ফারুক আবদুল্লা। —ফাইল চিত্র
তিন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী-সহ জম্মু ও কাশ্মীরের রাজনৈতিক নেতাদের অবিলম্বে মুক্তির দাবিতে সরব হলেন তামাম বিরোধী শিবিরের নেতৃত্ব। বাংলায় যুযুধান হলেও মোদী সরকারের বিরোধিতায় যৌথ বিবৃতিতে একই সঙ্গে সই করেছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। এনসিপি সভাপতি শরদ পওয়ার ও প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এইচ ডি দেবগৌড়া-সহ ৮ জন বিরোধী নেতার নাম রয়েছে বিবৃতিতে। বিরোধী শিবিরের এমন পদক্ষেপে কেন কংগ্রেসের অংশগ্রহণ নেই, তা নিয়ে অবশ্য প্রশ্ন উঠেছে।
বিরোধী নেতাদের নামে জারি করা সোমবারের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘গণতান্ত্রিক রীতি-নীতি, মৌলিক অধিকার এবং নাগরিকদের স্বাধীনতার উপরে আক্রমণ প্রতিনিয়ত বাড়ছে। তার ফলস্বরূপ, ভিন্নমতের কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে। শুধু তা-ই নয়, সমালোচনার যে কোনও পথকেই বন্ধ করার জন্য সঙ্ঘবদ্ধ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে’। জম্মু ও কাশ্মীরের তিন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লা, ওমর আবদুল্লা ও মেহবুবা মুফতিকে সাত মাসেরও বেশি সময় আটক রাখার ঘটনাতেই দেশের এই পরিস্থিতি অত্যন্ত স্পষ্ট বলে বিরোধী নেতাদের মত। অত্যন্ত দুর্বল যুক্তি দেখিয়ে তিন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে আটক রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ করে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘জনজীবনের নিরাপত্তার প্রতি ওঁরা কোনও বিপদের কারণ হয়েছেন বা তাঁদের কাজকর্মে জাতীয় স্বার্থ ক্ষুণ্ণ হয়েছে— মোদী সরকারের এই অসত্য ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত দাবি ধোপে টেকে না। ওঁদের রাজনৈতিক জীবনের অতীত রেকর্ড থেকেই তা বোঝা যায়’।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ গত ৫ অগস্ট সংসদে দাঁড়িয়ে কাশ্মীরে ৩৭০ অনুচ্ছেদ প্রত্যাহার করার ঘোষণা করেছিলেন। তার পর থেকেই অন্তরীণ রাখা হয়েছে ফারুক, ওমর, মেহবুবা-সহ রাজনৈতিক নেতাদের। পওয়ার, মমতা, দেবগৌড়া, ইয়েচুরি, সিপিআইয়ের সাধারণ সম্পাদক ডি রাজা, আরজেডি-র মনোজ কুমার ঝা এবং বিজেপির দুই প্রাক্তন নেতা যশবন্ত সিন্হা ও অরুণ শৌরি যৌথ ভাবে বিবৃতি দিয়ে কাশ্মীরে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফেরানোর দাবি তুলেছেন।
আরও পড়ুন: জনতা বলছে, যুদ্ধ চাই না
প্রশ্ন উঠছে, এমন উদ্যোগে কংগ্রেস নেই কেন? সূত্রের খবর, কাশ্মীরের জন্য সুর চড়ানোর এই তৎপরতা শুরু হয়েছিল সুধীন্দ্র কুলকার্নির উদ্যোগে। কংগ্রেসকেও তাঁরা বিষয়টি জানিয়েছিলেন। চেষ্টা হয়েছিল যাতে, যৌথ বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারী প্রথম নামটি প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের হয়। কিন্তু কংগ্রেসের তরফে গড়িমসি দেখে বাকি বিরোধী নেতারা আর অপেক্ষা করেননি। কাশ্মীরে কিছু রাজনৈতিক তৎপরতাও শুরু হয়েছে। প্রথমে ঠিক ছিল, বিরোধীরা আগামী সপ্তাহে বিবৃতি দেবে। কিন্তু পরিস্থিতি বিচার করে পওয়ারেরা এ দিনই বিবৃতি জারি করে দিয়েছেন। পওয়ারের মন্তব্য, ‘‘অনেক দিন হয়েছে। কাশ্মীরের সব রাজনৈতিক বন্দি, বিশেষত তিন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর আমরা অবিলম্বে মুক্তি দাবি করছি।’’