অনেককে আবার মাস্ক নামিয়ে স্লোগান দিতে দেখা গিয়েছে। বিকেইউ নেতৃত্ব জানিয়েছেন, পঞ্জাবের সঙ্গরুর থেকে কৃষকেরা দিল্লির টিকরি সীমানার উদ্দেশে আজ রওনা হয়েছেন।