opposition alliance

বাম-কংগ্রেস, ডিএমকে বাদ! স্পষ্ট বিরোধী জোটে ফাটল

রাহুল গান্ধী শনিবারই লন্ডনে দাবি করেছিলেন, বিরোধী ঐক্য নিয়ে বিরাট ‘সারপ্রাইজ়’ (চমক) অপেক্ষা করছে। কিন্তু তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই বিরোধী শিবিরে ফাটল প্রকাশ্যে চলে এল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০২৩ ০৫:৫৬
Share:

রাহুল গান্ধী। ছবি: পিটিআই।

কংগ্রেস নেই। ডিএমকে নেই। নেই বামেরাও।

Advertisement

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখে আটটি বিরোধী দলের শীর্ষ নেতানেত্রীরা ‘বিরোধী দলের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে কাজে লাগানো’র অভিযোগ তুললেও সেই চিঠিতে কংগ্রেস, ডিএমকে বা বাম নেতাদের সই দেখা গেল না।

রাহুল গান্ধী শনিবারই লন্ডনে দাবি করেছিলেন, বিরোধী ঐক্য নিয়ে বিরাট ‘সারপ্রাইজ়’ (চমক) অপেক্ষা করছে। কিন্তু তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই বিরোধী শিবিরে ফাটল প্রকাশ্যে চলে এল। বিজেপির বিরুদ্ধে কংগ্রেস-সহ সমস্ত আঞ্চলিক দলের জোট যে এখনও সোনার পাথরবাটি, তা এই চিঠিতেই ফের প্রমাণ হয়ে গেল বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা মনে করছেন।

Advertisement

দিল্লির উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসৌদিয়াকে সিবিআইয়ের গ্রেফতারের নিন্দা করে আজ প্রধানমন্ত্রীকে পাঠানো চিঠিতে সই করেছেন আম আদমি পার্টির দুই মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়াল ও ভগবন্ত মান। চিঠিতে আরও দুই মুখ্যমন্ত্রী, তৃণমূলের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও ভারত রাষ্ট্র সমিতির কে চন্দ্রশেখর রাও সই করেছেন।

এ ছাড়া এনসিপি প্রধান শরদ পওয়ার, এসপি-র অখিলেশ যাদব, মহারাষ্ট্রের উদ্ধব ঠাকরে, ন্যাশনাল কনফারেন্সের ফারুখ আবদুল্লা ও বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী, আরজেডি-র তেজস্বী যাদবও চিঠিতে সই করেছেন।

কংগ্রেস রায়পুরের প্লেনারি অধিবেশনেই ঘোষণা করেছিল, তৃতীয় ফ্রন্টের চেষ্টা আদতে বিজেপিকেই সাহায্য করবে। ডিএমকে সুপ্রিমো এম কে স্ট্যালিনও সম্প্রতি কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে তৃতীয় ফ্রন্টের ভাবনা খারিজ করে দিয়েছেন। কিন্তু আজকের চিঠি থেকেই স্পষ্ট, তৃণমূল, আম আদমি পার্টি, বিআরএস সেই ভাবনার সঙ্গে একমত নয়। উল্টে তৃণমূল সূত্রের যুক্তি, পশ্চিমবঙ্গে অন্য কোনও দলের সঙ্গে সমঝোতার প্রশ্ন খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই খারিজ করে দিয়েছেন। তা ছাড়া কংগ্রেস নিজেই মেনে নিয়েছে যে, তাদের বিরোধী জোটের নেতৃত্ব দাবি করছে না। যেখানে যে আঞ্চলিক দল শক্তিশালী, তার পাশে বাকি বিরোধীরা থাকুক।

রাজনৈতিক সূত্রের খবর, প্রধানমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে বাকি বিরোধীদের সই সংগ্রহের বিষয়ে আম আদমি পার্টি ও বিআরএস-ই উদ্যোগী হয়েছিল। তাৎপর্যপূর্ণ হল, প্রধানমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে রাজ্য স্তরে কংগ্রেসের শরিক এনসিপি, আরজেডি, উদ্ধব ঠাকরে সই করলেও কংগ্রেসই গরহাজির থেকেছে। সিসৌদিয়াকে গ্রেফতারের পরে দিল্লির প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অনিল চৌধরি ও দিল্লির কংগ্রেস নেতা সন্দীপ দীক্ষিত তাকে স্বাগত জানিয়েছিলেন। জাতীয় কংগ্রেসের তরফ থেকে সিবিআই-ইডিকে কাজে লাগিয়ে বিরোধীদের হেনস্থার সমালোচনা করা হয়। কিন্তু তাতে সিসৌদিয়ার নামের উল্লেখ ছিল না। কংগ্রেস সূত্রের বক্তব্য, দিল্লির রাজ্য রাজনীতির বাধ্যবাধকতার কথা মাথায় রেখেই কংগ্রেসের পক্ষে আম আদমি পার্টির পাশে পুরোপুরি দাঁড়ানো সম্ভব নয়। অন্য দিকে সাগরদিঘিতে তৃণমূলকে হারিয়ে কংগ্রেসের জয়, রাহুল গান্ধীর মেঘালয়ে গিয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিজেপিকে সাহায্য করার অভিযোগ তিক্ততা বাড়িয়েছে কংগ্রেস ও তৃণমূলের মধ্যে। মমতাও পাল্টা কংগ্রেস-সিপিএমের বিরুদ্ধে বিজেপির সাহায্য নিয়ে তৃণমূলকে হারানোর অভিযোগ তুলেছেন।

বিরোধী জোট নিয়ে কংগ্রেসের এক শীর্ষনেতা বলেন, “রায়পুরের প্লেনারি অধিবেশনেই আমরা বলেছি যে, সমমনস্ক দলগুলির সঙ্গে বিকল্প জোট করতে হবে। কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে আগে কংগ্রেসের নেতৃত্বে বিরোধী জোটের কথা বললেও পরে তিনি বলেছেন, নেতৃত্বের প্রশ্নের ফয়সালা পরে হবে। কিন্তু কিছু আঞ্চলিক দল দু’মুখো নীতি নিয়ে চলছে।” ডিএমকে নেতৃত্বেরও বক্তব্য, আঞ্চলিক দলগুলিকে এখন জাতীয় রাজনীতির কথা ভাবতে হবে। সার্বিক জোট হলেই বিজেপির মোকাবিলা করা সম্ভব।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement