ফাইল চিত্র
লক্ষ্যপূরণে নিরন্তর তাগাদা এবং রেলমন্ত্রীর কঠোর নীতি। এই সাঁড়াশি চাপের প্রেক্ষিতে রেলে শীর্ষ কর্তাদের মধ্যে স্বেচ্ছায় অবসর নেওয়ার হিড়িক পড়ে গিয়েছে। গত ন’মাসে ৭৭ জন শীর্ষ কর্তার ইস্তফায় জল্পনা বাড়ছে। অভিযোগ, অস্বাভাবিক কাজের চাপের পাশাপাশি নতুন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের কঠোর নীতি ‘কাজ করো অথবা নিপাত যাও’-এর কথাও শোনা যাচ্ছে। তিনি রেলমন্ত্রী হওয়ার পরে স্বেচ্ছাবসরের তালিকায় দু’জন সচিবও আছেন। ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে যাঁরা কাজ করছেন না, কড়া নজরদারি চালিয়ে তাঁদের স্বেচ্ছাবসরে বাধ্য করানোর অভিযোগ উঠছে।
অভিযোগ, গত দু’বছরে আর্থিক দায় কমাতে নির্বিচারে পদ ছাঁটাই করায় শীর্ষ কর্তাদের অধীনে সিনিয়র স্কেল অফিসার অনেক কমে গিয়েছে এবং কাজ উদ্ধারে অমানুষিক পরিশ্রম হচ্ছে। রেল সূত্রের খবর, রেল বোর্ডের চেয়ারম্যান বিনয়কুমার ত্রিপাঠী বছরখানেক আগে উত্তর-পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার থাকাকালীন বোর্ডের তৎকালীন সচিব সুশান্তকুমার মিশ্রকে চিঠি লিখে আর্জি জানান, গ্রুপ বি অফিসারদের পদোন্নতি ঘটিয়ে সিনিয়র স্কেল অফিসারের ঘাটতি মেটানো হোক। ফল হয়নি। ত্রিপাঠী রেল বোর্ডের চেয়ারম্যান হওয়ার পরেও বিষয়টি গতি পায়নি।
এক রেলকর্তা বলেন, ‘‘রেলের আর্থিক স্বাস্থ্য পুনরুদ্ধার করতে আয় বাড়ানোর পাশাপাশি কম লোক নিয়ে রক্ষণাবেক্ষণের চাপ বাড়ছে। চাপ সামলাতে না-পেরে স্বেচ্ছাবসর নিচ্ছেন অনেকেই।’’ রেল মন্ত্রক সূত্রের দাবি, দুর্নীতিগ্রস্ত, অকর্মণ্য, কর্তাদের সরিয়ে কাজ আগ্রহী আধিকারিকদের গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। যদিও অনেকেই এই বক্তব্যের সঙ্গে একমত নন।
উপযুক্ত পদোন্নতি না-হওয়ায় হতাশায় অনেকে স্বেচ্ছাবসর নিয়েছেন বলে অভিযোগ। গত জানুয়ারিতেই ১১ জন আধিকারিক স্বেচ্ছাবসর নেন। তাঁদের মধ্যে আছেন কলকাতা মেট্রো রেলের জেনারেল ম্যানেজার মনোজ জোশীও। তাঁর কার্যকালে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর উদ্বোধন, ফুলবাগান পর্যন্ত সম্প্রসারণ এবং নোয়াপাড়া-দক্ষিণেশ্বর মেট্রো চালুর মতো লক্ষ্য পূরণ হয়েছে। জোকা-বি বা দী বাগ মেট্রো এবং নিউ গড়িয়া-বিমানবন্দর মেট্রোর একাংশ চালু করার প্রশ্নে মতপার্থক্যের কারণে তাঁকে মন্ত্রকের কোপে পড়তে হয় বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর। অভিযোগ, জোশী পদে থাকাকালীন ওই দুই প্রকল্প দেখাশোনার ভার দেওয়া হয় পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজারকে।