ওমর আবদুল্লা।
ওমর আবদুল্লাকে আটক করে রাখা হয়েছে কেন, কেনই বা তাঁর বিরুদ্ধে জন নিরাপত্তা আইন (পিএসএ) প্রয়োগ করল কেন্দ্র, এই প্রশ্ন তুলে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হলেন ওমর আবদুল্লার বোন সারা আবদুল্লা পায়লট। সেই সঙ্গে ওমরের দ্রুত মুক্তির দাবি জানিয়েছেন তিনি।
সারা বলেন, “সম্পূর্ণ অসাংবিধানিক ভাবে দাদাকে আটক করে রাখা হয়েছে। শুধু তাইনয়, তাঁর বাক স্বাধীনতাও কেড়ে নেওয়া হয়েছে।” এর পরই কেন্দ্রকে আক্রমণ করে তাঁর মন্তব্য, “সমস্ত বিরুদ্ধ রাজনৈতিক মতের কণ্ঠরোধ করতেই এই প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে।”
সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ প্রত্যাহারের পর থেকেই আটক জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা। গত সপ্তাহেই তাঁর বিরুদ্ধে জন নিরাপত্তা আইন (পিএসএ) প্রয়োগ করেছে কেন্দ্র। এ প্রসঙ্গে সরকারের যুক্তি, কাশ্মীরে একটু বেশিই জনপ্রিয় ওমর। জঙ্গিরা ভোট বয়কটের ডাক দেওয়া সত্ত্বেও মানুষ লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দেয় তাঁর দলকে। ওমর ছাড়া পেলে কাশ্মীরের মানুষকে ৩৭০ অনুচ্ছেদ প্রত্যাহারের বিরুদ্ধে জড়ো করতে পারেন। এ নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তুলতে পারেন। সে কারণেই ওমরের বিরুদ্ধে পিএসএ আনা হয়েছে। রবিবার এক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে এমনটাই জানিয়েছে প্রশাসন। এর ফলে বিনা বিচারেই আরও ৩ মাস আটক রাখা যাবে ওমরকে।
আরও পড়ুন: রাস্তা আটকে অনির্দিষ্টকাল প্রতিবাদ চলতে পারে না, শাহিন বাগ নিয়ে নোটিস সুপ্রিম কোর্টের
আরও পড়ুন: মৃত বেড়ে ৯০০, চিনে এ বার নিখোঁজ করোনার খবর করা সাংবাদিক
শুধু ওমরই নন, পিডিপি নেত্রী মেহবুবা মুফতির বিরুদ্ধেও পিএসএ এনেছে কেন্দ্র। পিডিপি-র এই নেত্রী নানা সময়ে ‘রাষ্ট্র-বিরোধী বিবৃতি’ দিয়েছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
সারার অভিযোগ, সাত মাস আগেও ঠিক একই ভাবে কয়েক জনের বিরুদ্ধে আটকের নির্দেশ জারি করেছিল প্রশাসন। সুপ্রিম কোর্টে যে পিটিশন সারা দাখিল করেছেন তাতে বলা হয়েছে, সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলা মানেই তা রাষ্ট্রের পক্ষে ক্ষতিকারক বলে দাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এটা গণতান্ত্রিক রাজনীতি এবং ভারতীয় সংবিধানের সম্পূর্ণ পরিপন্থী। সারার আরও অভিযোগ, কীসের ভিত্তিতে ওমরকে গ্রেফতার করা হয়েছে সেটাও পরিষ্কার জানানো হয়নি।
গত বছরের অগস্টে কাশ্মীর থেকে ৩৭০ অনুচ্ছেদ প্রত্যাহার করা হয়। তার পর পরই গোটা কাশ্মীরে কার্ফু জারি ও ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়া হয়। পাশাপাশি, তিন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকেও আটক করা হয়। ওমরের বাবা ফারুক আবদুল্লাকে আটক করা হলেও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সংসদে দাঁড়িয়ে তা অস্বীকার করেন। তার পর তাঁর বিরুদ্ধেই প্রথম পিএসএ প্রয়োগ করে বিনা বিচারে আটকের বন্দোবস্ত করে কেন্দ্র। গত ৫ জানুয়ারি ওমর ও মেহবুবার আটকের ছ’মাস পূর্ণ হয়। তার পর তাঁদের বিরুদ্ধেও পিএসএ প্রয়োগ করা হয়।