মূল্যবৃদ্ধির চড়া হার এবং প্যাকেটবন্দি খাদ্যপণ্যে নতুন করে জিএসটি চাপানোর প্রতিবাদে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী-সহ বিরোধী সাংসদেরা। পিটিআই
এমনিতেই মূল্যবৃদ্ধির আঁচ। তার উপরে প্যাকেটবন্দি চাল, ডাল, আটা, মুড়ি, দুধ, দই, পনিরেও জিএসটি। এই নিয়ে বিরোধীদের প্রতিবাদের জেরে টানা দু’দিন সংসদের অধিবেশন বন্ধ। রাহুল গান্ধীর সঙ্গে সমালোচনা করছেন বিজেপির বরুণ গান্ধীও।
চাপের মুখে কোভিডে আক্রান্ত কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন আজ ১৫টি টুইট করে দাবি করলেন, ‘ভুল ধারণা’ ছড়ানো হচ্ছে। অর্থমন্ত্রীর যুক্তি, কর ফাঁকি রুখতে শুধুমাত্র প্যাকেটবন্দি খাদ্যপণ্যেই ৫ শতাংশ জিএসটি চাপানো হয়েছে। বিরোধীরা এর গোটা দায় কেন্দ্রের উপরে চাপিয়ে দিচ্ছে বলে সীতারামন যুক্তি দিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গ, ছত্তীসগঢ়, রাজস্থান, পঞ্জাব, তামিলনাড়ু, অন্ধ্র, তেলঙ্গানা, কেরলের মতো অ-বিজেপি শাসিত রাজ্যের অর্থমন্ত্রীও এই সিদ্ধান্তে সায় দিয়েছেন। জিএসটি পরিষদে সব রাজ্যের অর্থমন্ত্রীদের উপস্থিতিতে ঐকমত্যের ভিত্তিতেই এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। কেউ একা এই সিদ্ধান্ত নেয়নি। অফিসারদের যে কমিটি আলোচনা করে এই সুপারিশ করেছে, তাতে পশ্চিমবঙ্গ, রাজস্থান, তামিলনাড়ুর মতো বিরোধী শাসিত রাজ্যের অফিসাররাও ছিলেন। তার পরে যে মন্ত্রিগোষ্ঠী এই রদবদলের সুপারিশ করেছে, কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে সেই মন্ত্রিগোষ্ঠীতে পশ্চিমবঙ্গ, রাজস্থান, কেরল, উত্তরপ্রদেশ, গোয়া, বিহারের অর্থমন্ত্রীরা ছিলেন।
মূল্যবৃদ্ধি ও খাদ্যপণ্যে জিএসটি চাপানোর বিরুদ্ধে সোমবার সংসদের বাদল অধিবেশনের প্রথম দিনেই হট্টগোল হয়েছিল। লোকসভা, রাজ্যসভা, কোথাও কাজ হয়নি। মঙ্গলবারও দুই কক্ষই কয়েক মিনিট চলে বন্ধ হয়ে যায়। বিরোধীরা মূল্যবৃদ্ধি, জিএসটি নিয়ে আলোচনা চাইলেও সরকার তাতে রাজি হয়নি। কেন মোদী সরকার মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে আলোচনা করতে নারাজ, তা নিয়ে বিরোধীরা প্রশ্ন তোলেন। অধিবেশনের আগে গান্ধীমূর্তির সামনে কংগ্রেস, এনসিপি, শিবসেনা, এসপি সাংসদেরা বিক্ষোভ দেখান, তাতে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীও হাজির ছিলেন। আগামিকালও গান্ধীমূর্তির সামনে কংগ্রেস ও অন্য কিছু বিরোধী দল মূল্যবৃদ্ধি ও জিএসটি নিয়ে বিক্ষোভ দেখাবে। খাদ্যপণ্যে জিএসটি চাপানোর জন্য ‘অব কি বার, তোলাবাজ সরকার’ বলে নিশানা করে রাহুল আজ বলেন, ‘‘রোজকার খাবারদাবার থেকে জিএসটি উসুল করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বিরোধী আসনে থাকার সময় মূল্যবৃদ্ধিকে বড় হাতিয়ার করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী যত খুশি শব্দকে ‘অসংসদীয়’ তকমা দিয়ে আমাদের চুপ করানোর চেষ্টা করুন, ওঁকে জবাব দিতেই হবে।’’ সংসদের ভিতরে বিরোধীরা স্লোগান তুলে, হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে দাবি জানান, প্রধানমন্ত্রীকে সংসদে এসে মূল্যবৃদ্ধি, জিএসটি নিয়ে জবাবদিহি করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী নিজে জবাব না দিলেও তাঁর অর্থমন্ত্রী খাদ্যপণ্যে জিএসটি উসুল করার অভিযোগের জবাবে বলেছেন, ‘‘এ কি প্রথম বার যে এই ধরনের খাদ্যপণ্যে কর উসুল করা হচ্ছে? না। জিএসটি চালু হওয়ার আগেও রাজ্যগুলি খাদ্যশস্য থেকে যথেষ্ট কর আদায় করেছে। পঞ্জাব একাই বিক্রয়করের নামে ২ হাজার কোটি টাকা আদায় করেছে।