পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান। ফাইল চিত্র ।
বিহারের বিষমদকাণ্ডে নিয়ে সারা দেশ উত্তাল হওয়ার মধ্যেই মদ নিয়ে বড় সিদ্ধান্ত নিল পঞ্জাবের আম আদমি পার্টি (আপ) সরকার। বিষক্রিয়া হতে পারে এমন স্থানীয় মদ বিক্রি ঠেকাতে পঞ্জাবের সরকার ৪০ শতাংশ অ্যালকোহলযুক্ত দেশি মদ ছোট ছোট প্যাকেটে ভরে বিক্রির কথা ভাবছে বলে সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর। দাম কম হওয়ার কারণে গ্রামীণ এলাকাগুলিতে ঘরোয়া পদ্ধতিতে তৈরি স্থানীয় মদের রমরমা বেশি। তাই স্থানীয় মদের ‘স্বাস্থ্যকর বিকল্প’ হিসাবেই এই দেশি মদ বিক্রির চিন্তাভাবনা চলছে বলে সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে।
পঞ্জাবের আবগারি দফতরের তরফে সংবাদমাধ্যম ‘ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’কে জানিয়েছে, পঞ্জাবের গ্রামীণ এলাকাগুলিতে ‘লহান’ নামে এক বিষমদ খুব জনপ্রিয়। ভারতে তৈরি মদগুলির তুলনায় এই স্থানীয় মদে অ্যালকোহলের পরিমাণও কম। ২৫ থেকে ৪০ টাকার ছোট প্যাকেটে বিক্রি করা হয় এই ‘লহান’। সরকারের তরফেও যদি কম টাকায় এবং ছোট প্যাকেটে কম ক্ষতিকর দেশি মদ বিক্রির ব্যবস্থা করা যায়, তা হলে মানুষের মধ্যে বিষমদ খাওয়ার প্রবণতা কমতে পারে বলেও আবগারি দফতর আশা করছে।
নতুন আবগারি নীতির অংশ হিসাবে এবং বিষমদে মৃত্যুর সংখ্যা ঠেকাতে, দামে কম অথচ অপেক্ষাকৃত কম ক্ষতিকর এই দেশি মদ তৈরি ও বিক্রি করার কথা ভাবছে পঞ্জাব সরকার। পঞ্জাব সরকারের দাবি, এই দেশি মদগুলি গ্রামীণ এলাকায় বিক্রি করতে পারলে বিষমদের রমরমা এবং মৃত্যু দুই-ই ঠেকানো যাবে।
এই বিষয়ে ভগবন্ত মান সরকার ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্টে সিদ্ধান্তের বিষয়ে জানিয়েছে। শীর্ষ আদালতের অনুমতি পেলে সরকারের তরফে খুব শীঘ্রই ভাবনা বাস্তবায়িত করা হবে বলেও জানা গিয়েছে।
পঞ্জাবের আবগারি দফতর তরফে সুপ্রিম কোর্টে জমা পড়া হলফনামাতে উল্লেখ করা হয়েছে, “এই দেশীয় পদ্ধতিতে তৈরি মদ বাড়িতে অবৈধ ভাবে তৈরি মদের একটি স্বাস্থ্যকর বিকল্প হতে চলেছে৷ প্রয়োজনের কথা ভেবে এই মদগুলিতে ৪০ শতাংশ অ্যালকোহল রাখা হবে।’’
পঞ্চায়েত অফিসের মাধ্যমে সভা এবং পথনাটিকার মাধ্যমে সরকার মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করবে বলেও ওই হলফনামায় জানানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি বিহারের সারণ জেলার ছপরায় বিষমদ খেয়ে ৬৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। ২০১৬ সালে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার বিহারে মদ নিষিদ্ধ করেন। সে রাজ্যে মদ নিষিদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও গত কয়েক বছরে একাধিক বার বিষমদে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে বিহারে। তার মধ্যে ছপরাতেই মৃত্যুর সংখ্যা সব থেকে বেশি। এই ঘটনার দু’দিনের মধ্যেই আবার বিহারের সিওয়ানে বিষমদ খেয়ে মৃত্যু হয় ৫ জনের। শুক্রবার সকালে সিওয়ান জেলার ভগবানপুর থানা এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। তার মধ্যেই পঞ্জাব সরকারের এই নয়া সিদ্ধান্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।