প্রতীকী ছবি।
‘এক দেশ এক ভোট’-এর লক্ষ্যে আরও এক ধাপ এগোল কেন্দ্র। প্রধানমন্ত্রীর দফতর সূত্রে খবর, সম্প্রতি পঞ্চায়েত স্তর থেকে লোকসভা পর্যন্ত দেশে একটাই ভোটার তালিকা তৈরির জন্য গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হয়েছে দফতরে। এই বিধি কার্যকর করতে সংশ্লিষ্ট সংবিধান সংশোধন এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে ওই বৈঠকে।
সংবিধান অনুযায়ী, দেশের স্থানীয় নির্বাচন অর্থাৎ পঞ্চায়েত ও পুরসভার ভোট প্রক্রিয়ার পুরো দায়িত্ব থাকে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের উপর। এই স্থানীয় নির্বাচনের জন্য চূড়ান্ত ভোটার তালিকাও তৈরি করে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। সেখানে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের কোনও হস্তক্ষেপ বা অধিকার থাকে না। এই পদ্ধতিতেই বদল আনতে চাইছে মোদী সরকার। গত ১৩ অগস্ট এই নিয়েই বৈঠক হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর দফতরে। প্রধানমন্ত্রীর প্রধান সচিব পি কে মিশ্রর নেতৃত্বে বৈঠকে এই সংক্রান্ত সংবিধান সংশোধনী নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে সূত্রের খবর।
ভারতীয় সংবিধানের ২৪৩কে ধারায় পঞ্চায়েত ভোটের কথা বলা হয়েছে। ২৪৩ জেড-এ ধারায় বলা রয়েছে পুরসভা নির্বাচনের বিষয়। এই দুই ধারা অনুযায়ী পঞ্চায়েত ও পুরসভার ভোট পরিচালনা ও ভোটার তালিকা তৈরির ভার ন্যস্ত করা হয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের উপর। আরও বলা হয়েছে, কমিশনের প্রধান অর্থাৎ রাজ্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ করবেন রাজ্যপাল। ২৪৩ জেড-এ ধারায় পুরনির্বাচনও একই ভাবে পরিচালনার কথা বলা হয়েছে। সংবিধানের এই দুই ধারা সংশোধন করে স্থানীয় নির্বাচনকেও কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের আওতায় আনার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হয়েছে বলে ১৩ অগস্টের ওই বৈঠক সূত্রে খবর। পাশপাশি রাজ্য সরকারগুলিও যাতে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের ভোটার তালিকা ধরে নির্বাচন প্রক্রিয়া পরিচালনার ব্যবস্থা করে, সেই বিষয়ে রাজ্যগুলিকেও আর্জি জানানো হবে বলে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
আরও পড়ুন: কিডনির অবস্থার উন্নতি, চলছে ফুসফুসের সংক্রমণের চিকিৎসা, এখনও কোমায় আচ্ছন্ন প্রণব
আরও পড়ুন: কোভিডের আগের অব্যবস্থা নিয়ে কী বলবেন ‘ভগবানের দূত’? নির্মলাকে খোঁচা চিদম্বরমের
২০১৪ সালে প্রথম বার কেন্দ্রে ক্ষমতায় আসার পর বিজেপি তথা নরেন্দ্র মোদী সরকার এই ‘এক দেশ এক ভোট’-এর তত্ত্ব সামনে এনেছিল। এর অর্থ, পঞ্চায়েত-পুরসভা থেকে বিধানসভা বা লোকসভা ভোট— সব ভোট একসঙ্গে পাঁচ বছরের জন্য করার পক্ষে সওয়াল করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নিজেও। বহু সভায় এই প্রচার করেছেন নরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রী ও বিজেপির যুক্তি ছিল, এই প্রক্রিয়া কার্যকর করা গেলে নির্বাচনের বিপুল খরচ সাশ্রয় হবে। ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের আগেও সারা দেশে একটিই ভোটার তালিকা তৈরির পক্ষে প্রচার চালিয়েছিল বিজেপি। পর্যবেক্ষদের মতে, একটিই ভোটার তালিকা তৈরির পদক্ষেপ করে ধীরে ধীরে ‘এক দেশ এক ভোট’-এর দিকেই এগোচ্ছে নরেন্দ্র মোদী সরকার।