(বাঁ দিকে) পূজা খেড়করের মা মনোরমা খেড়কর। পূজা খেড়কর (ডান দিকে) । ছবি: সংগৃহীত।
কন্যার ‘কীর্তি’ নিয়ে হইচইয়ের মধ্যেই এ বার মায়ের ‘কীর্তি’ প্রকাশ্যে এল। জমি জবরদখলের চেষ্টা, বন্দুক উঁচিয়ে মহারাষ্ট্রের এক কৃষককে হুমকির অভিযোগ উঠল শিক্ষানবিশ আমলা পূজা খেড়করের মা মনোরমা খেড়করের বিরুদ্ধে। তাঁর পুরনো একটি ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসতেই নতুন বিতর্ক দানা বেঁধেছে (যদিও সেই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন) ।
নিজের দেহরক্ষী সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন মনোরমা। ভিডিয়োয় দেখা যাচ্ছে ফাঁকা একটি জমি। তার মধ্যে একটি জেসিবি দাঁড় করানো। কালো পোশাক পরা পুরুষ এবং মহিলা দেহরক্ষী। গাড়ি থেকে নেমেই এক ব্যক্তিকে শাসাতে শোনা যাচ্ছিল মনোরমাকে। জমি সংক্রান্ত বিষয়ে ওই ব্যক্তিকে হুমকিও দিচ্ছিলেন। একটা সময় বচসার মাঝে পকেট থেকে একটি বন্দুক বার করে তেড়ে আসতেও দেখা যায়। দাবি করা হচ্ছে, ভিডিয়োটি অনেক পুরনো। কিন্তু কন্যা পূজার এই ‘কীর্তি’র মাঝে মায়ের এই পুরনো প্রকাশ্যে আসায় আলোচনা আরও জোরালো হয়েছে।
বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, স্থানীয়দের অভিযোগ, এক কৃষকের জমি জোর করে দখল করার চেষ্টা করেন শিক্ষানবিশ আমলার মা। ওই কৃষক প্রতিবাদ করায় দেহরক্ষীদের নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। অভিযোগ, কৃষকের বিরুদ্ধে আইনি মামলার হুঁশিয়ারি দেন। তার পরেও ওই কৃষক প্রতিবাদ করায় তাঁকে বন্দুক দিয়ে শাসানো হয়। গোটা ঘটনাটির ভিডিয়োও করা হয়।
ঘটনাচক্রে, গত কয়েক দিন ধরেই পূজার বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ নিয়ে শোরগোল চলছে। শিক্ষানবিশ আমলা হয়েও কী ভাবে এক জন আমলার সমস্ত রকম সুযোগ-সুবিধা নিচ্ছিলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। প্রশাসনিক নিয়ম অনুযায়ী এক জন শিক্ষানবিশ আমলা পদোন্নতির পরে ‘গেজেটেড অফিসার’ হলেই উক্ত সুবিধাগুলি পেয়ে থাকেন। কিন্তু পূজা সে সবের পরোয়া না করেই ওই দাবি জানান এবং না পেয়ে অতিরিক্ত জেলাশাসকের চেম্বার দখল করে নিজের নামের ফলক লাগিয়ে দেন। নিজের নামে লেটারহেড, ভিজ়িটিং কার্ড, পেপারওয়েট, সিলমোহরের স্ট্যাম্প এবং ইন্টারকমেরও দাবি করেন পূজা। ওই সব সুবিধা পূজাকে দেওয়ার জন্য তাঁর ‘প্রাক্তন আমলা’ বাবা পুণের জেলাশাসককে ফোন করে চাপও দেন বলে অভিযোগ। এর পরেই পূজাকে বদলি করা হয় পুণে থেকে ওয়াসিমে একটি আপাত-গুরুত্বহীন পদে। তার পরেও বিতর্ক থামেনি। এ বার ট্র্যাফিক আইন ভাঙার অভিযোগও উঠেছে পূজার বিরুদ্ধে।
পুলিশ জানিয়েছে, শিক্ষানবিশ এই আমলাকে বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চালানো এবং ট্র্যাফিক আইন ভাঙার জন্য ইতিমধ্যেই নোটিস পাঠানো হয়েছে। ২৭ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়েছে। পূজার পুণের বাড়িতে গিয়ে সেই নোটিস দিয়ে এসেছে পুলিশ।