—ফাইল চিত্র।
নতুন করে ব্রাহ্মণ ভোটকে নিজের দলিত ভোটের সঙ্গে সংযুক্ত করতে মরিয়া বিএসপি নেত্রী মায়াবতী। তবে এই মুহূর্তে উত্তরপ্রদেশে তাঁর ‘প্রধান প্রতিপক্ষ’ বিজেপিকে নিশানা করতে দেখা যাচ্ছে না তাঁকে। এর আগে বিঁধেছেন কংগ্রেসকে। এ বার তাঁর নিশানা সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ সিংহ যাদব। আর এই ক্ষেত্রে তাঁর অস্ত্র, জমদগ্নি-পুত্র পরশুরাম।
কয়েক দিন আগে মায়ার দল ঘোষণা করেছে, ক্ষমতায় এলে সরকার ১০৮ ফুট পরশুরামের মূর্তি বানাবে। গত কাল মায়াবতী এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, তিনি ক্ষমতায় ফিরলে হাসপাতাল এবং অন্যান্য পরিকাঠামো তৈরি হবে পরশুরামের নামে। তাঁর কথায়, “ব্রাহ্মণদের প্রতীক এবং গর্বের জায়গা হল পরশুরাম। অন্যান্য জাত এবং ধর্মেরও।... আমাদের সরকার ব্রাহ্মণদের কথা মাথায় রেখে পরশুরামের একটি মূর্তি তৈরি করবে যা সমাজবাদী পার্টির প্রস্তাবিত মূর্তির তুলনায় অনেক বড় হবে।”
উত্তরপ্রদেশে বিধানসভা ভোট হওয়ার কথা ২০২২-এ। এখন থেকেই জাতপাতের রাজনীতির হাওয়া তুলতে মায়াবতীর ঘোষণা, “ক্ষত্রিয় এবং বৈশ্যদের মনেও যদি কিছু থাকে, তারা তা জানাতে পারে। সেই মনস্কামনাও পূরণ করা হবে।”
রাজনীতির লোকজনের মতে, সিবিআই মায়াবতীর পরিবারের বিরুদ্ধে একটি পুরনো মামলাকে জাগিয়ে তোলার পর থেকে বিজেপির বিরুদ্ধে মুখ খুলছে না তাঁর দল। কংগ্রেস ও অন্য বিরোধী দলের নেতাদের অভিযোগ, মায়াবতী কিছু ক্ষেত্রে পরোক্ষে বিজেপির সুবিধা করে দিচ্ছেন। পাশাপাশি রয়েছে মায়ার জাতপাতের সমীকরণ। ঘনিষ্ঠ-শিবিরে মায়া বলেছেন, উত্তরপ্রদেশের ব্রাহ্মণ ভোটব্যাঙ্ককে টানতে কংগ্রেস এবং সমাজবাদী পার্টির সঙ্গেও সংঘাতে যাওয়া প্রয়োজন। ঠাকুর সম্প্রদায় থেকে আসা মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের জমানায় ব্রাহ্মণদের অভিযোগ বেড়েছে। অভিযোগ উঠেছে, যোগী ব্রাহ্মণদের কোণঠাসা করে রেখেছেন।
রাজনৈতিক সূত্রের মতে, মায়াবতী মনে করছেন, প্রিয়ঙ্কা সক্রিয় থাকায় ব্রাহ্মণ ভোট কংগ্রেস শিবিরে ফেরার সম্ভাবনা থাকবে। এই ঘোলা জলে অখিলেশরাও ব্রাহ্মণ মন জয়ের চেষ্টা যে শুরু করে দিয়েছে, সেটা তাদের পরশুরামের মূর্তি সংক্রান্ত বিবৃতি থেকেই স্পষ্ট। সেটাই আটকাতে চান বিএসপি নেত্রী।
তবে অনেকেই মনে করছেন, ব্রাহ্মণেরা মায়াবতী শিবিরে যাওয়ার আগে তিন বার ভাববে। কারণ, বিএসপির মূল শক্তি দলিত। সংসদের দুই কক্ষে ব্রাহ্মণ নেতা বেছেছেন মায়াবতী। কিন্তু অতীতে ব্রাহ্মণ ও দলিত ভোটকে এক ছাতায় এনে ক্ষমতায় এলেও, নতুন করে বিএসপি-র দিকে ব্রাহ্মণদের ঝোঁকার সম্ভাবনা প্রায় নেই। পরশুরামকে ব্যবহার করে মায়াবতী ব্রাহ্মণদের শেষ পর্যন্ত কতটা টানতে পারবেন, তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দিহান উত্তরপ্রদেশের রাজনীতি বিশেষজ্ঞেরা।