প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় এজলাসে উপস্থিত আইনজীবীদের বলেন, ‘‘আগামী কাল (শনিবার) থেকে ১ জানুয়ারি পর্যন্ত কোনও বেঞ্চ বসবে না।’’ — ফাইল ছবি।
কলেজিয়াম প্রক্রিয়া নিয়ে কেন্দ্র-সুপ্রিম কোর্ট সংঘাত কমার কোনও লক্ষণ নেই। প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় জানিয়ে দিলেন, দু’সপ্তাহের শীতকালীন ছুটিতে বসবে না কোনও অবসরকালীন বেঞ্চও। আগামী ১৯ ডিসেম্বর, সোমবার থেকে দু’সপ্তাহের জন্য ছুটি পড়ে যাচ্ছে সুপ্রিম কোর্টে। নতুন বছরে আবার খুলবে কোর্ট।
শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় এজলাসে উপস্থিত আইনজীবীদের বলেন, ‘‘আগামী কাল (শনিবার) থেকে ১ জানুয়ারি পর্যন্ত কোনও বেঞ্চ বসবে না।’’
প্রধান বিচারপতির এই মন্তব্যের প্রেক্ষাপট রচনা করেছে কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী কিরেণ রিজিজুর সংসদে করা একটি মন্তব্য। বৃহস্পতিবারই রাজ্যসভায় মন্ত্রী সুপ্রিম কোর্টের লম্বা ছুটি নিয়ে তির্যক মন্তব্য করেন। আদালতে লম্বা লম্বা ছুটি পড়ে যাওয়ার ফলে আখেরে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ, এমন কথাও বলেন রিজিজু। সুবিচারপ্রার্থীদের বিপদে ফেলে ছুটি কাটানো নিয়েও আকারে-ইঙ্গিতে প্রশ্ন তুলে দিয়েছিলেন আইনমন্ত্রী। এই প্রেক্ষিতেই এ বার শীতের ছুটির ঘোষণা এবং সেই সঙ্গে ছুটির সময় অবসরকালীন বেঞ্চ বসবে না বলে, সেই মন্তব্যেরই প্রতিক্রিয়া দিল সুপ্রিম কোর্ট, এমন মনে করছেন আইনজীবীরা।
শনিবার থেকে ছুটি হয়ে যাচ্ছে সুপ্রিম কোর্ট। খুলবে আবার নতুন বছরের ২ জানুয়ারি। এর মধ্যে কাজ করবে না কোনও অবসরকালীন বেঞ্চ। কিন্তু যদি কোনও জরুরি প্রয়োজন হয়? সে ক্ষেত্রে আদালতের ‘ভেকেশন অফিসার’-এর কাছে আবেদন করতে হবে। মামলার গুরুত্ব বিবেচনা করে জরুরি শুনানির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন তিনি। সাধারণ দস্তুর অনুযায়ী, শুধু মাত্র গরমের ছুটি বাদে অন্য কোনও ছুটিতেই অবসরকালীন বেঞ্চ কাজ করে না।
প্রসঙ্গত, বিচারবিভাগের ‘অতিরিক্ত’ ছুটি নিয়ে বিতর্ক নতুন নয়। এর আগেও প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি এনভি রমণা খেদের সঙ্গে জানিয়েছিলেন, বিচারপতিরা অত্যন্ত আরামের জীবন যাপন করে, এই ধারণা পুরোপুরি মিথ্যা। তিনি বলেছিলেন, ‘‘আমরা সপ্তাহান্তেও কাজ করি। আদালত ছুটি থাকলেও আমাদের কাজ থেমে থাকে না। আমাদের নিত্য পড়াশোনা করতে হয়, গবেষণা করতে হয়, রায় লিখতে হয়। আর তা করতে গিয়ে আমরা অনেক আনন্দ, খুশি, ফূর্তি থেকে বঞ্চিত হই।’’
কলেজিয়াম নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের সংঘাতের প্রেক্ষিতে এ বার আদালতের ছুটিছাটা নিয়েও বিবাদ বাড়ার ইঙ্গিত।