প্রতীকী চিত্র।
ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও প্রয়োজনীয় টিকা সরবরাহ করতে পারছে না দেশজ সংস্থাগুলি। কিছু সরকারি নিয়ম-নীতির জালে মন্থর হচ্ছে গোটা প্রক্রিয়া। কেন্দ্রকে এ ব্যাপারে সতর্ক করে দিল্লি হাই কোর্ট জানতে চেয়েছে, টিকা উৎপাদন থেকে টিকা সরবরাহের এই প্রক্রিয়াটিকে কি দ্রুত করা যায় না? হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণ, দেশে টিকা না পেয়ে যখন মৃত্যুর সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে, তখন এই দীর্ঘসূত্রিতার জন্য দায়ী অফিসারদের ‘হত্যাকারী’ হিসেবে চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা উচিত। কারণ, চাহিদা থাকা সত্ত্বেও টিকা উৎপাদনকারী সংস্থাগুলির ক্ষমতাকে এঁরা কাজে লাগাচ্ছেন না।
কেন্দ্রকে এ ব্যাপারে তাদের টিকা নীতি নিয়ে প্রশ্ন করেছে দিল্লি হাই কোর্ট। জানতে চেয়েছে, ‘‘টিকা না পেয়ে প্রাণহানির ঘটনার কী ব্যাখ্যা দেবে কেন্দ্র?’’
দিল্লি হাই কোর্টের বিচারপতি মনমোহন এবং বিচারপতি নাজমি ওয়াজিরির ডিভিশন বেঞ্চে ওই সংক্রান্ত শুনানি ছিল। কেন্দ্রকে তাঁদের পরামর্শ, ‘‘গোটা দেশে টিকার ঘাটতি রয়েছে। মানুষ টিকা নিতে চেয়েও নিতে পারছেন না। এই পরিস্থিতিতে আপনাদের টিকার উৎপাদন থেকে জোগানের প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রিতাকে বন্ধ করতেই হবে। যে ভাবে হোক টিকার যোগান বাড়াতে হবে।’’ তার জন্য যদি কিছু নিয়ম-নীতি বদলাতে হয়, কেন্দ্রকে তা-ও বদলানোর পরামর্শ দিয়েছে হাই কোর্ট। আদালত জানিয়েছে, এই পরিস্থিতিতে টিকা উৎপাদনকারী সংস্থাগুলিকে কেন্দ্রের সহযোগিতা করা দরকার। হাই কোর্ট জানিয়েছে, পুলিশি তদন্ত, অ়ডিট প্রক্রিয়া এবং আরও নানা সরকারি বিধিনিষেধের বেড়ায় আটকে যাচ্ছে উৎপাদন সংস্থাগুলির টিকার উৎপাদন থেকে সরবরাহের প্রক্রিয়া। এর দাম দিতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। জীবন দিয়ে তার দাম দিচ্ছেন তাঁরা। কেন্দ্রকে হাই কোর্ট বলেছে, ‘‘এখন তদন্ত, অডিট নিয়ে ভাবার সময় নয়। কারণ, টিকার জোগানের অভাবে মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। আমাদের মতে, যাঁদের জন্য এটা হচ্ছে তাঁদের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ এনে মামলা করা উচিত। ’’
‘প্যানাসিয়া বায়োটেক’ নামে এক ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থার আবেদনের প্রেক্ষিতেই এই মন্তব্য করেছে দিল্লি হাই কোর্ট। রাশিয়ার একটি বিনিয়োগ সংস্থার সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়ে দেশে ‘স্পুটনিক ভি’ টিকা তৈরির কাজ করার কথা সংস্থাটির। হাই কোর্টে তারা জানিয়েছিল, কেন্দ্রের কাছে প্রাপ্য একটি বড় অঙ্কের টাকা না পেলে টিকা তৈরি করতে পারবে না তারা।