ছবি: পিটিআই।
ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সরিয়ে হোয়াইট হাউস দখল করলেন ডেমোক্র্যাট জো বাইডেন। আর আমেরিকায় এই পটপরিবর্তনকে কেন্দ্র করে ভারতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নিশানা করতে নেমে পড়ল বিরোধী শিবির।
এক বছর আগে হিউস্টনের ‘হাউডি মোদী’ সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী মোদীর ‘অব কী বার, ট্রাম্প সরকার’ মন্তব্য নিয়ে সে সময়েই বিরোধী শিবির প্রশ্ন তুলেছিল। এ বার হোয়াইট হাউসের লড়াইয়ের নিষ্পত্তি হওয়ার পর সেই পুরনো হাতিয়ারে শান দেওয়া হচ্ছে নতুন করে। রাতেই বাইডেনকে অভিনন্দন জানিয়ে কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধীর টুইট, ‘বাইডেন নিশ্চয় আমেরিকাকে নতুন দিশা দেখাবেন।’’ নয়া ভাইস প্রেসিেডন্ট ভারতীয় বংশোদ্ভূত কমলা হ্যারিসকেও অভিনন্দন জানান রাহুল।
কংগ্রেসে সনিয়া গাঁধীর সাহায্যে তৈরি কমিটির এক সদস্য বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ‘অব কী বার, ট্রাম্প সরকার’ বলে কার্যত ট্রাম্পের ভোটের প্রচার করে এসেছিলেন। কোনও দেশের রাষ্ট্রনেতাই অন্য দেশের নির্বাচনে কোনও একটি পক্ষ নেন না। এটা কূটনীতির অ, আ, ক, খ। মোদী সেই ভুলটাই করেছিলেন।’’
২০১৯-এ দ্বিতীয় বার প্রধানমন্ত্রীর গদিতে ফেরার পর সেপ্টেম্বরে আমেরিকা সফরে যান মোদী। ‘হাউডি মোদী’ সমাবেশে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও হাজির ছিলেন। সেখানেই মোদী ট্রাম্পের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করে বলেছিলেন, ‘‘ভারতে আমাদের সঙ্গে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে খুব ভাল যোগাযোগ তৈরি হয়েছে এবং প্রার্থী ট্রাম্পের ‘অব কী বার, ট্রাম্প সরকার’ ভাল ভাবেই প্রতিধ্বনিত হয়েছে।’’
মোদীর এই মন্তব্যের পরেই কংগ্রেস-সহ বিরোধী নেতারা তাঁর সমালোচনায় মুখর হয়েছিলেন। তাঁদের অভিযোগ ছিল, নরেন্দ্র মোদী কার্যত ভারতীয় বংশোদ্ভূত আমেরিকানদের মধ্যে ট্রাম্পের হয়ে প্রচার করেছেন। অন্য দেশের নির্বাচনে নাক গলিয়ে ভারতের বিদেশনীতির বিরুদ্ধে গিয়েছেন। এটা ভারতের দীর্ঘমেয়াদী কূটনৈতিক স্বার্থের পরিপন্থী। প্রশ্নের মুখে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে বলতে হয়েছিল, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। ট্রাম্প নিজে ‘অব কী বার, ট্রাম্প সরকার’ স্লোগান ব্যবহার করেছেন। প্রধানমন্ত্রী সেটাই বলেছিলেন।’’
কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধী তখনই বলেছিলেন, ‘‘বিদেশমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর ‘অপদার্থতা’ আড়ালের চেষ্টা করছেন। কারণ, ট্রাম্পকে সমর্থন করায় ভারতের সঙ্গে ডেমোক্র্যাটদের সমস্যা হবে। প্রধানমন্ত্রীকে কূটনীতিতেও শিক্ষা দিতে হবে জয়শঙ্করকে।’’ এ বার সেই ডেমোক্র্যাট প্রার্থী বাইডেন জয়ী হওয়ায় ফের এই প্রশ্নে মোদীকে নিশানা করার সুযোগ মিলল বলে বিরোধী নেতাদের মত।
মোদী সরকার সরাসরি এখনই এ নিয়ে মন্তব্য করতে না চাইলেও বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র কাল দাবি করেছেন, ভারতের সঙ্গে বোঝাপড়ায় আমেরিকার দু’দলেরই জোরালো সমর্থন রয়েছে।