শুধুমাত্র রূপান্তরকামীরাই সরকারি সংরক্ষণের সুবিধা পাবেন, সমকামী বা উভকামীরা নন। রায় দিল সুপ্রিম কোর্ট। রূপান্তরকামীদের জন্য শিক্ষা-চাকরি-সহ নানা ক্ষেত্রে সংরক্ষণের ব্যবস্থা এখনও চালু না হওয়ায় কেন্দ্রীয় সরকারকে সর্বোচ্চ আদালতের মৃদু ধমকও শুনতে হল বৃহস্পতিবার।
২০১৪ সালে রূপান্তরকামীদের তৃতীয় লিঙ্গ হিসেবে স্বীকৃতি দেয় সুপ্রিম কোর্ট। ২০১৫ সালে সর্বোর্চ আদালত কেন্দ্রীয় সরকারকে নির্দেশ দেয়, তৃতীয় লিঙ্গের জন্য সংরক্ষণের ব্যবস্থা করতে। কিন্তু তখনই প্রশ্ন উঠে গিয়েছিল, তৃতীয় লিঙ্গ হিসেবে ঠিক কাদের ধরা হবে? বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, রূপান্তরকামীদেরই তৃতীয় লিঙ্গ হিসেবে ধরা হবে। কিন্তু কেউ রূপান্তরকামী না হয়েও যদি সমকামী বা উভকামী হন, তা হলে তাঁকে তৃতীয় লিঙ্গ হিসেবে ধরা হবে না। সংরক্ষণ পাওয়ারও প্রশ্ন উঠছে না। এই ব্যাখ্যা দেওয়ার পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্ট এ দিন ভারত সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে, খুব দ্রুত তৃতীয় লিঙ্গের জন্য সংরক্ষণের ব্যবস্থা চালু করতে।
আরও পড়ুন: ধর্ষিতার সঙ্গে নিজস্বী তুলে বিতর্কে মহিলা কমিশনের সদস্যেরা!
ভারতের এলজিবিটি আন্দোলনের কর্মীরা অবশ্য এই রায়ে সন্তুষ্ট হতে পারছেন না। এলজিবিটি সংগঠন ‘হামসফর’-এর প্রতিষ্ঠাতা অশোক কবির মতে, সর্বোচ্চ আদালতের ব্যাখা সত্ত্বেও ধোঁয়াশা থেকেই যাচ্ছে। তাঁর প্রশ্ন, কী ভাবে নির্ধারিত হবে, কে প্রকৃতই রূপান্তরকামী আর কে তা নন? যে কেউ নিজেকে রূপান্তরকামী হিসেবে দাবি করে তৃতীয় লিঙ্গের মর্যাদা দাবি করতে পারেন। তাই এ বিষয়ে স্পষ্ট নির্দেশিকা থাকা জরুরি। অশোক কবি বলেছেন, ‘‘তফসিলি জাতি-উপজাতি এবং অন্যান্য অনগ্রসর জাতির জন্য যেমন কমিশন রয়েছে, রূপান্তরকামীদের জন্যও তেমন বিধিবদ্ধি প্রতিষ্ঠান তৈরি করা হোক।’’ কার তৃতীয় লিঙ্গের মর্যাদা পাওয়া উচিত, তা নির্ধারণ করার জন্য কেরল ইতিমধ্যেই রূপান্তরকামী কমিশন গঠন করেছে। সেই ধাঁচেই গোটা দেশের জন্য জাতীয় রূপান্তরকামী কমিশন গঠনের দাবি তোলা হয়েছে এলজিবিটি সংগঠনগুলির তরফে।