Maharashtra Crisis

খোঁচালেই বিপদ, বুঝিয়ে দিলেন স্ট্রংম্যান থেকে কামব্যাক ম্যান হয়ে ওঠা শরদ পওয়ার

লোকসভা ভোটের আগে গোটা দেশে যে মোদী বিরোধী বৃহত্তর সমঝোতার প্রক্রিয়া চলছিল, সে প্রক্রিয়ার মধ্যমণিদের অন্যতম ছিলেন তিনি

Advertisement

ঈশানদেব চট্টোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০১৯ ১৯:৫১
Share:

‘মরাঠা স্ট্রংম্যান’-কে নিয়ে এমনই মিম ঘুরে বেড়াচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। ছবি: টুইটার থেকে সংগৃহীত।

দল ভাঙানোর চেষ্টার বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি দিচ্ছিলেন এক এনসিপি নেতা। বলছিলেন— বিজেপির মনে রাখা উচিত যে, তাদের বিধায়কদের মধ্যে ৭০ জনেরও বেশি আগে অন্যান্য দলে ছিলেন। সুতরাং শরদ পওয়ার যদি চান, তা হলে বিজেপি থেকে এখন অনেককে বার করে নিতে পারেন। পওয়ার সত্যিই তা পারতেন কি না, প্রমাণ করার দরকার পড়ল না আপাতত। কিন্তু খাদের কিনারা ছুঁয়েও যে পওয়ার বার বার ফিরতে পারেন মধ্যমণির আসনে, তা আবার প্রমাণিত হয়ে গেল। মহা-মসনদের কিস্‌সা উল্টে দিয়ে আপাতত ‘কামব্যাক ম্যান’ নামে অভিহিত হচ্ছেন শরদরাও গোবিন্দরাও পওয়ার।

Advertisement

‘মরাঠা স্ট্রংম্যান’ নামটা বহু দিন আগেই পেয়েছিলেন। স্নায়ুর লড়াইয়ে কতটা ‘স্ট্রং’ তিনি, দেখিয়ে দিলেন এই ৭৮ বছর বয়সেও।

চলতি বছরেই লোকসভা নির্বাচন হয়েছে। সে নির্বাচনে মোদী ঝড়ের সামনে মহারাষ্ট্রের ৪৮টি আসনের মধ্যে মাত্র ৪টি পেয়েছিল শরদ পওয়ারের এনসিপি। শরিক কংগ্রেস ২ থেকে কমে ১ হয়ে গিয়েছিল। লোকসভা ভোটের আগে গোটা দেশে যে মোদী বিরোধী বৃহত্তর সমঝোতার প্রক্রিয়া চলছিল, সে প্রক্রিয়ার মধ্যমণিদের অন্যতম ছিলেন তিনি। বিজেপি হারলে বৃহত্তর জোটের তরফে প্রধানমন্ত্রী করা হবে কাকে, সে প্রশ্নের উত্তরে আর কয়েক জনের সঙ্গে শরদ পওয়ারের নামও উঠে আসছিল। তার পরেও নিজের রাজ্যে গেরুয়া ঝড় বিন্দুমাত্র ঠেকাতে পারেননি তিনি। মরাঠা স্ট্রংম্যান ফুরিয়ে এসেছেন, এনসিপির ভবিষ্যৎ নিয়ে সংশয় বিস্তর— এমন নানা জল্পনা শুরু হয়েছিল। মহারাষ্ট্রের বিধানসভা নির্বাচনের কয়েক মাস আগে থেকে এমনও শোনা যাচ্ছিল যে, কংগ্রেসের সঙ্গে মিশে যেতে পারে এনসিপি। কিন্তু মহারাষ্ট্রে বিধানসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশের ১ মাস কাটতেই সব আলো শরদ পওয়ারের উপরে।

Advertisement

বৃষ্টির মধ্যেই প্রচার পওয়ারের। ছবি: পিটিআই।

আরও পড়ুন: দীর্ঘ টানাপড়েন, বিদায় নিলেন ফডণবীস, মহা-নাট্যমঞ্চে নতুন নায়ক উদ্ধব ঠাকরে​

এ বারের বিধানসভা নির্বাচনে জোটসঙ্গী কংগ্রেসকে প্রায় কাঁধে করে টেনে নিয়ে গিয়েছেন শরদ পওয়ার। লোকসভা নির্বাচনের ধাক্কা ছ’মাসের মধ্যে কাটিয়ে উঠে মহারাষ্ট্রে ভাল ফল করা যাবে, এমনটা আশাই করেননি কংগ্রেসের সর্বভারতীয় নেতৃত্ব। অতএব মহারাষ্ট্রে নির্বাচনী প্রচারে তেমন জোরই দেননি সনিয়া-রাহুল। প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বকেও হতোদ্যম দেখিয়েছে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত। কিন্তু শরদ পওয়ার সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপিয়েছিলেন প্রচারে। এনসিপি কর্মীদেরও চাঙ্গা করে দিয়েছিলেন গোটা মহারাষ্ট্রে। ৭৮ বছর বয়সে অশক্ত শরীর নিয়ে তুমুল বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে যে ভাবে ভাষণ দিয়েছিলেন সাতারায়, সে ছবি গোটা দেশের নজর কেড়েছিল।

ভোটের ফলে দেখা গেল ৫৪টা আসন পেয়ে গিয়েছে এনসিপি, আগের বারের প্রায় দ্বিগুণ। হতোদ্যম কংগ্রেসও আগের বারের চেয়ে বাড়িয়ে নিয়েছে কয়েকটা আসন। পওয়ার যে ভাবে ময়দানে নেমেছিলেন, সে ভাবে কংগ্রেসও যদি নামত, বিজেপি-শিবসেনা জোটকে আরও বড় ধাক্কা দেওয়া যেত— বিজেপি বিরোধী শিবিরে এই গুঞ্জনই শুরু হয়ে যায় মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশের পরে।

একাধিক বার কংগ্রেস ভেঙেছেন শরদ পওয়ার। কিন্তু তার পরেও বার বার মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে কংগ্রেসের উদ্ধারকর্তা হয়েছেন তিনি। ২০১৯ সালের বিধানসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশের পরে বোঝা গিয়েছিল, এ বারও সে রাজ্যে তিনিই কংগ্রেসের উদ্ধারকর্তা হলেন। আর ফল প্রকাশের এক মাস পরে এসে দেখা যাচ্ছে, শুধু কংগ্রেসের নয়, চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী শিবসেনার উদ্ধারকর্তাও হতে হল শরদ পওয়ারকেই। ২৩ নভেম্বর সকালে শরদের ভাইপো অজিত পাওয়ার যে ভাবে দলের লাইনের বিপরীতে হেঁটে বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে উপমুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিয়ে নিয়েছিলেন, তাতে রাজনৈতিক শিবিরের অনেকেই মনে করেছিলেন, আর ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন না মরাঠা স্ট্রংম্যান। কেউ কেউ সন্দেহ করেছিলেন, ভাইপোকে দিয়ে বিদ্রোহটা শরদ পাওয়ার নিজেই করিয়েছেন। কিন্তু ৮০ ঘণ্টা ধরে টানটান স্নায়ুর লড়াই চালিয়ে শরদ পওয়ার ঠেকিয়ে দিলেন নিজের দলের ভাঙন, বাঁচিয়ে নিলেন দল ও পরিবার। তার সঙ্গে প্রমাণ করলেন, এ বার অন্তত পর্দার আড়ালে কোনও খেলায় অংশ নেননি তিনি। প্রকাশ্যে যাঁদের পাশে থাকার কথা বলছেন, বাস্তবেও তাঁদের পাশেই রয়েছেন। একই সঙ্গে মান বাঁচালেন উদ্ধব ঠাকরেরও।

৫৬টা আসন পেয়েছে শিবসেনা। বিজেপি পেয়েছে ১০৫টি। কিন্তু আড়াই বছরের জন্য মুখ্যমন্ত্রিত্বের দাবিতে অনড় থেকে ২৫ বছরের পুরনো জোট শিবসেনা ভেঙে দিয়েছে এ বার। বিজেপি-কে ছেড়ে এনসিপি এবং কংগ্রেসের সঙ্গে জোট গড়ে সরকার তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এনসিপি বা কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মেলানোর কথা ঘোষণা করে বাল ঠাকরের রাস্তা থেকে অনেক দূরে সরে গিয়েছেন উদ্ধব— বলতে শুরু করেছিল বিজেপি। কিন্তু সে আক্রমণ সহ্য করেও মুখ্যমন্ত্রিত্ব আদায় করার লক্ষ্যে উদ্ধব অটল ছিলেন। ২৩ নভেম্বর সকালে যে ভাবে আচমকা সরকার গড়ে ফেলেছিলেন দেবেন্দ্র ফডণবীস এবং অজিত পওয়ার, তাতে শিবসেনার শ্যাম ও কূল দুই-ই যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল। নীতির প্রশ্নে আপস তো হলই, মুখ্যমন্ত্রিত্বও মিলল না— এই পরিস্থিতির সামনে পৌঁছে গিয়েছিল শিবসেনা। উদ্ধার করলেন শরদ পওয়ার।

এমনই মিম ঘুরছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।

আরও পড়ুন: মহা-নাটকের যবনিকা পতন, মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিলেন দেবেন্দ্র ফডণবীস​

অজিত পওয়ারের বিদ্রোহের পরে শরদ পওয়ারকেই আক্রমণ করতে শুরু করেছিল কংগ্রেস। অজিতকে দিয়ে শরদই বিদ্রোহ করিয়েছেন— এ কথাই বলা শুরু হয়েছিল। কিন্তু স্বভাবসিদ্ধ স্থৈর্য দেখিয়ে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে কোনও মন্তব্য পওয়ার করেননি। টুইট করে প্রথমে জানিয়েছিলেন যে, অজিত পওয়ারের সিদ্ধান্ত তাঁর ব্যক্তিগত, সে সিদ্ধান্তকে এনসিপি সমর্থন করছে না। তার পরে শিবসেনা নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলা শুরু করেছিলেন। বিকেলে বৈঠক ডেকে এনসিপির পরিষদীয় দলনেতার পদ থেকে অজিত পওয়ারকে সরিয়ে দিয়েছিলেন। অজিতের সঙ্গে বিজেপির দিকে ঝুঁকে পড়েছিলেন যে এনসিপি বিধায়করা, তাঁদের বেশ কয়েক জনকে তত ক্ষণে নিজের দিকে টেনেও নিয়েছিলেন।

এতেই কিন্তু শেষ নয়। গুরুগ্রামের হোটেলে লুকিয়ে ছিলেন যে ৪ এনসিপি বিধায়ক, ভোর রাতে লোক পাঠিয়ে তাঁদের কব্জা করে নেন শরদ পওয়ার। নির্বিঘ্নে মুম্বই ফিরিয়ে নিয়ে যান। সব বিধায়ককে এক হোটেলে ঢুকিয়ে ফেলেন। কংগ্রেস এবং শিবসেনার সঙ্গে হাত মিলিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেন। মামলার রায় প্রকাশিত হওয়ার আগেই নিজের ঘর গুছিয়ে নেন। সোমবার সন্ধ্যার মধ্যে কংগ্রেস এবং শিবসেনা নেতৃত্বকে দু’পাশে নিয়ে ১৬২ জন বিধায়ককে একসঙ্গে নিয়ে আসেন সংবাদমাধ্যমের সামনে।

দল তাঁরই নিয়ন্ত্রণে, অজিত পওয়ারের সঙ্গে মাত্র কয়েক জন বিধায়ক— এই ছবি স্পষ্ট হয়ে যাওয়ার পরেও কিন্তু প্রশংসনীয় ধৈর্য দেখিয়েছেন শরদরাও। ভাইপো অজিত পওয়ারকে বহিষ্কার বা সাসপেন্ড করেননি। বরং কখনও ধনঞ্জয় মুন্ডে, কখনও জয়ন্ত পাতিলের মাধ্যমে ভুল শুধরে নেওয়ার বার্তা পাঠাতে থাকেন অজিতকে।

পওয়ারের সেই বার্তাই কাজে এল। মঙ্গলবার সকালে সুপ্রিম কোর্ট রায় দিল যে, বুধবারই আস্থাভোট করতে হবে মহারাষ্ট্রে। সংখ্যাগরিষ্ঠতা যে জোগাড় হবে না তার মধ্যে, অজিত পওয়ার সে কথা বুঝে গেলেন। নিজের অনুগামীদের নিয়ে শরদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে তিনি রাজি হয়ে গেলেন। অজিতকে ‘ক্ষমা’ করে দিয়েছেন শরদ পওয়ার— জানাল এনসিপি। বৈঠক শেষে অজিত পওয়ার উপমুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে দিলেন এবং বুঝিয়ে দিলেন যে, শরদের অধীনেই থাকছেন আপাতত।

দেবেন্দ্র ফডণবীস, নিতিন গডকড়ী, নারায়ণ রাণে, চন্দ্রকান্ত পাতিলরা শুধু নন, মহারাষ্ট্রে বিজেপির সরকার গড়ার জন্য সক্রিয় হয়েছিলেন খোদ নরেন্দ্র মোদী এবং অমিত শাহও। সেই প্রবল পরাক্রমী শক্তিকে কিন্তু ধাক্কা দিয়ে দিলেন শরদ পওয়ার। নিজের দলের ভাঙন তো মেরামত করে নিলেনই। বিজেপি-কে ক্ষমতা দখল করতেও দিলেন না। দেশের দোর্দণ্ডপ্রতাপ শাসক দলকে অনুচ্চারেই সম্ভবত বুঝিয়ে দিলেন, তাঁর দুর্গে আঘাত হানার ফল ভাল হয় না।

শাহকে কটাক্ষ করতেও ছাড়ছেন না নেটিজেনরা।

আরও পড়ুন: মহারাষ্ট্রের প্রোটেম স্পিকার হলেন বিজেপির কালিদাস কোলম্বকর, রাজভবনে শপথ​

কখনও প্রণব মুখোপাধ্যায়, কখনও নরসিংহ রাও, কখনও অরুণ জেটলি, কখনও অমিত শাহ— ভারতীয় রাজনীতিতে বিভিন্ন সময়ে ‘চাণক্য’ হিসেবে অভিহিত হয়েছেন এই সব মহারথীরা। প্রায় সমগুরুত্বের রাজনীতিক হয়েও শরদ পওয়ার কখনও সে তকমা পাননি। কিন্তু রাজনীতির রিঙে যে অনেক হেভিওয়েটকে এখনও তুলে আছাড় মারতে পারেন তিনি, ৭৮ বছর বয়সেও তা বুঝিয়ে দিলেন পওয়ার।

১৯৭৮ সালে প্রথম বার কংগ্রেস ভেঙেছিলেন পওয়ার। যশবন্তরাও চহ্বাণের হাত ধরে চলে গিয়েছিলেন কংগ্রেস (ইউ)-তে। উল্টো দিকে ছিল কংগ্রেস (আই)। সে বারের ভোটে মহারাষ্ট্রে বৃহত্তম দল হয় জনতা পার্টি, কিন্তু নিরঙ্কুশ গরিষ্ঠতা পায়নি। কংগ্রেস (ইউ) এবং কংগ্রেস (আই) হাত মিলিয়ে সরকার গড়ে, বসন্তদাদা পাতিলকে মুখ্যমন্ত্রী পদে বসানো হয়। বসন্তদাদা ছিলেন শরদদের দল কংগ্রেস (ইউ)-এরই নেতা। কিন্তু কিছু দিনের মধ্যেই বেশ কিছু বিধায়ককে সঙ্গে নিয়ে দল ভেঙে দেন শরদ। গঠন করেন কংগ্রেস (সোশ্যালিস্ট)। জনতা পার্টির সমর্থন নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী পদে বসে পড়েন। তখন শরদ পওয়ারের বয়স মাত্র ৩৮ বছর।

১৯৮০ সালে ইন্দিরা গাঁধী ক্ষমতায় ফিরেই মহারাষ্ট্রের পওয়ার সরকারকে বরখাস্ত করেন। কংগ্রেস (সোশ্যালিস্ট)-কে অবশ্য শেষ করতে পারেননি ইন্দিরা। স্বতন্ত্র অস্তিত্ব বহাল রেখেই মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে নিজের স্থান ধরে রেখেছিলেন শরদ পওয়ার। কিন্তু ১৯৮৭ সালে তিনি আবার কংগ্রেসে ফেরেন। শিবসেনার উত্থান যে ভাবে ঘটছে, তাতে মহারাষ্ট্রে কংগ্রেসি সংস্কৃতি বিপন্ন। সেই সংস্কৃতি বাঁচাতেই তিনি কংগ্রেসে ফিরলেন— সে সময়ে জানিয়েছিলেন শরদ পওয়ার। ১৯৮৮ সালে শরদ পওয়ার আবার মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী হন। ১৯৯০-এর নির্বাচনেও তাঁর নেতৃত্বে মহারাষ্ট্রে জেতে কংগ্রেস। তিনি তৃতীয় বার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন। ১৯৯১ সালে কেন্দ্রে কংগ্রেস সরকার গঠিত হয়, নরসিংহ ক্যাবিনেটের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী হন শরদ। মুখ্যমন্ত্রী হন সুধাকররাও নাইক।

কিন্তু ১৯৯৩ সালে মুম্বইতে ভয়াবহ দাঙ্গার পরে সুধাকরকে আর মুখ্যমন্ত্রী পদে রাখতে চাননি কংগ্রেস নেতৃত্ব। নরসিংহের অনুরোধে শরদ পওয়ার মহারাষ্ট্রে ফিরে যান, চতুর্থ বারের জন্য মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন। ১৯৯৫ সালের নির্বাচনে অবশ্য কংগ্রেসকে আর জেতাতে পারেননি তিনি। প্রথম বারের জন্য মহারাষ্ট্রের নির্বাচনে জয় হয়েছিল শিবসেনা-বিজেপি জোটের। মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন শিবসেনার মনোহর জোশী।

আরও পড়ুন: সরকার পড়তে যাচ্ছে, ইঙ্গিত মিলে গিয়েছিল অজিত পওয়ারের ইস্তফাতেই​

১৯৯৯ সালে কংগ্রেস ভেঙে এনসিপি গড়েন শরদ পওয়ার। সে বছরই মহারাষ্ট্রে ফের বিধানসভা নির্বাচনও হয়। শিবসেনা-বিজেপি জোট হারে। যে বছরে কংগ্রেস ভেঙেছেন, সেই বছরেই আবার কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মিলিয়ে নেন শরদ, মহারাষ্ট্রে জোট সরকার গড়েন। সেই সরকার একটানা ১৫ বছর দখলে রেখেছিল মহারাষ্ট্রের মসনদ। ২০১৪-র নির্বাচনে বিজেপি-শিবসেনা ফের ক্ষমতা দখল করেছিল। ২০১৯-এ এসে বিজেপি এবং শিবসেনার সম্পর্ক ছিন্ন হতেই আবার মধ্যমণি হয়ে উঠলেন শরদ পওয়ার। তবে যে শিবসেনাকে ঠেকানোর দোহাই দিয়ে এক সময়ে নিজের দলকে কংগ্রেসে মিশিয়ে দিয়েছিলেন মরাঠা স্ট্রংম্যান, এ বার সেই শিবসেনার রক্ষাকর্তা হিসেবেই দেখা দিলেন।

অনেকে আজ মনে করাচ্ছেন বিসিসিআই সভাপতি নির্বাচনের কথাও। জগমোহন ডালমিয়া শিবিরের কাছে হারতে হয়েছিল প্রথম বার। কিন্তু হার মেনে নেননি। খোঁচা খাওয়া বাঘের মতো অপেক্ষায় ছিলেন আর প্রস্তুতিও নিয়েছিলেন। পরের নির্বাচনেই ডালমিয়া শিবিরকে প্রায় ভরাডুবির মুখে দাঁড় করিয়ে বোর্ডের সভাপতিত্ব আদায় করে ছেড়েছিলেন। শরদ পাওয়ারকে খোঁচা দিলে ফল ভাল হয় না— অমিত শাহও বোধ হয় বুঝতে পারলেন কিছুটা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement