—ফাইল চিত্র
জম্মু-কাশ্মীরে জেলা উন্নয়ন পরিষদ(ডিডিসি)-এর বৈঠকে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে জয়ী হল গুপকর জোট। ডিডিসি-এর ভোটে একক বৃহত্তম দল হিসেবে উঠে এসেছে বিজেপি।
গুপকর জোটের জয়ের পরে বিজেপির তুলোধোনা করে ন্যাশনাল কনফারেন্স (এনসি) নেতা ওমর আবদুল্লার দাবি, ফলাফল থেকে স্পষ্ট, জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত এই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মানুষ গ্রহণ করেননি। কেন্দ্রের প্রধান শাসক দলের প্রতি পিডিপি নেত্রী মেহবুবা মুফতির হুঁশিয়ারি, তাঁর আত্মীয়, বন্ধুদের নিশানা না-করে, বিজেপি যেন রাজনৈতিক ভাবে তাঁর মোকাবিলা করে। জম্মু-কাশ্মীরে ভোট পর্ব নির্বিঘ্নে মিটে যাওয়ায় কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের বাসিন্দাদের অভিনন্দন জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
জম্মু-কাশ্মীরে ডিডিসি-র ২৮০টি আসনে গত ২৮ নভেম্বর থেকে আট দফায় গত ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত ভোটগ্রহণ হয়েছিল। গত কাল থেকে ভোট গণনা শুরু হয়। গণনার প্রথম পর্ব থেকেই ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছিল জয়ী হতে চলছে ফারুক আবদুল্লার নেতৃত্বাধীন গুপকর জোট। ভোট গণনার শেষ পর্বে দেখা গিয়েছে গুপকর জোট ১১০টি আসনে জয়ী হয়েছে। বিজেপি জিতেছে ৭৫টি আসনে। পিডিপি ৩০, কংগ্রেস ২৬, আপনি পার্টি ১২, সিপিএম ৫টি আসন দখল করেছে। ৫০ জন নির্দল প্রার্থী জয়ী হয়েছেন। গুপকর ও বিজেপি উভয়েই অবশ্য এই ফলাফলকে ‘নিজেদের জয়’ বলে দাবি করেছে।
আরও পড়ুন: ফিউচারকে নিয়ন্ত্রণে অ্যামাজনের প্রচেষ্টা আইন ভাঙার শামিল: আদালত
আরও পড়ুন: ফের কমল সংক্রমণের হার, আশঙ্কা জাগাচ্ছে কলকাতায় দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা
গুপকর জোটের জয়ে উজ্জীবিত এনসি নেতৃত্ব। আজ সাংবাদিক বৈঠকে ওমর বলেন, ‘‘ডিডিসি-এর নির্বাচনী ফলাফল উচ্চস্বরে এবং স্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিচ্ছে ২০১৯ সালের ৫ অগস্ট জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত মানুষ গ্রহণ করেননি।’’ সংবাদমাধ্যমের একাংশকে নিশানা করে ওমর বলেছেন, ‘‘বিজেপি টাকা ছড়িয়ে মিডিয়ায় প্রচার করেছিল, মানুষ এনসি-র সঙ্গে নেই। বেআইনি ভাবে আমাদের নেতা, বিধায়ক, কর্মীদের আটকে রাখা হয়েছিল।’’ তিনি জয়ের কৃতিত্ব দিয়েছেন দলের সাধারণ কর্মীদেরই। তাঁর দাবি, এ বারের ভোটে নেতারা প্রচারে যেতে পারেননি। কিন্তু কর্মীরাই দলের জয় নিশ্চিত করেছেন।
ডিডিসি-র ভোট নিয়ে আজ বেশ কয়েকটি টুইট করেন অমিত শাহ। তিনি লিখেছেন, ‘‘জম্মু-কাশ্মীরে তৃণমূলস্তর পর্যন্ত গণতন্ত্রকে প্রসারিত করতে চেষ্টার ত্রুটি রাখেনি নরেন্দ্র মোদী সরকার। ভোটে মানুষের অংশগ্রহণ, গণতন্ত্রের প্রতি তাঁদের আস্থার প্রতিফলন।’’ বিজেপি নেতারা বলছেন, ডিডিসি-র ভোট আসলে ‘গণতন্ত্রের জয়’। এ নিয়ে ওমরের কটাক্ষ, ‘‘বাস্তব মেনে নিতে পারছেন না বলেই বিজেপি নেতারা গণতন্ত্রের জয়ের কথা বলছেন।’’
বিজেপিকে আজ একহাত নিয়েছেন মেহবুবাও। তাঁর অভিযোগ, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলিকে কাজে লাগিয়ে তাঁকে হেনস্থা করতে চায় বিজেপি। তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘‘কেন্দ্র ও বিজেপি তদন্তের নামে আমার পরিবারকে ভয় দেখাচ্ছে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলিকে দিয়ে আমাকে আটকানো যাবে না। রাজনৈতিক ভাবে মোকাবিলা করুন। ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদ যে মানুষ ভাল ভাবে নেননি, তা এই ফলাফলেই স্পষ্ট।’’ সিপিএম নেতা মহম্মদ ইউসুফ তারিগামি বলছেন, ‘‘এটা বিজেপির চোখ খুলে দেওয়ার মতো ফলাফল।’’