সেতু বিপর্যয়ের মধ্যেই নাগরিকত্ব দেওয়ার ঘোষণা অমিত শাহের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের। — ফাইল ছবি।
বাংলাদেশ, আফগানিস্তান এবং পাকিস্তান থেকে আসা হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পারসি এবং খ্রিশ্চান ধর্মাবলম্বী, যাঁরা গুজরাতের দুটি জেলায় বসবাস করছেন, তাঁদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইনের আওতায় তাঁদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে অমিত শাহের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।
২০১৯-এর নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ)-এর বদলে ১৯৫৫-এর নাগরিকত্ব আইনের আওতায় এই নাগরিকত্ব দেওয়ার ঘোষণাকে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। বস্তুত, বাংলাদেশ, আফগানিস্তান এবং পাকিস্তান থেকে হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ, জৈন, পারসি এবং খ্রিশ্চান ধর্মাবলম্বীদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দিতেই সিএএ তৈরি হয়েছে। কিন্তু আইন তৈরি হলেও আইন প্রণয়ন (রুল ফ্রেমিং) এখনও হয়নি। ফলে সিএএতে এখনও কেউ নাগরিকত্ব পাননি।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, গুজরাতের আনন্দ ও মেহসানা জেলায় বসবাসকারী মুসলিম বাদে ছয় ধর্মাবলম্বী সম্প্রদায়, যাঁরা পাকিস্তান, আফগানিস্তান এবং বাংলাদেশ থেকে সেখানে এসেছেন, তাদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করতে সংশ্লিষ্ট জেলার আধিকারিকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ভারতে ন্যূনতম পাঁচ বছর থাকতে হবে এমন কোনও শর্তও এ ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয় বলে শাহি-বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
গুজরাতে ভোট ঘোষণা হবে যে কোনও দিন। নিত্য দিন বিভিন্ন প্রকল্পের ঘোষণা, উদ্বোধনে ব্যস্ত মোদী, অমিত শাহরা। এরই মধ্যে ভেঙে পড়েছে সেতু। তা নিয়ে উত্তেজনা চরমে। এই প্রেক্ষিতেই অমিত শাহের মন্ত্রকের তরফে এই বিজ্ঞপ্তিতে রাজনীতির গন্ধ পাচ্ছেন বিরোধীরা। আবার অনেকের অভিযোগ, অমুসলিমদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়ার ঘোষণার মধ্যে দিয়ে ভোটে জিততে বিজেপি চিরাচরিত হিন্দু তাসের রাজনীতি শুরু করে দিল। যদিও তাতেও গুজরাতে শেষরক্ষা হবে না মোদীর বলে কটাক্ষ কংগ্রেসের। গুজরাতে সেতু-বিপর্যয় থেকে নজর ঘোরাতেই এই সস্তার পদক্ষেপ, কটাক্ষ তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষের। গুজরাতের ভোট নিয়ে মোদী যে কত দুশ্চিন্তায়, এই পদক্ষেপ থেকেই তা স্পষ্ট, আক্রমণ সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর।