প্রতীকী ছবি।
আরজি কর-কাণ্ড নিয়ে যখন গোটা দেশ উত্তাল, ঠিক সেই সময়েই উত্তরপ্রদেশের মোরাদাবাদের এক বেসরকারি হাসপাতালে রাতের ডিউটিতে থাকা দলিত নার্সকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ উঠল এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। আর এই ঘটনায় তাঁকে সাহায্য করার অভিযোগ উঠেছে এক ওয়ার্ড বয় এবং আরও এক নার্সের বিরুদ্ধে।
নির্যাতিতার অভিযোগ, গত ১৭ অগস্ট সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ হাসপাতালে গিয়েছিলেন। ওই দিন তাঁর রাতের ডিউটি পড়েছিল। রাতে এক নার্স তাঁকে এসে জানান, চিকিৎসক তাঁর ঘরে ডাকছেন। কিন্তু তরুণী নার্স যেতে রাজি হননি। অভিযোগ, চিকিৎসকের ঘরে যেতে অস্বীকার করায় এক ওয়ার্ড বয়কে সঙ্গে নিয়ে আসেন অভিযুক্ত ওই নার্স। তার পর তরুণী নার্সকে জোর করে হাসপাতালের উপরতলার একটি ঘরে তুলে নিয়ে যান। সেখানে তাঁক আটকে রাখেন।
নির্যাতিতার আরও অভিযোগ, কিছু ক্ষণ পর ওই ঘরে আসেন চিকিৎসক। তিনি ভিতর থেকে দরজা বন্ধ করে দেন। তার পর তাঁকে ধর্ষণ করেন। বাইরে তখন পাহারায় ছিলেন সহকারী নার্স এবং ওয়ার্ড বয়। নির্যাতিতার বাবা মোরাদাবাদ থানায় একটি এফআইআর দায়ের করেন। মোরাদাবাদের পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) সন্দীপকুমার মিনা জানিয়েছেন, ঠাকুরদ্বারা থানায় ধর্ষণের একটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তিন জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা পড়েছে। একটি দল গঠন করে চিকিৎসক এবং তাঁর দুই সহযোগীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মহিলার মেডিক্যাল পরীক্ষা করানো হয়েছে। হাসপাতালটিকে সিল করে দেওয়া হয়েছে।
এই ঘটনায় নির্যাতিতার বাবা অভিযুক্তদের মৃত্যুদণ্ডের আবেদন জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের কাছে। তাঁর কথায়, “আমার মেয়ে স্নাতক স্তরে পড়ছে। গত তিন মাস ধরে ওই হাসপাতালে নার্সের কাজ করছিল। হাসপাতাল থেকে ঠিক মতো বেতন দেয় না। শুধু যাতায়াতের টাকা দেয়। ১৭ অগস্ট ওই হাসপাতালের চিকিৎসক মেয়েকে ধর্ষণ করেন। শুধু তাই-ই নয়, প্রাণে মেরে ফেলারও হুমকি দেন।” নির্যাতিতার বাবা আরও জানান, চিকিৎসকের ঘর থেকে কোনও রকমে পালিয়ে এসে সকালের দায়িত্বে থাকা নার্সকে কাজ বুঝিয়ে বাড়িতে চলে আসেন তাঁর কন্যা। তার পর বিষয়টি বাড়িতে জানান।
উল্লেখ্য, গত ৯ অগস্ট ভোরে আরজি কর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চারতলায় সেমিনার কক্ষ থেকে উদ্ধার হয়েছিল মহিলা চিকিৎসকের দেহ। তাঁকে ধর্ষণ এবং খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ। প্রাথমিক ভাবে ওই মামলার তদন্ত চালাচ্ছিল কলকাতা পুলিশ। এক জনকে গ্রেফতারও করেছে পুলিশ। এর পর কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে মামলার তদন্তভার যায় সিবিআইয়ের হাতে। আপাতত অভিযুক্ত সিবিআই হেফাজতে।