ছবি: সংগৃহীত।
দেশ জুড়ে স্কুল,কলেজ খোলার আবেদন জানিয়ে এ বার কেন্দ্র ও রাজ্যকে চিঠি দিল মনোচিকিৎসকদের সংগঠন ‘ইন্ডিয়ান সাইকিয়াট্রিক সোসাইটি’। অতিমারি পরিস্থিতি দীর্ঘ এক বছরেরও বেশি সময় ধরে স্কুল, কলেজে পঠনপাঠন বন্ধ থাকায় মানসিক ভাবে অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়ছে পড়ুয়ারা, মূলত স্কুলের কমবয়সি ছাত্রছাত্রীরা। প্রি-প্রাইমারির বাচ্চাদের জন্য সপ্তাহে দু’দিন, প্রথম শ্রেণি থেকে অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়াদের জন্য তিন দিন, এবং নবম ও দশম শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের জন্য সপ্তাহে পাঁচ দিন (সোম থেকে শুক্র) খোলা যেতে পারে স্কুল। কেন্দ্রীয় মহিলা ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি, কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রক মনসুখ মাণ্ডব্যকে চিঠি দিয়ে সেই পরামর্শই দিল বিশেষজ্ঞদের ওই সংগঠন। সেই সঙ্গে দেশের সবক’টি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদেরও পাঠানো হয়েছে ওই চিঠি।
কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ স্তিমিত হলেও তৃতীয় ঢেউ নিয়ে আশঙ্কা বাড়ছে গোটা দেশ জুড়ে। এই পরিস্থিতি কোভিডবিধি মেনে, সব রকম সতর্কতা অবলম্বন করে কী ভাবে স্কুল, কলেজ খোলা যেতে পারে, সে বিষয়ে কিছু পরামর্শ দেওয়া হয়েছে ওই চিঠিতে। বিশেষজ্ঞ মহলের পরামর্শ, ৫০ শতাংশ পড়ুয়া নিয়ে স্কুলে ক্লাস শুরু করা যেতে পারে। যাদের রোল নম্বর জোড় সংখ্যা, তারা এক দিন আসবে স্কুলে। বাকিরা বাড়ি থেকে অনলাইনেই ক্লাস করবে। আবার অন্য দিন, বিজোড় সংখ্যার রোল নম্বর যাদের, তারা স্কুলে এসে ক্লাস করবে। তবে যারা স্কুলে আসতে পারবে না, তাদের জন্য যাতে অনলাইনেও ক্লাস নেওয়ার ব্যবস্থা থাকে, সেই পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
স্কুল কলেজ খোলা হলে সে ক্ষেত্রে নিয়মমাফিক ছাত্রছাত্রী এবং কর্মীদের শরীরের তাপমাত্রা মাপা জরুরি। কোনও পড়ুয়া বা কর্মীর শরীরে উপসর্গ ধরা পড়লে সঙ্গে সঙ্গে তার কোভিড পরীক্ষার স্কুলে রাখতে হবে র্যাপি়ড অ্যান্টিজেন টেস্ট কিট। কোভিড উপসর্গ চিহ্নিতকরণের জন্যও কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া জরুরি। ক্লাসঘরের জানলা, দরজা খোলা রাখার পাশাপাশি চেয়ার, টেবিল, বেঞ্চ-সহ বাকি সব জিনিস যাতে ঘন ঘন স্যানিটাইজ করা হয়, তারও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে চিঠিতে।
চিঠিতে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, অতিমারি পরিস্থিতিতে অনলাইনে পড়াশোনা, খেলাধুলো বন্ধ থাকায় শিশুদের শরীর ও মনে বড় প্রভাব পড়েছে। এক টানা মোবাইল বা কম্পিউটারের স্ক্রিনে তাকিয়ে থাকার কারণে অনেকের মধ্যে চোখের সমস্যা দেখা গিয়েছে। মাথাযন্ত্রণার মতো উপসর্গ দেখা দিচ্ছে অনেকের মধ্যে। বাইরে না বেরোনোর কারণে বহু শিশুর শরীরে ভিটামিন ডি-র অভাব লক্ষ্যণীয়। মোবাইল গেম খেলা এবং পর্নে আসক্ত হওয়ার প্রবণতা বেড়েছে বাচ্চাদের মধ্যে। এই বিষয়গুলি নজরে রেখে স্কুলে পঠনপাঠন ছাড়াও যাতে পাঠ্যক্রম বহির্ভুত কার্যক্রমের আয়োজন করার কথা বলা হয়েছে চিঠিতে। সেই সঙ্গে পড়ুয়াদের মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য মাঝে মাঝে যাতে কাউন্সেলিং করা হয়, তারও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।