প্রবল বৃষ্টিতে হিমাচলে ধস (বাঁ দিকে)। গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা কেরলে (ডান দিকে)। ছবি: পিটিআই।
উত্তর ভারতের বেশির ভাগ রাজ্যে যখন বৃষ্টির তাণ্ডব চলছে, তার ঠিক উল্টো ছবি ধরা পড়ল দক্ষিণ ভারতেরই একটি রাজ্যে। বৃষ্টি নয়, বরং গরমে পুড়ছে উপকূলীয় রাজ্য কেরল। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, এই রাজ্যের ১৪টি জেলায় প্রবল গরমের সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে।
রাজ্য প্রশাসন সূত্রে খবর, বর্ষার মরসুমের কারণে যেখানে দেশের অন্যান্য প্রান্তে তাপমাত্রা কিছুটা কমছে, কেরলে কিন্তু তাপমাত্রা উত্তরোত্তর বাড়ছে। অগস্টেও এই রাজ্যে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে গিয়েছে। রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর থেকে রাজ্যবাসীদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৩টে পর্যন্ত বাড়ির বাইরে না বেরোনোর পরামর্শও দেওয়া হচ্ছে তাঁদের।
রাজ্যে বর্ষার ছবিটা খুব একটা সুখকর নয়। যে রাজ্য দিয়ে দেশে বর্ষার আগমন ঘটে, সেই রাজ্যেই এখন খরার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তাই যেটুকু বৃষ্টি হচ্ছে, সেই জল নষ্ট না করে ধরে রাখার জন্যও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে রাজ্যবাসীদের। গত বছরে এই অগস্টেই প্রবল বৃষ্টি হয়েছিল দক্ষিণ এবং মধ্য কেরলে। কিন্তু এ বছর সেখানে এই মাসেই বিপরীত ছবি ধরা পড়েছে। বৃষ্টির দেখা তো মিলছেই না, বরং তাপপ্রবাহের মতো পরিস্থিতির সঙ্গে যুঝতে হচ্ছে। মৌসম ভবন জানিয়েছে, সমতলে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়ালে তাপপ্রবাহ হিসাবে ঘোষণা করা হয়। সেই তাপমাত্রা যদি উপকূলীয় অঞ্চলে ৩৭ ডিগ্রি বা তার কাছাকাছি পৌঁছয়, তখন তাপপ্রবাহের মতো পরিস্থিতি ঘোষণা করা হয়।
মৌসম ভবন জানিয়েছে, তিরুঅনন্তপুরম, কোলামে বুধবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা স্বাভাবিকের তুলনায় ৩-৫ ডিগ্রি বেশি। অন্য দিকে, আলাপ্পুঝা, কোট্টায়ম এবং পালাক্কড়ে বৃহস্পতিবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর্নাকুলাম, ত্রিশূর, মালাপ্পুরম এবং কোঝিকোড়ে তাপমাত্রা ছিল ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা স্বাভাবিকের থেকে ৩-৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে আর্দ্রতাও। ফলে ৩৭ ডিগ্রিতেও তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির মতো অনুভূতি হচ্ছে। যার জেরে অস্বস্তি বাড়ছে। তবে মৌসম ভবনের এক সূত্র জানিয়েছে, অগস্টে তাপমাত্রা বাড়লেও, সেপ্টেম্বরের শুরুতে রাজ্যের বেশ কিছু অঞ্চলে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। তবে বিক্ষিপ্ত ভাবেই হবে সেই বৃষ্টি।
হিমালয়ের দুই রাজ্য হিমাচল প্রদেশ এবং উত্তরাখণ্ড বর্ষার মরসুমের শুরু থেকেই বৃষ্টি এবং বন্যা পরিস্থিতির সঙ্গে যুঝছে। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে ধসের মতো ঘটনাও। জুন থেকে অগস্টের মধ্যে এই দুই রাজ্যে বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে বৃষ্টি, বন্যা পরিস্থিতি এবং ধসের কারণে। বৃষ্টির তাণ্ডব চলছে উত্তর ভারতের অন্য রাজ্যগুলিতেও।