বেঙ্গালুরুতে জন্ম হয়েছিল ‘ইন্ডিয়া’ জোটের। —ফাইল চিত্র।
বেঙ্গালুরুতে জন্ম হয়েছিল ‘ইন্ডিয়া’ জোটের। সংসদে তার ফলাফল দু’দিনেই টের পাওয়া যাচ্ছে বলে মনে করছেন বিরোধী দলের নেতারা। শুধু বিরোধীদের নিজেদের মধ্যে সাম্প্রতিক কালে সবচেয়ে মসৃণ সমন্বয়ই নয়, তৃণমূল কংগ্রেসের দাবি, ভয় পেয়েছে, নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকার। আরতাই তারা মেয়াদের শেষ ভাগে এসে হঠাৎকরেই এনডিএ জোটের ছবি সামনে নিয়েআসতে চাইছে।
‘ইন্ডিয়া’ নামটিকে কাজে লাগিয়ে অনেক বিস্তৃত প্রচারের সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। দলের এক শীর্ষ নেতার কথায়, ‘‘ভিডিয়ো, সমাজমাধ্যম থেকে শুরু করে গ্রামের মাঠ— এই নামের কোনও মার নেই। তা ছাড়া সঙ্গে ট্যাগলাইন ‘ভারত জিতেগা’-র আঞ্চলিক অনুবাদও রাজ্য রাজ্যে করে নেওয়া হবে বলে নিজেদের মধ্যে স্থির হয়েছে। অর্থাৎ তামিলনাড়ু বা মহারাষ্ট্র অথবা পশ্চিমবঙ্গে এই ট্যাগলাইন যথাক্রমে তামিল, মরাঠি এবং বাংলায় অনুবাদ করে প্রচার করা হবে।
আজ তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেছেন “কিছু লক্ষণে স্পষ্ট, মোদী-শাহ ভয় পেয়েছেন। তাঁরা বেঙ্গালুরু বৈঠকের দিনই নিজেদের এনডিএ-র সভা ডেকে বসেন। আগে ওঁদের প্রচার ছিল, মোদী বনাম বিরোধী। এখন কিছুটা লঘু করে বলা হচ্ছে, এনডিএ বনাম বিরোধী। কখনও তাঁরা ‘ইন্ডিয়া’ নামটি নিয়ে মজা করার চেষ্টা করছেন, কখনও বা ঔপনিবেশকতার দোহাই দিয়ে খুঁত ধরার চেষ্টা করছেন।”
বিরোধী দলগুলি যে এক স্বরে কথা বলছেন, তার উদাহরণ দিতে গিয়ে ডেরেক বলেন, “অনেকেই বেঙ্গালুরু সম্মেলনে ছিলেন না। সংসদে দেখা হওয়ার পরে অনেকেই আমাদের কাছে জানতে চাইছেন, কী কী হয়েছিল। যেমন পি চিদম্বরম বিশদে জানতে চাইলেন।” তাঁর কথায়, “প্রধানমন্ত্রী সংসদের ভিতরে মণিপুর নিয়ে বিবৃতি না দিলে আমরা অধিবেশন অচল করে রাখব, এটা আমাদের যৌথ সিদ্ধান্ত। স্থির হয়েছে, এই সিদ্ধান্ত থেকে কোনও ভাবেই পিছু হঠা যাবে না। এমনকি আজ প্রাইভেট মেম্বারস বিলও আমরা হতে দিইনি, কারণ তাতে মনে হতে পারে, অধিবেশন চলছে। শান্তা ছেত্রীর চারটি, আমার তিনটি, রাঘব চাড্ডার তিনটি বিল আনার কথা ছিল। অন্য বিরোধীদের অনেকেরই এ রকম বিল আনার ছিল। কিন্তু নিজেদের মধ্যে আমরা আলোচনা করে স্থির করেছি, বিল আনার জন্য অধিবেশন চালু করতে দেব না।” তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে মণিপুরের ঘটনার প্রতিবাদে সংসদের দুই কক্ষেই বিরোধীদের প্ল্যাকার্ডে ‘ইন্ডিয়া’ নামটি দেখানো শুরু হয়ে গিয়েছে আজ।
সূত্রের খবর, বিরোধীদের পরবর্তী অধিবেশন মুম্বইয়ে হওয়ার আগেই ‘ইন্ডিয়া’ জোটের কোঅর্ডিনেশন কমিটি তৈরি হয়ে যাবে। এগারোটি বড় বিরোধী দলের নেতা থাকবেন তাতে। এর পরেই তিন বা চারটি ‘ইন্ডিয়া’ কমিটি তৈরি হবে, যারা বিভিন্ন কর্মসূচি, সংবাদমাধ্যম, যৌথ জনসভা প্রচারের বিষয়গুলি দেখবে।