বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। —ফাইল চিত্র।
নরেন্দ্র মোদীর ওবিসি-অস্ত্রেই নরেন্দ্র মোদীকে টেক্কা দিতে চাইছে বিরোধী শিবির।
২৩ জুন পটনায় বিরোধী শিবিরের বৈঠকের প্রস্তুতি-পর্বে এখন বিরোধী শিবির কী ভাবে বিজেপির থেকে ওবিসি ভোট টেনে আনতে পারে, তা নিয়ে আলাপ-আলোচনা চলছে। রাজনৈতিক সূত্রের খবর, পটনার বিরোধীদের বৈঠকের পরে সব দল মিলে নতুন করে জাতিগণনার দাবি তুলতে পারে। বিরোধী শিবিরের পক্ষ থেকে বিজেপির বিরুদ্ধে যত বেশি সম্ভব ওবিসি বা অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির প্রার্থী দেওয়ার কৌশল নিয়েও আলোচনা হবে।
নরেন্দ্র মোদীর জমানায় বিজেপি উত্তরপ্রদেশ, বিহারের মতো হিন্দি বলয়ে এসপি, আরজেডি-র মতো দলের ওবিসি ভোটব্যাঙ্কে ভাগ বসিয়েছে। প্রথমে যাদব ছাড়া অন্যান্য ওবিসি ভোট নিজের ঝুলিতে টানার পরে বিজেপি এখন যাদব ভোটেও ভাগ বসাচ্ছে। নরেন্দ্র মোদীর নিজের ওবিসি পরিচিতিকেও সুকৌশলে কাজে লাগানো হয়েছে। রাহুল গান্ধী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে কটূক্তি করে গোটা ওবিসি সমাজকে অপমান করেছেন বলেও বিজেপি অভিযোগ তুলেছিল। হালফিলে বিজেপি আবার অভিযোগ তুলছে, পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, পঞ্জাব, রাজস্থানের মতো বিরোধী শাসিত রাজ্যে ওবিসি-দের সঙ্গে বৈষম্য করা হচ্ছে।
পাল্টা কৌশলে বিরোধীদের দাবি, মোদী সরকার জনগণনার সঙ্গেই জাতিগণনা করুক। বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার নিজের রাজ্যে জাতিগণনার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাঁর আতিথ্যে বিরোধী দলের শীর্ষ নেতানেত্রীদের বৈঠক থেকেজাতীয় স্তরেও একই জাতিগণনার দাবি তোলা হবে।
বিরোধী শিবিবের বক্তব্য, সাধারণত ওবিসি-রা জনসংখ্যার ছোট অংশ বলে মনে করা হলেও বাস্তবে তাঁরাই সংখ্যাগুরু। মণ্ডল কমিশনের রিপোর্টেই বলা ছিল, ওবিসি-দের সংখ্যা দেশের জনসংখ্যার ৫২ শতাংশ। ২০০৬-এ সরকারি সমীক্ষায় বলা হয়েছিল, ওবিসিদের সংখ্যা ৪১ শতাংশ। কিন্তু জাতিগণনায় তা উঠে এলে সেই অনুপাতে ওবিসি-রা আরও বেশি সংরক্ষণের দাবি তুলবেন। জেনারেল ক্যাটেগরি বা উচ্চবর্ণ তা মানবে না। ফলে উচ্চবর্ণ ও ওবিসি, দুই ভোটব্যাঙ্ক নিয়েই বিজেপি চাপে পড়বে।
বিরোধী শিবিরের সূত্রের বক্তব্য, গত এপ্রিলে ডিএমকে প্রধান এম কে স্ট্যালিনের আয়োজনে সামাজিক ন্যায় নিয়ে বৈঠকেও সব দল জাতিগণনার পক্ষে সওয়াল করেছিল। পশ্চিমবঙ্গে জাতপাতের রাজনীতি তেমন গুরুত্ত্বপূর্ণ না হলেও তৃণমূলের অবস্থান ছিল, সব বিরোধী দল চাইলে তৃণমূলও জাতিগণনার পক্ষে। পটনার বৈঠকে সেই দাবিতেই বিরোধী ঐক্যের সিলমোহর পড়বে।