ছবি: সংগৃহীত।
দেশে কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ কিছুটা স্তিমিত হতেই বিশেষজ্ঞদের একাংশ সতর্কবার্তা দিয়ে জানিয়েছিলেন, তৃতীয় ঢেউয়ে শিশুদের মধ্যে বেশি করে সংক্রমণ ছ়ডানোর সম্ভাবনা রয়েছে। সেই দাবিকে নস্যাৎ করল বিশেষজ্ঞদের অন্য একটি মহল। তাদের দাবি, এমন কোনও জৈবিক কারণ নেই, যার সূত্র ধরে নিশ্চিত ভাবে বলা যায়, শিশুরাই তৃতীয় ঢেউয়ে বেশি করে আক্রান্ত হবে। বাবা, মায়েরা যাতে অযথা আতঙ্কিত, উদ্বিগ্ন না হয়ে পড়েন, তার পরামর্শও দিলেন বিশেষজ্ঞরা।
কোভিডের তৃতীয় ঢেউ মোকাবিলায় প্রস্তুতি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আয়োজিত একটি ওয়েবিনারে আন্তর্জাতিক পেডিয়াট্রিক অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট নবীন ঠক্কর বলেন, ‘‘শিশুদের থেকে বড়দের শরীরে সাধারণত সংক্রমণ ছড়ায় না। বরং, উল্টোটাই ঘটে।’’ তবে শিশুরা যে সম্পূর্ণ সুরক্ষিত নয়, তা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘অতিমারি পরিস্থিতিতে স্কুল বন্ধ থাকায় শিশুরা এমনিতেই মানসিক ভাবে বিধ্বস্ত। তা ছাড়া শিশুদের জন্য এখনও টিকাকরণের ব্যবস্থা হয়নি। এই বিষয়গুলি মাথায় রাখা জরুরি। তবে। এখনও পর্যন্ত শিশুদের মধ্যে সংক্রমণের গুরুতর প্রভাব দেখা যায়নি। উপসর্গও বিশেষ দেখা যায় না তাদের মধ্যে।’’
তৃতীয় ঢেউয়ের মোকাবিলায় টিকাকরণ এবং কোভিডবিধি মেনে চলা সবচেয়ে জরুরি বলেই জানাচ্ছেন আইআইটি কানপুরের অধ্যাপক রাজেশ রঞ্জন। তিনি বলেন, ‘‘তৃতীয় ঢেউ আসবে না, এমন ভবিষ্যদ্বাণী করা একেবারেই উচিত হবে না। আমেরিকা, ব্রিটেন, জাপান, রাশিয়াতেও একাধিক সংক্রমণের ঢেউ দেখা গিয়েছে।’’
তাঁর বক্তব্য, ১৮-৫৯ বছর বয়সিদের মধ্যে সংক্রমণ ছড়ানোর সম্ভাবনা বেশি। এই গোষ্ঠীর অন্তর্গত মাত্র ২৫ শতাংশের শরীরে তৈরি হয়েছে হার্ড ইমিউনিটি। অন্য দিকে, ৬০-ঊর্ধ্বদের মধ্যে ৪০ শতাংশের শরীরে হার্ড ইমিউনিটি তৈরি হয়ে গিয়েছে। তাঁর আরও সংযোজন, ‘‘যদি ধরে নেওয়া যায়, অন্তত ৩০ শতাংশের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে উঠেছে, তা হলে বলা যায়, অক্টোবর নাগাদ আছ়ড়ে পড়তে পারে কোভিডের তৃতীয় ঢেউ।’’