—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
পকেটমারকে ধরে ফেলেছিলেন প্রৌঢ়। তাদের আটকে রাখতে গেলে শুরু হয় মারামারি। ধাক্কাধাক্কিতে চলন্ত ট্রেন থেকে পড়ে গিয়ে দুটো পা খোয়ালেন ৫৫ বছরের ওই ব্যক্তি। উত্তর দিল্লির দয়াবাসন্তী রেলস্টেশনের কাছে এই ঘটনায় পুলিশ এক জনকে পাকড়াও করেছে।
রেল সূত্রে খবর, আক্রান্ত ওই ব্যক্তি দিল্লির শাস্ত্রীনগরের বাসিন্দা। আক্রান্ত প্রৌঢ়ের ছেলে অভিযোগ করেন, গত ১৭ জানুয়ারি গুজরাত থেকে ট্রেনে চেপে দিল্লি ফিরছিলেন তিনি, তাঁর বাবা এবং মা। ট্রেনটি দয়াবাসন্তী স্টেশনের কাছে যখন এসেছে, তখন দুপুর আড়াইটে বাজে। ব্যাগপত্র নিয়ে তাঁর বাবা ট্রেন থেকে নামার জন্য তৈরি হচ্ছিলেন। ট্রেনের দরজার কাছে ব্যাগ নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন। ওই সময় আচমকা এক জন তাঁর বাবার ব্যাগ ধরে টানাহ্যাঁচড়া শুরু করে বলে অভিযোগ। প্রৌঢ়ও সঙ্গে সঙ্গে ওই ব্যক্তিকে আটকাতে যান। শুরু হয় ধস্তাধস্তি। ওই সময় চলন্ত ট্রেন থেকে পড়ে যান তিনি।
প্রৌঢ়ের ছেলের অভিযোগ, তাঁর বাবার হাত থেকে যখন দুষ্কৃতী ব্যাগ ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে, তখন সহযাত্রীরা বসে বসে তা দেখেছেন। সাহায্য তো দুরস্ত, কেউ কোনও কথাই বলেননি। বরং দেখেও না দেখার ভান করে কেউ কেউ মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। ওই সময় তিনি ট্রেনের শৌচাগারে ছিলেন। যুবকের কথায়, ‘‘শৌচাগার থেকে বেরিয়ে ট্রেনের দরজার কাছে গিয়ে দেখি বেশ লোক জমে গিয়েছে। ট্রেন তখন স্টেশনের কাছে এসে গিয়েছে। আমার বাবা পড়ে রয়েছেন একটু দূরে রেললাইনে। কিন্তু কেউ তাঁকে সাহায্য করেননি। উদ্ধারও করেননি।’’ পুলিশের কাছে তিনি অভিযোগ করেন, তাঁর মায়ের চিৎকার-চেঁচামেচিতে ওই দুষ্কৃতী দৌড়ে পালায়। এর পর কোনও ক্রমে বাবাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান তিনি। যুবকের কথায়, ‘‘আর ১০ মিনিট দেরি হলে বাবাকে হয়তো বাঁচাতে পারতাম না। চিকিৎসক বললেন, প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। ওঁর দুটো পা বাদ দিতে হয়েছে।’’ দোষীর শাস্তি চেয়ে তিনি পুলিশের আবেদন করেছেন। পাশাপাশি দিল্লি সরকারের কাছে আর্থিক সাহায্য চেয়েছেন। ওই যুবক জানান, পরিবারে একমাত্র রোজগেরে সদস্য ছিলেন তাঁর বাবা। তিনি সদ্য একটি চাকরি পেয়েছেন। এই অবস্থায় বাবার চিকিৎসার জন্য তাঁদের কাছে টাকাপয়সা নেই।’’
শেষ পর্যন্ত পাওয়া খবরে এই ঘটনায় পুলিশ এক নাবালককে আটক করেছে। তার বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৯৪ ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে।