Criminal

Kala Gunda: পুলিশের গাড়িতে পিষ্ট কালা গুন্ডা

সোমবার একটি পথ দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে হওয়া ভুল বোঝাবুঝির জেরে আসুর নেতা অনিমেষ ভুঁইয়া (২৫)-কে যোরহাটে ব্যস্ত রাজপথে পিটিয়ে মারে কয়েক জন যুবক।

Advertisement

রাজীবাক্ষ রক্ষিত

গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০২১ ০৮:৩০
Share:

প্রতীকী ছবি।

যোরহাট-গোলাঘাটে ফাটছে বাজি! মানুষ উৎফুল্ল! মৃতের দেহ হাসপাতাল থেকে বাড়ি নিয়ে যেতেও নারাজ অ্যাম্বুল্যান্স চালকরা। আজ এমন ঘটনারই সাক্ষী থাকল অসম। পুলিশ-প্রশাসনের বিরুদ্ধে সব সমালোচনা ‘ন্যায়বিচার’-এর জয়ধ্বনিতে বদলে গেল! যে বিচারের সুর মঙ্গলবার বেঁধে দিয়েছিলেন বিজেপি বিধায়ক মৃণাল শইকিয়া। ঘোষণা করেছিলেন, “অনিমেষের হত্যাকারী যেন নিজের পায়ে হেঁটে আদালতে পৌঁছতে না পারে।” সত্যিই সে তা পারল না।

Advertisement

সোমবার একটি পথ দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে হওয়া ভুল বোঝাবুঝির জেরে আসুর নেতা অনিমেষ ভুঁইয়া (২৫)-কে যোরহাটে ব্যস্ত রাজপথে পিটিয়ে মারে কয়েক জন যুবক। ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত ছিল নীরজ দাস ওরফে কালা গুন্ডা। পুলিশ ওই ঘটনায় ধৃত ১৪ জনের মধ্যে ১৩ জনকে কাল আদালতে পেশ করে। । নীরজকে আদালতে তোলেনি পুলিশ। সেই রাতেই পুলিশের গাড়িতে পিষ্ট হয় সে। হাসপাতালে নিয়ে গেলে নীরজকে মৃত ঘোষণা করেন ডাক্তাররা।

নীরজকে কেন কাল আর সকলের সঙ্গে আদালতে তোলা হল না? জবাবে এসপি অঙ্কুর জৈন বলেন, “নীরজ মাদক কারবারে যুক্ত ছিল। লুকিয়ে রাখা মাদকের সন্ধান দেবে বলায় রাতে তাকে নিয়ে পুলিশের দল অভিযানে বেরোয়। সিনামারায় পেট্রল পাম্পের কাছে সে গাড়ি থেকে লাফ দিয়ে নেমে পালানোর চেষ্টা করে। পিছনের গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তাকে পিষ্ট করে রাস্তার পাশে ধাক্কা মারে। তিন পুলিশকর্মীও এই দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন।”

Advertisement

নীরজের মৃত্যুর খবর পেয়েই যোরহাট ও গোলাঘাটের বিভিন্ন স্থানে বাজি ফাটানো শুরু হয়। অনিমেষ হত্যা তদন্তের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বিশেষ ডিজিপি জ্ঞানেন্দ্রপ্রতাপ সিংহ। তিনি টুইট করেন, “প্রত্যেক ক্রিয়ার সমান ও বিপরীতমুখী প্রতিক্রিয়া থাকে। নিউটনের তৃতীয় সূত্র।” মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা বলেন, “অসম থেকে অপরাধ ও অপরাধী দুই-ই নির্মূল করবে পুলিশ।” অনিমেষকে গণপ্রহারের সময় কর্তব্যরত পুলিশের অকর্মণ্যতা ও ১০০ মিটার দূরে থাকা থানার নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে যে জনতা মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত প্রশ্ন তুলেছিল, তাদেরই একাংশ আজ যোরহাট থানার বাইরে জড়ো হয়ে স্লোগান দেয়, “অসম পুলিশ জিন্দাবাদ!”

গণপিটুনিতে নিহত অনিমেষের মা বলেন, “আমার ছেলেকে বিনা অপরাধে পিটিয়ে পিটিয়ে মেরেছিল। শুধু কষ্ট হচ্ছে কালার মায়ের জন্য। আজ আমার মতো তাঁর বুকও খালি হয়ে গেল।” হিমন্ত মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরে অসমে বড় অপরাধ ঘটলেই দেখা গিয়েছে প্রধান অভিযুক্ত পালানোর চেষ্টা করে গুলিবিদ্ধ হয়েছে। এ বারের ঘটনাটা একটু আলাদা। যোগী আদিত্যনাথ ২০১৭ সালে উত্তরপ্রদেশে ক্ষমতায় আসার পর ৮৪৭২টি এনকাউন্টারে ৩৩০২ জন অপরাধী গুলিবিদ্ধ হয়েছে। ২০১৯-এর ডিসেম্বরে হায়দরাবাদে গণধর্ষণ ও হত্যায় অভিযুক্ত চার জনকেই জাতীয় সড়কে গুলি করে মারে পুলিশ। অসমে গত মে মাস থেকে এই পর্যন্ত রাজ্যে অন্তত ৬০টি এনকাউন্টারের ঘটনা ঘটেছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলির মতে, অপরাধীকে বিনা বিচারে হত্যার এই মানসিকতা ও তাকে ঘিরে মানুষের উল্লাস গণতন্ত্র ও আইন ব্যবস্থা, দুইয়ের পক্ষেই বিপজ্জনক প্রবণতা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement