সংসদে বিক্ষোভের মুখে অনুরাগ ঠাকুর।
নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) নিয়ে দেশ জুড়ে বিক্ষোভের আঁচ গনগনে। তাতে ঘি ঢেলেছে জামিয়া মিলিয়া ও শাহিনবাগে পর পর গুলি চালানোর ঘটনা। আর সে সব ঘটনাক্রমকে হাতিয়ার করেই সোমবার সংসদে বিক্ষোভে ফেটে পড়লেন বিরোধী সাংসদরা। উস্কানিমূলক মন্তব্য করার অভিযোগ তুলে অর্থ প্রতিমন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুরের সামনেই এ দিন স্লোগান দিতে থাকেন তাঁরা। ওয়াকআউটও করেন বিরোধীরা।
সিএএ বিরোধী বিক্ষোভে গুলি চালানোর ঘটনাকে ঘিরে এ দিন ক্ষণে ক্ষণে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে সংসদের বাজেট অধিবেশন। এ দিন কেন্দ্রীয় অর্থ প্রতিমন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর বলতে উঠলে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন বিরোধী সাংসদরা। তাঁরা স্লোগান দেন ‘গোলি মারনা বন্ধ করো।’ অন্তত ৩০ জন সাংসদ প্ল্যাকার্ড হাতে ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। স্লোগান দেন, ‘শেম, শেম’।
একই পরিস্থিতির মুখে পড়েন বিজেপি সাংসদ পারবেশ সাহিব সিংহ বর্মাও। রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের ভাষণের ধন্যবাদ সূচক প্রস্তাব আনতে বলা হয়েছিল। তাঁর বিরুদ্ধেও উস্কানিমূলক মন্তব্য করার অভিযোগ তুলে হইহট্টগোল শুরু করেন বিরোধী সাংসদরা। শেষ পর্যন্ত ওয়াকআউট করেন তাঁরা।
আরও পড়ুন: জম্মুতে ভেঙে পড়ল সেনাবাহিনীর চপার, নিরাপদে ২ পাইলট
সিএএ-এর প্রতিবাদে দেশ জুড়ে বিক্ষোভ চলছে। সেই স্রোতের অংশ হয়ে উঠেছে দিল্লির জামিয়া মিলিয়া বা শাহিনবাগও। বিতর্কিত ওই আইন নিয়ে এক দিকে যখন বিক্ষোভ-প্রতিবাদ চলছে। ঠিক তখনই দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনের মুখে চলমান সেই বিক্ষোভই এখন পুঁজি হয়ে উঠেছে শাসক-বিরোধী উভয়েরই। দিল্লিকে টার্গেট করে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন বিজেপির নেতা-মন্ত্রীরাও। সেখানকার বিজেপি প্রার্থী মণীশ চৌধরির হয়ে নির্বাচনী প্রচারে যান কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর। স্লোগান দেওয়ার সময় সমর্থকদের উদ্দেশে তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘দেশ কে গদ্দারোঁকো... গোলি মারো’ (দেশের বিশ্বাসঘাতকদের গুলি করো)। স্লোগানের শেষাংশ অবশ্য পূরণ করছিলেন বিজেপি কর্মী সমর্থকরা।
আরও পড়ুন: শাহিন বাগ বিতর্ক তুঙ্গে তুলছে বিজেপি, কেজরীবাল কি শাঁখের করাতে?
এর পর পরই জামিয়া মিলিয়ার বিক্ষোভে প্রথমে গুলি চলে। তার পর গুলি চলে শাহিন বাগেও। রবিবার রাতে ফের গুলি চলে জামিয়া মিলিয়ায়। এ নিয়ে বিজেপি নেতা-মন্ত্রীদের উস্কানিমূলক মন্তব্যকেই দায়ী করছে বিরোধীরা। সিএএ ও গুলি-কাণ্ডে তুমুল হইচইয়ের জেরে এ দিনের মতো মুলতুবি হয়ে যায় রাজ্যসভার অধিবেশনও।
আরও পড়ুন: ভারতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত তৃতীয় জন, পর্যবেক্ষণে প্রায় ১৭০০
উস্কানিমূলক মন্তব্যের জেরে নির্বাচন কমিশনের রোষে পড়েছিলেন অনুরাগ ঠাকুর ও সাহিব সিংহ ভার্মা। কোপ পড়ে তাঁদের প্রচারেও। গত বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশন জানিয়ে দেয়, তাঁরা যথাক্রমে ৭২ ঘণ্টা ও ৯৬ ঘণ্টা প্রচারে যেতে পারবেন না।