Narendra Modi

BJP: বেওয়ারিশ গরু নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছে উত্তরপ্রদেশে, ভোটের পর নয়া নীতি আনার কথা মোদীর মুখে

দু’মাস আগেই বারাণসীতে জনসভায় মোদী বলেছিলেন, ‘‘গরু নিয়ে কথা বলা অনেকের কাছে অপরাধ হতে পারে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৬:৪৯
Share:

ফাইল চিত্র।

গোরক্ষার নামে রাজনীতি করতে গিয়ে এখন উল্টো ফল টের পাচ্ছে বিজেপি।

Advertisement

উত্তরপ্রদেশের কৃষক, সাধারণ মানুষের কাছে বেওয়ারিশ গরু মাথা ব্যথার কারণ হয়ে উঠেছে দেখে রবিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে প্রতিশ্রুতি দিতে হয়েছে, ১০ মার্চ ভোটের ফলপ্রকাশের পরেই এই সমস্যার সমাধানে নতুন নীতি তৈরি হবে। যা দেখে বিরোধী শিবিরের প্রশ্ন, এত দিন ধরে কেন্দ্রে মোদী ও উত্তরপ্রদেশের যোগী সরকার তা হলে কী করছিল? কেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ দাবি করছিলেন, তিনি গোশালা তৈরি করে বেওয়ারিশ গরুর সমস্যার সমাধান করে ফেলেছেন?

দু’মাস আগেই বারাণসীতে জনসভায় মোদী বলেছিলেন, ‘‘গরু নিয়ে কথা বলা অনেকের কাছে অপরাধ হতে পারে। কিন্তু আমাদের কাছে গরু পবিত্র, মায়ের মতো।’’ কিন্তু উত্তরপ্রদেশের ভোট যত পশ্চিম উত্তরপ্রদেশ থেকে বুন্দেলখণ্ড, উত্তরপ্রদেশের মধ্যবর্তী এলাকার দিকে এগোচ্ছে, ততই বিজেপি নেতারা বেওয়ারিশ গরু নিয়ে কৃষকদের ক্ষোভ টের পাচ্ছেন। সমাজবাদী পার্টি, কংগ্রেস যে তার ফায়দা তোলার চেষ্টা করছে, তা-ও তাঁরা বুঝতে পারছেন। বিজেপি সূত্রের ব্যাখ্যা, এই কারণেই রবিবার উত্তরপ্রদেশের তৃতীয় দফার ভোটগ্রহণ চলাকালীন খোদ প্রধানমন্ত্রীকে সমস্যার সমাধানের আশ্বাস দিতে হয়েছে। কী ভাবে সমাধান হবে, তা অবশ্য প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট করে বলেননি। ইঙ্গিত দিয়েছেন, গরুর গোবর বেচা লাভজনক করে তোলা হবে।

Advertisement

যোগী সরকার ক্ষমতায় আসার পরেই উত্তরপ্রদেশে গোরক্ষা বাহিনীর তাণ্ডব বেড়ে যায়। গবাদি পশুর বাজার, জবাই কারখানা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। চাষের কাজে অক্ষম বা দুধ দিতে বন্ধ করে দেওয়া গরু নিয়ে চাষি, পশুপালকরা কী করবেন, বুঝতে পারছেন না। পশুখাদ্য জোগাড় করতে না পেরে তারা গরু-বলদ রাস্তায় ছেড়ে দিচ্ছেন। সেই বেওয়ারিশ গরুই আবার চাষের জমিতে ঢুকে ফসল নষ্ট করছে। বুন্দেলখণ্ডের মতো খরাপ্রবণ এলাকায় এই পরিস্থিতি আরও ভয়ঙ্কর।

কৃষি মন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১২-তে উত্তরপ্রদেশে বেওয়ারিশ পশুর সংখ্যা ছিল ১০ লক্ষ ৯ হাজার। ২০১৯-এ তা বেড়ে ১১ লক্ষ ৮৪ হাজারে পৌঁছেছে। বৃদ্ধির হার ১৭ শতাংশর বেশি। গোটা দেশে যত বেওয়ারিশ গরু-বলদ রয়েছে, তার পাঁচ ভাগের এক ভাগের বেশি রয়েছে উত্তরপ্রদেশে। সরকারি কর্তাদের ধারণা, এখন এই বেওয়ারির গরু-বলদের সংখ্যা ১২ লক্ষের বেশি। কোনও সরকারের পক্ষেই গোশালা খুলে এত গরু পালন করা সম্ভব নয়।

যোগী আদিত্যনাথের সরকারকে ‘বাবা, বুল ও বুলডোজারের সরকার’ বলে আখ্যা দিয়ে অখিলেশ যাদব প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তিনি সরকারে এলে বেওয়ারির গরুর হামলায় নিহতের পরিবার ৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ পাবে। কংগ্রেসও ফসলের ক্ষতিপূরণ দেওয়া ও চাষিদের থেকে ২ টাকা কিলো দরে গোবর কেনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধীও আজ বেওয়ারিশ গরু নিয়ে বিজেপি সরকারকে দুষে বলেছেন, ‘‘এক দিকে চাষিদের দেনা বাড়ছে, অন্য দিকে বেওয়ারিশ পশু তাদের ফসল নষ্ট করে যাচ্ছে।’’ কংগ্রেস নেত্রী সুপ্রিয়া শ্রীনতের প্রশ্ন, ‘‘মোদীজি ও যোগীজি আজ বেওয়ারিশ পশু নিয়ে চিন্তা প্রকাশ করছেন। তা হলে গত পাঁচ বছর উত্তরপ্রদেশে ও আট বছর দেশের ক্ষমতা কাদের হাতে ছিল?”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement