বিজেপির প্রতিষ্ঠা দিবসে দলীয় কর্মীদের প্রতি ভার্চুয়াল বক্তৃতা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। ছবি— পিটিআই।
সদ্য পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের মধ্যে চার রাজ্যে জয় পেয়েছে দল। এই আবহে আজ দলের প্রতিষ্ঠা দিবসে দলীয় কর্মীদের বার্তা দিতে এক দিকে যেখানে কংগ্রেসের পরিবারবাদ নীতির সমালোচনা সরব হলেন নরেন্দ্র মোদী। অন্য দিকে দাবি করলেন, কূটনৈতিক ভাবেও আগের চেয়ে অনেক শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে ভারত।
আজ বিজেপির ৪২তম প্রতিষ্ঠা দিবসে নতুন গেরুয়া টুপি পরে কর্মীদের সম্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। আজ বৈঠকে তরুণ কর্মী-সমথর্কদের উজ্জীবিত করতে ও তাঁদের আরও বেশি করে দলের কাজে অনুপ্রাণিত করতে নাম না করে কংগ্রেসের পরিবারবাদের সমালোচনায় সরব হন মোদী। তিনি বলেন, “পরিবারভিত্তিক দলগুলি কখনই তরুণ কর্মীদের উত্থানকে পছন্দ করে না। তাতে তাদের আসন টলে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই তরুণ কর্মীরা সব থেকে বেশি বঞ্চনার শিকার হয়ে থাকেন।” আগামী দু’সপ্তাহ দেশ জুড়ে কেন্দ্রের জনকল্যাণমূলক নীতির সুফল প্রান্তিক মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্য নিয়েছে দল। ওই কাজে যাতে দলের যুব-তরুণ কর্মীদের উপরেই ভরসা করছেন দলীয় নেতৃত্ব। তাই তরুণ শিবিরকে উজ্জীবিত করতে ও পরিবারবাদের কুফল প্রশ্নে মোদী বলেন, “বিজেপির নীতি হল রাষ্ট্রভক্তি। বিরোধীদের পরিবার-ভক্তি। বিজেপি কর্মীদের গর্বিত হওয়া উচিত যে দল একে ভোটের ইস্যু বানিয়ে মানুষকে পরিবারতান্ত্রিক রাজনীতির বিপদ সম্পর্কে অবহিত করতে সক্ষম হয়েছে।” গোড়া থেকেই পরিবারতান্ত্রিক রাজনীতির বিপক্ষে বিজেপি নেতৃত্ব। তা ছাড়া প্রধান বিপক্ষ কংগ্রেস পরিবারতান্ত্রিক দল হওয়ার কারণে রাজনৈতিক ভাবে কংগ্রেসকে আক্রমণ শানিয়ে আসার প্রশ্নেও বাড়তি সুবিধে পেয়ে এসেছে বিজেপি। আজ মোদী বলেন, “পরিবারতান্ত্রিক দলগুলির সমস্যা, এদের সংবিধানের প্রতি কোনও দায়বদ্ধতা থাকে না। তেমনি দুর্নীতির অভিযোগ ওঠা সত্ত্বেও পরিবারতান্ত্রিক দলগুলি একে অপরের কোনও দোষ দেখতে পায় না। কিন্তু আমাদের সরকার আমজনতার উন্নতির প্রশ্নে দায়বদ্ধ।”
আজ দলের প্রতিষ্ঠা দিবসে ১৩টি দেশের রাষ্ট্রদূতেরাও বিজেপির সদর দফতর ঘুরে দেখেন। ‘বিজেপি-কে জানুন’ নামে ওই কর্মসূচির লক্ষ্য ছিল আন্তর্জাতিক মঞ্চে বিজেপির সাফল্য, দলের নীতি-আদর্শকে তুলে ধরা। বর্তমান সময়ে যে ভূ-কৌশলগত অস্থিরতা চলছে, তাতে ভারত এক শক্তিশালী মধ্যস্থতকারীর ভূমিকায় উঠে আসার চেষ্টা করছে। এই আবহে আজ বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে বিজেপি নেতাদের ওই বৈঠক যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। আজ মোদীও কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, “আজ কোনও ভয় বা স্বার্থ ছাড়াই আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে নিজেদের শক্তিশালী অবস্থান ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে ভারত। বর্তমান সময়ে গোটা বিশ্ব যখন যুযুধান দুই শিবিরে বিভক্ত হয়ে পড়েছে, তখন ভারতকে গণ্য করা হচ্ছে এমন একটি দেশ হিসাবে যারা মানবতার স্বার্থে সরব।” মোদী দাবি করেন, “বিভিন্ন ঘটনার কারণে বর্তমান বিশ্বের ক্ষমতার ভরকেন্দ্র দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে। যে কারণে আগামী দিনে ভারতের সামনে নতুন সম্ভাবনার সৃষ্টি হতে চলেছে। তাই আগামী দিনে সেই সুযোগের সদ্ব্যবহার করে সদর্থক ভূমিকা নিতে হবে দেশবাসীকে।”