Opposition

Central Government: তালিবান নিয়ে অবস্থান কী, প্রশ্ন বিরোধীদের

তালিবান নেতা শের মহম্মদ আব্বাস স্তানিকজ়াইয়ের সঙ্গে কাতারে ভারতের রাষ্ট্রদূত দীপক মিত্তলের বৈঠক হয় গত কাল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৭:০০
Share:

ফাইল চিত্র।

প্রকাশ্যে শেষ বার ভারত সরকারের সঙ্গে তালিবানের বৈঠক হয়েছিল ২২ বছর আগে। আফগানিস্তানের কন্দহর বিমানবন্দরে, ১৯৯৯ সালের ডিসেম্বরে। ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্সের আইসি-৮১৪ বিমান অপহরণের পরে বিমানযাত্রী, কর্মীদের নিরাপদে ফেরাতে বাজপেয়ী সরকার জইশ-ই-মহম্মদের প্রধান মাসুদ আজহারকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। কন্দহর বিমানবন্দরেই তৎকালীন বিদেশমন্ত্রী যশোবন্ত সিংহর সঙ্গে তালিবান সরকারের বিদেশমন্ত্রী ওয়াকিল আহমেদ মুত্তাওয়াকিলের বৈঠক হয়।

Advertisement

তালিবান নেতা শের মহম্মদ আব্বাস স্তানিকজ়াইয়ের সঙ্গে কাতারে ভারতের রাষ্ট্রদূত দীপক মিত্তলের বৈঠক হয় গত কাল। মোদী সরকারের এই কূটনৈতিক পদক্ষেপ নিয়ে আজ বিরোধী শিবির থেকে প্রশ্ন উঠল, ভারত কি তালিবান সম্পর্কে অবস্থান বদলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে? প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী অতীতে বলেছেন, ‘‘ভাল তালিবান, খারাপ তালিবান বলে কিছু হয় না। হয় তুমি সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে, নয় সন্ত্রাসবাদের পক্ষে। এর মাঝামাঝি কিছু নেই।’’ এ বার তালিবানের সঙ্গে বৈঠকের পর বিরোধীদের প্রশ্ন, মোদী সরকার কি আর তালিবানকে সন্ত্রাসবাদী বলে মনে করছে না? কংগ্রেস নেতারা চিন, পাকিস্তান ও তালিবান নিয়ন্ত্রিত আফগানিস্তানের সম্ভাব্য অক্ষ নিয়েও মোদী সরকারকে সতর্ক করেছেন। আফগান পরিস্থিতি নিয়ে মোদী আজ সন্ধ্যায় তিন ঘণ্টা অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠক করেন।

জম্মু-কাশ্মীরের ন্যাশনাল কনফারেন্সের নেতা ওমর আবদুল্লার বক্তব্য, ‘‘তালিবান হয় সন্ত্রাসবাদী সংগঠন, নচেৎ নয়। সরকার স্পষ্ট করুক, আমরা তালিবানকে কী চোখে দেখছি।’’ মোদী সরকারের উদ্দেশে তাঁর প্রশ্ন, ‘‘যদি ওরা সন্ত্রাসবাদী সংগঠন হয়, তা হলে কেন ওদের সঙ্গে কথা বলছেন? যদি সন্ত্রাসবাদী সংগঠন না হয়, তা হলে আপনারা কি রাষ্ট্রপুঞ্জে গিয়ে ওদের সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের তালিকা থেকে বাদ দিতে বলবেন? এ বিষয়ে মনস্থির করতে হবে।’’

Advertisement

তালিবানকে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রশ্নে ভারত এত দিন অন্য দেশের সঙ্গে আলোচনা করে এগোনোর কথাই বলে এসেছে। সোমবার ভারতের সভাপতিত্বেই রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবে তালিবানকেই আহ্বান জানানো হয়েছে, আফগানিস্তানের মাটিতে সন্ত্রাসবাদে যেন মদত দেওয়া না হয়। যা তালিবানকে কার্যত স্বীকৃতি দেওয়াই বলে মনে করছেন কূটনীতিকরা। আর ভারত দাবি করছে, সন্ত্রাসবাদের প্রশ্নে তাদের উদ্বেগের বিষয়গুলি নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবে জায়গা পেয়েছে।

কংগ্রেস নেতা, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পি চিদম্বরম বলেন, ‘‘সরকার নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব নিয়ে নিজেই নিজেকে অভিনন্দন জানাচ্ছে। কিন্তু এই প্রস্তাবের দু’টি অর্থ হতে পারে। এক, গোটা বিষয়টির সমাধান হয়ে গিয়েছে এবং তাতে ভারত সন্তুষ্ট। কিন্তু নিরাপত্তা পরিষদে তা হয়নি। দুই, আমরা নিজেদের ইচ্ছে প্রকাশ করেছি এই প্রস্তাবে। অন্যরা তাতে সই করেছে। নিরাপত্তা পরিষদে শুধু সেটাই হয়েছে। এখনই নিজের পিঠ চাপড়ানোর সময় আসেনি।’’

চিদম্বরম মনে করিয়ে দিয়েছেন, চিন, পাকিস্তান ও তালিবান নিয়ন্ত্রিত আফগানিস্তানের সম্ভাব্য অক্ষ ভারতের কাছে চিন্তার বিষয়। কূটনীতিকরাও বলেছেন, তালিবানের নেতারা ভারতকে ইতিবাচক বার্তা দিলেও তাদের বিশ্বাস করার সময় এখনও আসেনি। কারণ, তালিবান সরকারের চেহারা কেমন হবে, , কাদের নিয়ন্ত্রণ থাকবে— কিছুই স্পষ্ট নয়। কন্দহর-কাণ্ডের পরে মাসুদ আজহার ও তার সঙ্গীদের তালিবান জঙ্গিরাই পাহারা দিয়ে পাকিস্তানে পৌঁছে দিয়েছিল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement