সচিন তেণ্ডুলকর, লতা মঙ্গেশকর।
হঠাৎই সিদ্ধান্ত বদল। সচিন তেন্ডুলকর এবং লতা মঙ্গেশকরের বিরুদ্ধে টুইট নিয়ে তদন্ত থেকে আচমকা পিছু হঠল উদ্ধব ঠাকরের সরকার। সচিন বা লতা নন, কৃষক আন্দোলন নিয়ে ‘দেশের পাশে থাকার’ বার্তা দেওয়া টুইট নিয়ে বিজেপি-র আইটি সেলের বিরুদ্ধে তদন্ত করা হবে বলে জানালেন মহারাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল দেশমুখ। বিজেপি-র আইটি সেলের বিরুদ্ধে তদন্তের অর্থ, আতস কাচের তলায় পড়তে চলেছে বর্তমানে গেরুয়া শিবিরের আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্যের ভূমিকা। ঘটনাচক্রে বাংলার নীল বাড়ি দখলের লড়াইয়ে যিনি বিজেপি-র কেন্দ্রীয় সহ পর্যবেক্ষক।
সোমবার এনসিপি-র বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী অনিল বলেন, “আমি আগেও এ কথা বলেছিলাম যে বিজেপি-র আইটি সেলের বিরুদ্ধে তদন্ত করা হবে। কিন্তু আমার কথার ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে। লতা মঙ্গেশকর আমাদের কাছে ঈশ্বরের মতো। সচিন দেশের সকলের আদর্শ। ওঁদের বিরুদ্ধে তদন্ত করার কথা আমি বলিনি। আমি বিজেপি-র আইটি সেলের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি।” তাঁর সংযোজন, ‘‘বিজেপি-র আইটি সেলের প্রধান এবং ১২ জন প্রভাবশালী ব্যক্তির নাম প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে। তাঁদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে।’’
মহারাষ্ট্র সরকারে শিবসেনার শরিক যেমন এনসিপি, তেমনই তাদের আরও একটা শরিক দল কংগ্রেস। ঘটনাচক্রে ইউপিএ সরকার থাকার সময় কংগ্রেস সরকারকই সচিনকে রাজ্যসভার সাংসদ করেছিল। তাঁর ‘ভারতরত্ন’-ও ইউপিএ-র আমলে। আর লতা মঙ্গেশকরের সঙ্গে ঠাকরে পরিবারের সম্পর্ক বরাবরই মধুর। ফলে তদন্ত থেকে পিছু হঠার পিছনে এই সব অঙ্ক কাজ করেছে কি না, তা নিয়েও জল্পনা রয়েছে।
চলতি মাসের শুরুতে কৃষক আন্দোলনকে সমর্থন করে টুইট করেছিলেন পপ তারকা রিহানা, পরিবেশ কর্মী গ্রেটা থুনবার্গের মতো আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্ব। একই সুরে টুইট করতে দেখা গিয়েছে মিয়া খলিফা এমনকি আমেরিকার ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের ভাইঝি মীনা হ্যারিসকেও। তার পরই সরকারের সিদ্ধান্তকে সমর্থন করে পাল্টা টুইট করেন দেশের ক্রীড়া, বিনোদন এবং রাজনীতির জগতের বহু বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব। সেই তালিকায় ছিলেন সচিন এবং লতাও। ‘হ্যাশট্যাগ ইন্ডিয়াটুগেদার’ এবং ‘হ্যাশট্যাগ ইন্ডিয়াএগেনস্টপ্রোপাগান্ডা’ দিয়ে প্রায় একই ভাষায় ওই টুইটগুলো করা হতে থাকে।
দেশের তারকাদের করা একই সময়ে একই ধরনের টুইট নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে বিরোধী দলগুলো। এর পিছনে বিজেপি এবং কেন্দ্রের চাপ রয়েছে, এমন অভিযোগ তুলে তদন্তেরও দাবি ওঠে। তার পরই সচিন এবং লতা মঙ্গেশকরের বিরুদ্ধে তদন্তের সিদ্ধান্ত নেয় মহারাষ্ট্র সরকার। কিন্তু সেই সিদ্ধান্তের কয়েক দিনের মধ্যেই রাজ্য সরকার সচিন এবং লতার বিরুদ্ধে তদন্তের বিষয় থেকে সরে এল।
অন্য দিকে, মোদী-অমিত শাহের সরকার গ্রেটার করা টুইটে ‘টুলকিট’ প্রস্তুতকারী সংস্থার বিরুদ্ধে মামলা করে। সেই ‘টুলকিট’ শেয়ার করার অভিযোগে বেঙ্গালুরুর এক পরিবেশ কর্মী দিশা রবিকে গ্রেফতার করা হয়। দিশাকে গ্রেফতার করার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই একই ‘অভিযোগে’ সমাজকর্মী নিকিতা জেকব এবং শান্তনু নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় দেয় দিল্লি পুলিশ।