মহম্মদ জ়ুবের (বাঁ দিকে) ও প্রতীক সিন্হা।
নোবেল শান্তি পুরস্কার পাবেন বলে তাঁর নিজের মনে হচ্ছে না। কিন্তু আজ, শুক্রবার সেই সম্মান ঘোষণার আগে তার অন্যতম দাবিদার হিসেবে নিজের ও সহকর্মী মহম্মদ জ়ুবেরের নাম উঠে আসাটাই তাঁদের কাছে অনেকটা স্বস্তিদায়ক বলে জানালেন ফ্যাক্ট চেকার তথা সত্য অনুসন্ধানকারী প্রতীক সিন্হা। তাঁর কথায়, ‘‘এই ধরনের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অনেকটা নিরাপত্তা দেয়। এখন সরকারের পক্ষে আমাদের বিরুদ্ধে ভুয়ো মামলা করাটাও কঠিন হবে।’’
বুধবারই ২০২২-এর নোবেল শান্তি পুরস্কার পাওয়ার সম্ভাব্য তালিকায় ফ্যাক্ট চেকার তথা সত্য অনুসন্ধানকারী প্রতীক ও তাঁর সহকর্মী মহম্মদ জ়ুবেরের নাম রয়েছে বলে দাবি করেছিল আমেরিকার প্রথম সারির পত্রিকা। নরওয়ের রাজধানী অসলোর পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের ডিরেক্টরের ব্যক্তিগত তালিকায়, নরওয়ের আইনসভার সদস্যদের তালিকাতেও রয়েছেন প্রতীক ও জ়ুবের। বৃহস্পতিবার তা নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে হাসতে হাসতেই প্রতীক বললেন, ‘‘আমি একেবারে নিশ্চিত, আমাদের নোবেল পুরস্কার পাওয়ার ব্যাপারটা ঘটবে না।’’ তবে সেই সঙ্গেই তাঁর সংযোজন, ‘‘তবে আমাদের নিয়ে এই বিবেচনাটাই খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমরা খুব খুশি। বিশেষত সরকারের দিক থেকে আমাদের দিকে যে ধরনের আক্রমণ এসেছে তাতে এই ধরনের স্বীকৃতি বাড়তি নিরাপত্তা দেয়।’’
২০১৮ সালে টুইটের মাধ্যমে হিংসার প্ররোচনা ছড়ানোর অভিযোগ তুলে গত জুন মাসেই মহম্মদ জ়ুবেরকে গ্রেফতার করে দিল্লি পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করার অভিযোগ তোলা হয়। সেই সময় তাঁর গ্রেফতারির বিরুদ্ধে সরব হয় দেশবিদেশের বহু সংগঠন। এক মাস জেলবন্দি ছিলেন তিনি। পরে শীর্ষ আদালত তাঁকে জামিন দেয়। পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট অবশ্য মনে করেছে, ভুল তথ্য প্রচার করে সত্য অনুসন্ধানের মাধ্যমে দেশে সাম্প্রদায়িক হিংসা ছড়ানোর বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়েছেন এই দু’জন। প্রতীকের বক্তব্য, ‘‘এতে আমাদের কাজের কতটা সুবিধে হবে জানি না, তবে ভুয়ো মামলা করতে হলে সরকারকে বেশি কষ্ট করতে হবে।’’
নোবেল শান্তি পুরস্কারে পরিবেশকর্মী, রাজনীতিবিদ, সমাজকর্মীদের পাশাপাশি তথ্য অনুসন্ধানকারীদের নামও চর্চায় আসা খুব গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন প্রতীক। তাঁর কথায়, ‘‘এ থেকে বোঝা যায় ভুয়ো খবরের বিষয়টা আন্তর্জাতিক সমস্যা এবং ভারতে যে ভাবে ভুয়ো খবর, ঘৃণা ভাষণ রাজনৈতিক ভাবে ব্যবহৃত হয়েছে, তাতে ভারত সেই সমস্যার নিরিখে বিশ্বে প্রথম সারিতে রয়েছে।’’