Congress

হেগড়েকে আড়াল করতেই তৎপরতা

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, ওই ‘অপশব্দ’ এবং ‘নকল গাঁধী’ বিতর্ক দিয়ে হেগড়ের মন্তব্য আড়াল করতে চাইছে বিজেপি।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৫:২৪
Share:

সংসদে অধীর চৌধুরী। ছবি: পিটিআই।

মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধী সম্পর্কে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বিজেপি সাংসদ অনন্তকুমার হেগড়ের বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে আজ উত্তাল হল লোকসভা। তপ্ত অধিবেশন কক্ষ থেকে উঠল নতুন বিতর্ক। হেগড়েকে আক্রমণ করতে গিয়ে ‘অপশব্দ’ ব্যবহার করে লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরী বললেন, ‘‘এক জন রামভক্তকে অপমান করেছেন।’’ স্পিকার অবশ্য সেই ‘অপশব্দ’টি রেকর্ড থেকে বাদ দেন। সংসদ বিষয়কমন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশীর পাল্টা, ‘‘আমরাই (বিজেপি) প্রকৃত গাঁধীর অনুগামী। এই সব লোকজন সনিয়া ও রাহুল গাঁধীর মতো ‘নকল গাঁধী’র অনুগামী।’’

Advertisement

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, ওই ‘অপশব্দ’ এবং ‘নকল গাঁধী’ বিতর্ক দিয়ে হেগড়ের মন্তব্য আড়াল করতে চাইছে বিজেপি। যেমন করা হয়েছিল সাধ্বী প্রজ্ঞার ক্ষেত্রে। প্রতি মঙ্গলবার বিজেপির সংসদীয় দলের বৈঠক হয়। আজ বৈঠক থেকেই বিজেপি সভাপতি জে পি নড্ডা কর্নাটকের দলীয় সভাপতি নীলম কুমার কাটিলকে পাঠান হেগড়ের বাড়িতে। সেখানে তিনি হেগড়ের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করেন বলে দাবি কাটিলের। গত শনিবার বেঙ্গালুরুতে একটি অনুষ্ঠানে স্বাধীনতা সংগ্রামে গাঁধীর ভূমিকাকে ‘নাটক’ বলেছিলেন কর্নাটকের এই বিজেপি সাংসদ।

লোকসভা ভোটপর্বে প্রজ্ঞা বলেছিলেন, নাথুরাম গডসে দেশপ্রেমিক। যা নিয়ে প্রকাশ্যেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। পরবর্তী সময়ে মোদীর পাশে বসে তৎকালীন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ জানিয়েছিলেন, ১০ দিনের মধ্যে প্রজ্ঞার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু প্রায় ১০ মাস হতে চললেও কোনও ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি। প্রজ্ঞা গত অধিবেশনেও গডসেকে ‘দেশপ্রেমিক’ বলেছিলেন বলে অভিযোগ বিরোধীদের। তখন বিজেপি বলেছিল, মঙ্গলবারের সংসদীয় দলের বৈঠকে প্রজ্ঞা হাজির থাকতে পারবেন না। সেই ‘নামমাত্র’ শাস্তি অবশ্য এই অধিবেশনে উঠে গিয়েছে। আজ ওই বৈঠকে হাজির ছিলেন প্রজ্ঞা।

Advertisement

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, হেগড়ের ক্ষেত্রেও প্রজ্ঞা-কৌশলকে অবলম্বন করেছে বিজেপি। প্রজ্ঞার মতোই হেগড়েও আজ বলেছেন, ‘‘সংবাদমাধ্যমে আমার মুখে যা বসানো হয়েছে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যে। গাঁধী বা কোনও দলের কথা বলিনি। আমি যদি গাঁধী বা নেহরুর কথা বলে থাকি, তা হলে দেখানো হোক। মন্তব্য থেকে সরছি না।’’ শো-কজ়ের জবাবও শৃঙ্খলারক্ষা কমিটিতে পাঠিয়েছেন হেগড়ে। ওই কমিটি কোনও ব্যবস্থা নেবে কি না তা নিয়ে সন্দিহান বিরোধীরা। হেগড়েকে বাঁচাতে বিজেপি এত সক্রিয় কেন? অনেকের মতে, গাঁধীকে কংগ্রেসের থেকে কেড়ে নিতে চান মোদী। সেই গাঁধী সম্পর্কে ‘আপত্তিকর’ মন্তব্য জনমানসে যেন প্রভাব না-ফেলে সেটাই লক্ষ্য বিজেপির।

প্রধানমন্ত্রীর গাঁধী-প্রেমে অস্বস্তিতে কংগ্রেসও। তাই পড়ে পাওয়া চোদ্দ আনার মতোই হেগড়ের মন্তব্যকে লুফে নিয়েছে সনিয়া গাঁধীর দল। আজ লোকসভার অধিবেশন শুরু হতেই কংগ্রেস-সহ কয়েকটি বিরোধী দলের সদস্যেরা হেগড়ের বিতর্কিত মন্তব্য নিয়ে সরব হন। তাঁরা ওয়েলে নেমে স্লোগান দিতে থাকেন। ফলে স্পিকার সভা ১২টা পর্যন্ত মুলতুবি করে দেন। সভায় অধীরের অভিযোগ, গাঁধীকে বিশ্বের মানুষ সম্মান করেন, এঁরা (বিজেপি) অপমান করছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement