প্রতীকী ছবি।
করোনা মোকাবিলার ওষুধ, সরঞ্জাম ও প্রতিষেধকে জিএসটির হার শূন্যে নামিয়ে আনার দাবিতে বিরোধীরা সরব হলেও জিএসটি পরিষদের বৈঠকে তার তোয়াক্কা করেনি কেন্দ্র। রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রের অভিযোগ, বৈঠকে বলতে চাইলেও সেই সুযোগ দেওয়া হয়নি তাঁকে। কেন্দ্র বিষয়টিকে প্রযুক্তিগত ত্রুটি বলে দাবি করলেও একে কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্ক এবং গণতান্ত্রিক রীতিনীতির প্রতি সীমাহীন অবজ্ঞা হিসেবেই দেখছে বিরোধী শিবির।
একই সঙ্গে প্রশ্ন উঠছে, জিএসটি নিয়ে কোনও পক্ষের অভিযোগ থাকলে, তা মেটানোর জন্য শুরুতেই যে কমিটি তৈরির কথা ছিল, চার বছর পেরিয়েও তা গড়া হল না কেন? কেনই বা পরিষদের ভাইস চেয়ারপার্সনের পদ খালি? যেখানে সাধারণত থাকার কথা কোনও বিরোধীশাসিত রাজ্যের অর্থমন্ত্রীর। যাতে আলোচনায় বিরোধী মতও যথেষ্ট গুরুত্ব পায়। শনিবারের বৈঠক শেষ হওয়ার আগেই বেরিয়ে যাওয়ার পরে আজ, রবিবার কংগ্রেসশাসিত রাজ্যের অর্থমন্ত্রীরাও ভাইস চেয়ারপার্সন পদে নিয়োগ ও বিবাদ মীমাংসার ব্যবস্থার দাবিতে নতুন করে সরব হয়েছেন।
গতকাল জিএসটি পরিষদের ভিডিয়ো-বৈঠক ঘিরে তৈরি হওয়া বিতর্ক প্রসঙ্গে কেরলের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী টমাস আইজ়্যাকের টুইট, ‘‘অভাবনীয় যে, পশ্চিমবঙ্গের অর্থমন্ত্রীকে কণ্ঠরোধের অভিযোগ জানাতে হচ্ছে! সর্ব সমক্ষে জানাতে হচ্ছে যে, তাঁকে বলতে দেওয়া হয়নি, কমেন্ট মুছে দেওয়া হয়েছে, বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে মাইক্রোফোন।’’
তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়ের কথায়, ‘‘পরিষদের বৈঠকে যা ঘটেছে, তা চূড়ান্ত অপমানজনক। এর পরে বিরোধী রাজ্যগুলি এক জোট হয়ে ভাববে কী করণীয়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বিরোধী রাজ্যগুলির মধ্যে সমন্বয়ের মাধ্যমে পদক্ষেপের চেষ্টা করছি।’’ সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর কটাক্ষ, ‘‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে অনুসরণ করে পরিষদের বৈঠকও হয়ে দাঁড়িয়েছে ‘মন কি বাত’। শুধু নিজেরা বলবে। শুনতে প্রস্তুত নয়।’’ প্রাক্তন বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানও বলেন, ‘‘জিএসটি বৈঠকে বিরোধীদের তরফে ওঠা প্রস্তাব যুক্তিসঙ্গত। কিন্তু সেই দাবি মানা তো দূর অস্ত্, কেন্দ্র কোনও যুক্তির কথা শুনতেই রাজি নয়!’’
এই পরিস্থিতিতে আগামীকাল, সোমবার সাংবাদিক বৈঠক ডেকেছেন অমিত মিত্র। সেখানে তিনি এ বিষয়ে ফের সরব হন কি না কিংবা এ নিয়ে আগামী দিনে বিরোধী ঐক্যের পথ আরও প্রশস্ত হয় কি না, সে দিকেও এখন নজর থাকবে সকলের।