ওমর আবদুল্লা। —ফাইল চিত্র।
কাশ্মীরে নির্মীয়মাণ রিং রোডের পাশে উপনগরী (‘স্যাটেলাইট টাউনশিপ’) তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে ওমর আবদুল্লা সরকার। ফলে জমি হারানো নিয়ে উৎকণ্ঠায় কৃষকেরা। সরকারকে নিশানা করেছে বিরোধী দলগুলি।
পুলওয়ামার সঙ্গে গান্ডেরবালকে জুড়বে ৬২ কিলোমিটার দীর্ঘ নয়া রিং রোড। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের তৈরি এই রাস্তা মিশবে শ্রীনগর-লে জাতীয় সড়কে।
সেই রাস্তারই ধারে ছ’টি জেলায় উপনগরী গড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জম্মু-কাশ্মীর আবাসন পর্ষদ। প্রত্যেকটি উপনগরীতে থাকার কথা ২০০ হেক্টর জমি। মোট ৩০টি উপনগরী গড়ার পরিকল্পনা করেছে আবাসন পর্ষদ। এই পরিকল্পনার জেরে ৫৫টি রাজস্ব গ্রাম এলাকায় জমি বিক্রি ও নির্মাণকার্যের উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে প্রশাসন।
আবাসন পর্ষদ সূত্রের মতে, জমি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত প্রাথমিক সমীক্ষা শুরু হয়েছে। আবাসন পর্ষদের কালেক্টর মুশতাক আহমেদের কথায়, ‘‘এখনও জমি অধিগ্রহণ বা ক্ষতিপূরণের কোনও প্রক্রিয়াই শুরু হয়নি। আমরা সাধারণত রাজ্যের হাতে থাকা জমিই অধিগ্রহণ করি। কারণ, ব্যক্তিগত মালিকানায় থাকা জমির ক্ষেত্রে বিপুল ক্ষতিপূরণ দিতে হয়।’’
জম্মু-কাশ্মীর নগরায়ণ আইন মেনে ২০২২ সালের মে মাসে রিং রোডের পাশে ৫০০ মিটার পর্যন্ত এলাকায় নির্মাণকার্য নিষিদ্ধ করেছিলেন তৎকালীন ডিভিশনাল কমিশনার পি কে পোল। নগরায়ণের জন্যই সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। সরকারি আধিকারিকদের মতে, এই কৌশলের ফলে নিয়ন্ত্রিত নগরায়ণ হবে। জমি মালিকেরা এক দিকে আরও উন্নত জমির প্লট পাবেন। অন্য দিকে থামবে অনিয়ন্ত্রিত নগরায়ণ। কিন্তু কৃষিজমি অধিগ্রহণের সম্ভাবনায় উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে কৃষকদেরমধ্যে। সমাজকর্মী রাজা মুজফ্ফর বাটেরকথায়, ‘‘বডগাম ও অন্য জেলার কৃষকেরা গভীর ভাবে উদ্বিগ্ন। সড়ক ও রেল প্রকল্পের মতো পরিকাঠামোগত প্রকল্পের জন্য কৃষিজমি কমছে। ফলে এই প্রকল্প পুনর্বিবেচনার করা উচিত রাজ্যের।’’ সম্প্রতি কৃষকদের প্রতিনিধিদের নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর উপদেষ্টা নাসির আসলম ওয়ানির সঙ্গে দেখা করেছেন বাট।
অন্যতম বিরোধী দল পিডিপি-র প্রশ্ন, এই উপনগরীর ফলে কারা সুবিধে পাবেন তা স্পষ্ট করা উচিত সরকারের। দলীয় মুখপাত্র মেহবুব বেগের প্রশ্ন, উপনগরীতে কি কেবল কাশ্মীরের স্থায়ী (ডোমিসাইলড) বাসিন্দারা থাকার অধিকার পাবেন? কৃষকদের অনেক বেশি ক্ষতিপূরণ দেওয়া উচিত বলেও দাবি তাঁর।